একটি মাত্র প্রশ্ন করেছিলাম এক শতবর্ষী বৃদ্ধকে
যার সাথে দেখা হয়েছিল এক নির্জন ধূসর প্রান্তরে
তখন সে নিষণ্ন-এক কঙ্কাল বৃক্ষতলে মৃত্যুর অপেক্ষায়।আমার প্রশ্নে শূন্য দৃষ্টিতে পাল্টা প্রশ্ন তার—তুমি কি সংসারী?
না।
তুমি কবি!
না।
ধান্ধাবাজ?
না।
তাহলে তুমি মাতাল। উন্মাদ কিংবা ভ্রমগ্রস্ত...
না-না-না। আমি শুধু সত্যটা জানতে চাই। জানতে চাই
অন্য এক জীবনের অর্থ— যার নাম অনন্তকাল— অজর, অমর!
বৃদ্ধের মুখে ম্লান হাসির ছায়া। কষ্ট ক্লান্ত স্বরে বলে,
‘সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালোবাসিলাম—
সে কখনো করে না বঞ্চনা।’
হে যুবক, যদি উত্তরটা পেতে চাও তা হলে আর বিলম্ব নয়—
এই সামনের পথ দিয়ে হাঁটতে থাক... উত্তর, দক্ষিণে পূর্ব, পশ্চিমে...
হাঁটতে থাক... পৌঁছে যাও পনের শেষ প্রান্তে...তারপর?
তারপর সেই পথটার শেষপ্রান্ত থেকে আবার শুরু কর
নিজেকে অতিক্রম কর বারবার... শুরু আর শেষ—হাঁটতেই থাক অবিরাম।
হাঁটতে হাঁটতে হয়ো না যন্ত্রণাকাতর তপ্ত মরুর রুক্ষতায়...
কিংবা হয়ো না শংকিত হিমমেরুর নির্জনতায়... হাঁটো... তাকাও...
বিশ্রাম লোভে ভেঙে পড়ো না এই আমারই মতো। তাকাও... তাকাও...
কারণ, অচেনা কোনো কিছুর অনুসন্ধান বড় কঠিন,
খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। অলৌকিক বিশ্বাস আর প্রার্থনার জটাজালে
মিথ্যে হয়ে যায় তত্ত্ব, তথ্য, বিজ্ঞান।
তবুও তাতে আনন্দ যদিও পাও অনুভবে আত্মার ঘ্রাণ...
ক্রমশ চুম্বকের মতো তোমাকে টেনে নিয়ে যাবে
পথের সর্বশেষ প্রান্তে— শেষ ঠিকানায়...
যদিও জানা নেই তা পারিজাত স্বর্গ কিংবা পাপগুহা অন্ধকার নরকের দ্বার।
সুতরাং হাঁটতেই থাক... অবিরাম...