সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রতিভার বাহার

সাদিকুল নিয়োগী পন্নী

প্রতিভার বাহার

পারুল নামে এক ছোট বোনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয়। ভালো গান করে। বিশেষ করে তার কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত শুনলে যে কেউ বিমোহিত হবে। পারুলের সঙ্গে সেদিন দেখা। সে আমাকে বলল, দাদা, দারুণ একটা খবর আছে।

আমি বললাম, চাকরি নাকি বিয়ে? সে বলল, তার চেয়ে বড় খবর। আমি গান লেখা শুরু করেছি। আমার গানের সুরকার অন্য কেউ হলে তালগোল পাকিয়ে ফেলবে। অন্যকে গাইতে দিলে আবার কেমন গায় সেটা নিয়েও আমি সন্দিহান। গানের মান ঠিক রাখতে নিজে সুর করি, নিজেই গাই। আমি বললাম, তাহলে রবীন্দ্র সংগীতের কী হবে? সে বলল, অন্যের গানের চর্চা কম করি। শ খানেক গান ইতোমধ্যে লিখেছি। নাম দিয়েছি পারুলগীতি। পারুল আরও বলল, বাবু নামে আমার এক বন্ধু আছে। সে তার গানের নাম দিয়েছে বাবুগীতি। আমি বললাম, আজকাল গানের শিল্পীরা দেখছি নাচও করে। তুমিও কি নাচের চর্চা করো নাকি? সে বলল, আজকাল এক প্রতিভা দিয়ে মার্কেটে টিকে থাকার উপায় নেই। আমি নাচের ক্লাসের কোর্সও করেছি। মঞ্চ মাতিয়ে রাখতে হলে গানের সঙ্গে একটু নাচানাচি করতে হয়। না হলে পাবলিক ঝিমিয়ে পড়ে। কণ্ঠ খারাপ হলেও পাবলিক নাচ দেখে আনন্দ পায়। বলিউড হলিউডের সব গানের শিল্পী কেমন করে গানের সঙ্গে নাচে নিশ্চয়ই দেখেছেন। আমি কিছুটা উদ্বেগ নিয়ে তাকে প্রশ্ন করলাম, তাহলে নৃত্যশিল্পীরা কী করবে?

পারুল অট্টহাসি দিয়ে বলল, আপনি দেখছি কোনো কিছুর খবর রাখেন না। আজকাল নাচের সঙ্গে কোনো শিল্পীকে দেখছেন মুখ বন্ধ রাখতে? তারাও গানের চর্চা করেন। ঠোঁট বন্ধ নাচ এখন কেউ দেখে নাকি। এখন পাবলিক ডিমান্ডে সব চলে। এই আমি যদি কেবল গান করতাম আমাকে কেউ চিনত না। এখন আমার ফ্যান ফলোয়ারের অভাব নাই। টিকটকও শুরু করছি। বললাম, তাহলে তোমাকে পারু টিকটিক ডাকবে নাকি? সে বলল, কী যে রসিকতা করেন। টিকটক করে কতজন সেলিব্রেটি হয়ে গেল। কাঁচা বাদামওয়ালা পর্যন্ত পেকে গেল। আমি বাকরুদ্ধ হয়ে রইলাম। এমন সময় পারুল একটা কার্ড দিয়ে বলল, আগামী শুক্রবার আমার একটা অনুষ্ঠান আছে। সময় পেলে আসবেন দাদা। এ বলে চলে গেল পারুল।  আমি তার কার্ড খুলে দেখি তাতে লেখা, বিখ্যাত গীতিকার, সুরকার পারুলের পারুলগীতির একক শোতে আপনার আমন্ত্রণ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর