সোমবার, ২০ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা
পাঠকের লেখা

আজ গরম বলে...

শফিকুল ইসলাম শফিক

আজ গরম বলে...

গরমে এতদিন আমাকে ব্যাচেলর উপাধি খুব যন্ত্রণা দিয়েছে। ব্যাচেলর বলে আশপাশের কোথাও ফ্ল্যাটবাসা ভাড়া পেলাম না। অনেক  ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিলাম, টিনশেড বাসা হলেও আপাতত চলবে। না হয় অতিরিক্ত গরমে টিনের ওপর পানি ঢেলে স্বস্তি পাব। তবু এখানেই বাসা ভাড়া নিতে চাই। একদম নাছোড়বান্দা। মহল্লার মায়াও ছাড়তে পারি না। মহল্লার সমবয়সী ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় থাকলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। গত মাসে এক ভাইয়ের মাধ্যমে টিনশেড বাসায় উঠলাম। ছাদের ওপর একটিমাত্র রুম। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা গরম হাওয়া খাই। ব্যাচেলর বলে বাড়িওয়ালার কোনো ওজর-আপত্তি ছিল না। আমার রান্নার বেশ সুনাম আছে। রান্নার সুবাদে গরম-ঠান্ডা সারা বছর  মেহমান আসতেই থাকে। কাউকেই মানা করতে পারি না। মানা করলে আরও বেশি  চেপে বসে। একদিন সকালে ঘুম ভাঙতে না ভাঙতেই বাড়িওয়ালা আমাকে ডাকলেন। গরমে আমি তখন ঘামের সমুদ্রে সাঁতার কাটছি। মাসের শুরু থেকেই মেহমানের আগমন ঘটছে। এবার যে গরম পড়েছে তাতে বাড়িওয়ালার মতো আমিও তেঁতে আছি। কেউ দিনে আসে, দিনেই চলে যায়। আবার কেউ দু-চার দিন থাকে। গরমে রাতদিন নিজেই শান্তি মতো ঘুমাতে পারি না। কার না মেজাজ হট থাকে?

যা হোক, অতিরিক্ত মেহমান আসা-যাওয়ায় বাড়িওয়ালা আমাকে রীতিমতো সাইজ করে  ফেললেন। বুঝলাম, গরমে তার মাথায় সমস্যা হয়েছে। উনি আমার কোনো কথাই শুনলেন না। অবশেষে মেহমানসহ পরদিন বাসা থেকে বিদায় নিলাম। মহল্লার পরিচিত আরেক ভাইয়ের মাধ্যমে এবার সত্যিই ফ্ল্যাটবাসা ভাড়া পেলাম। গরমে ঘুমের ফাঁকে বড় বড় মশাদের গান শুনছি। কয়েল জ্বালিয়ে মশাদের শুভেচ্ছা জানালাম। ভবিষ্যতে কখনো আর যেন দুর্ভোগ পোহাতে না হয়, সেজন্য মেহমানসহ নতুন বাসায় রাতযাপন করলাম।

পরদিন সেই যে মেহমান গেল। এরপর আর কেউ এলো না। প্রমাণ হলো, গরম সহ্য করা যায়। মশা না।

-কনইল, নওগাঁ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর