আমার এক ছোটভাই বললো, দিনদিন সবকছু কেমন জটিল আর কঠিন হয়ে যাচ্ছে। অথচ আগে এমনটা ছিল না। তখন মন খুলে গান গাইতে পারতাম। আহা! আমি বললাম, ওহে হতাশাবাদী, এত হতাশ কেন হচ্ছিস? কী হয়েছে, আমাকে খুলে বল। দেখি তোর জন্য কিছু করতে পারি কি না। ছোটভাই বললো, না ভাই, আপনি কিছুই করতে পারবেন না। ব্যাপারটা আসলেই জটিল। কেন জটিল, কীভাবে জটিল, একটু শোনেন তাহলে। আগে মন খারাপ হলে বা মনটা একটু উদাস হলেই গাইতাম ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’। কিন্তু এখন গানটা গাইতে পারি না। ভয় লাগে। কারণ, ‘আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ অংশটা গাওয়ার সময় মনে পড়ে যায় জিনিসপত্রের আকাশচুম্বী দামের কথা। আপনিই বলেন, জিনিপত্রের আকাশচুম্বী দাম নিয়ে আতঙ্কে ভোগা অবস্থায় কি আকাশের ঠিকানায় চিঠি লেখার নাম মুখে নেওয়া যায়? আমি বললাম, কথা সত্য। এদিকে আজকাল চিঠি লেখাটাও তো ঝামেলার কাজ। এর চেয়ে অনেক সোজা একটা এসএমএস লিখে পাঠিয়ে দেওয়া। অফারের সময় তো এসএমএসের জন্য টাকাও কাটে না। ঠিক কি না? ছোটভাই কোনো কথা বললো না। বুঝলাম, আমার রসিকতায় সে বিরক্ত। আর রসিকতা করে আমি নিজে যে খুব আনন্দে আছি, তা কিন্তু না। জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দামের কারণে আমি নিজেও মোটামুটি শীতকালেই অবস্থান করছি। আর এই বিষয়টা দুই দিন পর ছোটভাইয়ের কাছে প্রকাশ করতেই সে অবাক হলো, আপনি শীতকালে অবস্থান করছেন মানে? শীতকাল পেলেন কোথায়? এখনো তো দরদর করে ঘাম ঝরে। শীতকাল আসতে ম্যালা দেরি। আমি বললাম, এখন সারা বছরই শীতকালরে বেটা, সারা বছরই উইন্টার সিজন। ছোটভাই বললো, উইন্টার সিজন আর শীতকাল একই জিনিস। ইংরেজিতে বললেই ঋতু আরেকটা হয়ে যায় না। এখন বলেন, সারা বছরই শীতকাল কীভাবে। আমি বললাম, শীতকালের কিন্তু বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। এগুলোর মধ্যে প্রধানতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এই সিজনে খেতভর্তি সরিষাফুল থাকে। আর এখন জিনিসপত্রের যা দাম, আমরা বাজারে গেলেই চোখে সরিষাফুল দেখতে শুরু করি। আর চোখে সরিষাফুল দেখার এই ব্যাপারটা সারা বছর ধরেই চলমান। মাসে সারা বছরই এখন জিনিসপত্রের দাম মোটামুটি একরকম থাকে। এবার বুঝে নে বাকিটা। ছোটভাই বললো, না, ঠিক আছে আপনার কথা। তবে জিনিসপত্রের দাম শুনে চোখে সরিষাফুল দেখা আর শীতকালের নরমাল সরিষাফুলের মধ্যে কিন্তু একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। শীতকালের সরিষাফুলের একটা সুবিধা কী, সেখানে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা যায়। তারপর সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করলে ভালো লাইক কমেন্ট পাওয়া যায়। আমি এবার ধমক মারলাম। বললাম, জিনিসপত্রের দামের টেনশনে বাঁচি না, আর উনি আছেন ফেসবুকের লাইক কমেন্টের চিন্তায়। যত্তসব! আমার ধমক খেয়ে ছোটভাই তাৎক্ষণিক সরে গেলেও একটু পরেই আবার এলো। বললো, এই যে শাকসবজি, আলু পটল সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী মানে দামের দিক থেকে সবই আকাশে উঠতে চায়, এটা কেন? আমি বললাম, এটা আমাদের কর্মফল। ছোটভাই বললো, কর্মফল? কিসের কর্মফল? আমি বললাম, একসময় আমরা অপচয় করেছি। তাই আজ এরা আকাশমুখী হয়ে গেছে। ছোটভাই বললো, কিন্তু আমরা অপচয়টা করলাম কবে? আমি বললাম, কেন, একসময় আমরা শাক দিয়ে মাছ ঢাকিনি? তো এই যে ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকা’র ব্যাপারটা, এটা কিন্তু নির্ঘাৎ অপচয়? কেন, শাক দিয়ে কেন মাছ ঢাকতে হবে? আমি থতমত খেয়ে বললাম- সব প্রশ্নের উত্তর তাৎক্ষণিক পাওয়ার আশা করা ঠিক না।
শিরোনাম
- কুড়িগ্রামে কৃষক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা
- বগুড়ায় ফেন্সিডিলসহ আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
- আর্মি এভিয়েশন বেসিক কোর্স-১৩ এর সমাপনী অনুষ্ঠিত
- বিজয় দিবস উপলক্ষে যেসব কর্মসূচি পালন করবে সরকার
- কুড়িগ্রামে অটোরিকশায় ট্রাকের ধাক্কা, প্রাণ গেল মা-মেয়ের
- নলকূপের মিটার চুরির প্রতিবাদে কৃষকদের সড়ক অবরোধ
- পোশাক খাতে এই অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছে : এম সাখাওয়াত
- ১৯৬ কোটি টাকার ভোজ্যতেল কিনবে সরকার
- প্রায় পাঁচ মাস পর ভারতে ফিরলো আটকে পড়া 'মিতালি এক্সপ্রেস'
- যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল হলে ফেঁসে যাবেন ৩৪ শতাংশ ভারতীয়
- ‘তিন স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করবে জাপান’
- একযোগে ১২ জেলার এসপিকে বদলি
- বাদ যাচ্ছে সাড়ে ১২ বছরের কম বয়সী ২১১১ মুক্তিযোদ্ধার নাম
- ব্যয় সাশ্রয়ী জ্বালানি নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার : পরিবেশ উপদেষ্টা
- বাংলাদেশের জন্য ৬০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন এডিবির
- বাগেরহাটে নিখোঁজ যুবকের মরদেহ উদ্ধার
- দুর্নীতির অপরাধে এসপি নিহার রঞ্জনকে শাস্তি দিলো সরকার
- ভারতের ‘আগ্রাসনের’ প্রতিবাদে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাদের বিক্ষোভ, ৬ দাবি
- কিশোরগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৫ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত
- সমুদ্র থেকে তুলে নেওয়া ৭৮ বাংলাদেশির ছবি প্রকাশ করল ভারত
প্রকাশ:
০০:০০, সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪
আকাশছোঁয়ার গপ্পো
ইকবাল খন্দকার
টপিক
সর্বশেষ খবর