মফিজ ফর্সা কিন্তু খুব পাতলা। মোটা হওয়ার জন্য অনেক সূত্র অনুসরণ করেও কাজ হয়নি। অনেকেই তাকে চিকনা, চিকা, শুটকা ইত্যাদি আজেবাজে উপাধিতে ডাকেন। এমনকি ছাত্রজীবনে কেউই তাকে কিউট বলেনি। চিঠি চালান করেও বেচারা একটা প্রেম জোটাতে পারেনি। স্পষ্টভাষী হিসেবে তার যথেষ্ট সুনাম ছিল। মুখে যা আসে তাই বলে। সবার সঙ্গে হাসিখুশি থাকে। ছাত্রজীবনের পাতা উল্টিয়ে টিউশনি করছে। চাকরি নামের সোনার হরিণ ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে চায়। টিউশনি করতে করতে ভীষণ অভ্যস্ত। অনীহা শব্দটি তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। স্বচ্ছন্দ্যে টিউশনিকে জীবনের শ্রেষ্ঠ পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। নিজেকে সুখী মানুষের পরিচয় দিতেও দ্বিধাবোধ করে না।
সে কিছু দিন আগে বিদেশ যাওয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ পেল। টিউশনির মায়ায় বিদেশ যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করল। আজকাল তার মতো এমন ছেলে খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল। টিউশনিকে জীবনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। যদিও বিয়ে-শাদির ক্ষেত্রে মেয়েপক্ষ মুখ ফিরিয়ে নেয়। বয়স ত্রিশের ঘর অতিক্রম করেছে। মাথার আংশিক চুল পেকেছে। তো চুল পাকলে লোকের সমস্যা কী? কারও প্রতি তার কোনো অভিমান নেই। যাই হোক, সেদিন মফিজের মনটা বেশ খারাপ ছিল। টিউশনিতে হলুদ টি-শার্টের ওপর কালো সোয়েটার পরে গেল। একটি ছাত্রী মুখ ফুটে বলল, স্যার, আজ আপনাকে খুব কিউট কিউট লাগছে। মফিজ বলল, তোমার চয়েস আছে। বুঝে শুনে ভালোটাই চয়েস করেছ। সে বলল, মানে কী স্যার? অবশেষে মফিজ মুচকি হেসে বলল, আরে তুমিও কিউট কিউট!
-কনইল, নওগাঁ।