সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
পাঠকের চাপাবাজি

গ্লাসের জোড়া

হামীম রায়হান

গ্লাসের জোড়া

সেদিন বন্ধুরা মিলে চায়ের দোকানে বসে গরম গরম সিঙ্গারা খাচ্ছিলাম। দোকানদার আমাদের আগের মতো আপ্যায়ন করেন না। তার অবশ্য যথেষ্ট উপযুক্ত কারণও আছে। গত এক সপ্তাহের চা-সিঙ্গারার বিল বাকি পড়েছে। আমরা খেয়েদেয়ে যাওয়ার সময় বলি, ‘নাই। আজ সিঙ্গারা ভালো হয় নাই মামা। টাকাটা বাকি থাক। পরে দিমুনে।’ আজকেও বিল দিব এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আমরা গরম গরম সিঙ্গারা খাচ্ছি আর দোকানদার চোখ গরম করে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছেন। কথায় বলে, কাস্টমার হলো দোকানের লক্ষ্মী। তবে আমরা যে লক্ষ্মী না এটা প্রমাণ হয়ে যাওয়ার কথা। সে যাই হোক, হঠাৎ দেখি আরেক বন্ধু সাইফুল ভাই এলেন। সাইফুল ভাইয়ের কপালে ব্যান্ডেজ। ঘটনা কী? ভাই বলেন, আর বলিস না, বড়ই কষ্টে আছি। বউয়ের সঙ্গে সারা দিন ঝগড়া। ঝগড়া হলেই   সে তেড়ে আসে। সেদিন আমি তেড়ে  গেলাম আর তাতেই এই ফলাফল। ভয়  দেখাতে একটা কাচের গ্লাস ভাঙলাম, অমনি পাল্টা আঘাত করল। আমরা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করি, কী বলিস! একটা কাচের গ্লাস ভাঙলি বলে আঘাত করল! সাইফুল ভাই গলা নরম করে বললেন, ‘হ্যারে ভাই! গ্লাসগুলো ওর খুব পছন্দ ছিল। গ্লাস ভাঙাতে যে গ্লাসের জোড়া নষ্ট হলো, সেটা আগে ভেবে দেখিনি।’ সাইফুল ভাই সিঙ্গারা-চা  খেয়ে বিদায় নিতেই সবাই নড়েচড়ে বসলাম। দুই মিনিট নীরবতা পালনের পর আমরা শপথ নিলাম, আমরা কেউ আর কখনো বাসায় গ্লাস ভাঙব না। যদি ভাঙতে হয় তাহলে জোড়া মিলিয়ে ভাঙব।

-পটিয়া, চট্টগ্রাম

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর