সোমবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বিয়ের না ফোটা ফুল

শফিক শাহরিয়ার

বিয়ের না ফোটা ফুল

চাকরি না থাকলে বিয়ে করার জো নেই। বেকারদের কথা শুনলেই ঘটকের বিষম ওঠে। মফিজ বিয়ের জন্য কম চেষ্টা করেনি। এলাকার সব ঘটককে বিয়ের কথা সাফ সাফ জানিয়েছে। মাঝে মধ্যেই তাদের দাওয়াত দিয়ে খাওয়ায়। সবার হাতে হাতে উপরিও দেয়। রাতদিন অনুনয়-বিনয় প্রকাশ করে। ঘটক দুই-চারটা মেয়ে দেখালেও মফিজের পছন্দ হয় না। পছন্দ না হলে বড়জোর কথা বলা যায়, কিন্তু বিয়ে করা যায়! এসব ভাবতে ভাবতে মফিজের চুলে পাক ধরেছে। তার চাকরির বয়স ত্রিশের ঘর অতিক্রম করতে কিছুদিন বাকি। অনেক ছোটাছুটি করেও একটা প্রত্যাশিত চাকরি জোগাড় করতে পারেনি। এত বছর চুটিয়ে প্রকাশ্যে প্রেম করেছে বটে। কিন্তু বিয়ের কথা বললেই প্রেমিকা রাজি হয় না। কারণ, তার চাকরি নেই।

অনেকের টুপ করে বিয়ের ফুল ফোটে। মফিজের বিয়ের ফুল ফুটি ফুটি করেও ফুটছে না। মনে হয় ফুলের গাছের গোড়ায় কেউ গরম পানি ঢেলেছে। নইলে বিয়ে করতে এতদিন সময় লাগত না। দীর্ঘ বন্ধু তালিকার সবাই বিবাহিত। মফিজ প্রতিদিন তাদের বিয়ের কথা জানায়। সবার চেষ্টাই ব্যর্থ। মফিজের বিয়ের চিন্তায় বন্ধুরা চরম বিপাকে। বেকারের সঙ্গে কেউ মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি নয়। বন্ধুরা তাকে চিরকুমার উপাধিতে ভূষিত করেছে। মফিজ তাদের উপাধি মিথ্যা প্রমাণ করতে চায়। বিয়ে করতে দেরি হলেও সে সারা জীবন চিরকুমার থাকতে চায় না। চাকরির বয়স অতিক্রম হলেও সে হতাশ নয়। আজকাল মেয়ে দেখতে গেলেই আগে চাকরি চায়। চাকরি থাকলে যোগ্য ছেলে বলে মূল্যায়ন করা হয়। চাকরি কি গাছের পাতা? মেয়ের পরিবার তো এসব কথা বুঝবে না। বোঝারও সময় নেই। বুঝলে সোনার হরিণের আবদার করত না। মফিজ স্বাধীনভাবে চলতে চায়। টিউশনিকেই স্বাধীন পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। অনেক টাকা উপার্জন করে। সোনার হরিণ না হলেও সে কাঠের হরিণ হাতে পেয়েছে। যদিও কেউ কেউ কাঠের হরিণের মূল্য বোঝে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর