সোমবার, ১ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

বিয়ের অপেক্ষায়

শফিক শাহরিয়ার

কখনো চিঠি চালান প্রেম চলে। চিঠির ঐতিহ্য ধরে রাখতেই চিঠি লিখছে ওরা। আসলে এমন জুটির তুলনা ওরা নিজেরাই...

আমার বন্ধু মফিজের জীবনের লক্ষ্য বারো মাসে তেরোবার বদলায়। তার চূড়ান্ত লক্ষ্য সে আদর্শ স্বামী হবে। পড়াশোনার পাতা উল্টিয়ে সে টিউশনিকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। পছন্দের মেয়ে পেলে বিয়ে করতে সময় লাগবে না। অপছন্দের মেয়েকে বিয়ে করে লক্ষ্যচ্যুত হতে চায় না।

এবার মফিজের বিয়ের কথায় আসা যাক। বাড়ির পাশেই বিয়ের তোড়জোড় চলছে। সে বাড়িতে তিন বিয়ের পাত্রী। ওরা তিন বোন। শাপলা, বেলী ও জবা। মফিজ শাপলার মাকে চাচিআম্মা না বলে আম্মা বলেই ডেকে ফেলে। পাশাপাশি দুই বাড়ি। মধ্যে একটা চাপা গলি। ঘরের জানালা খুললেই চোখাচোখি হয়। দরজা খুললে এক লাফেই ওদের বাড়িতে প্রবেশ করা যায়। শাপলা-মফিজের সম্পর্ক অনেক পুরনো। শাপলার মায়ের কড়া মেজাজ। কড়া মেজাজে ধান দিলে খই হয়ে যাবে। তিনি বেকার বলে মফিজকে পাত্তা দেন না। যদিও এত দিন মফিজ শাপলাকে চোখে চোখে রেখেছে। একদিন বেশ ভালো জায়গা থেকে শাপলার বিয়ের প্রস্তাব এলো। সহ্যসীমা পার হলেও মফিজ নিরুপায়। হঠাৎ মেয়েটার বিয়ের আয়োজন করা হলো। সহ্যসীমা পরীক্ষার জন্য নিজের গায়ে চিমটি কাটে মফিজ। কোনো ব্যথা লাগে না। হাসতে হাসতে শাপলাকে বিদায় দিল সে। বিদায় দিয়ে এক চোখে শর্ষে ফুল দেখে। অন্য চোখে দেখে গোলাপ ফুল। কারণ, শাপলার চেয়ে বেলী দেখতে আরও সুন্দর। কখনো সখনো বেলী-মফিজের চোখাচোখি প্রেম চলে। পাশাপাশি বাড়ি থাকলে এই প্রেমের গতিবিধি নির্ণয় করা যায়। আবার কখনো চিঠি চালান প্রেম চলে। চিঠির ঐতিহ্য ধরে রাখতেই চিঠি লিখছে ওরা। আসলে এমন জুটির তুলনা ওরা নিজেরাই। দিনদুপুরে সম্পর্কটা এগিয়ে যায়। বেলীর মায়ের মাথায় অন্য পরিকল্পনা ছিল। তারপর একদিন হঠাৎ বেলীরও বিয়ের আয়োজন করা হলো। মফিজ টের পেলেও কিছু করার ছিল না। কারণ, হবু শাশুড়ি তাকে সম্মান করে বিয়ের দাওয়াত দিয়েছেন। আজকাল কজন এমন সম্মান করে? মফিজ বিয়ের দাওয়াত পেয়ে আনন্দে আটখানা। যাই হোক, মফিজের বিয়ের সময় ১৪টা বেজে গেছে। এখন ১৫টা কখন বাজে সেটাই দেখার অপেক্ষা। শাপলা ও বেলী দুই বোনের বিয়ে হলেও সমস্যা নেই। তাদের ছোট বোন জবা আছে। তার জন্য অপেক্ষা করা যেতেই পারে।

-কনইল, নওগাঁ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর