লকডাউনে পুরোপুরি নিস্তব্ধ নগর; প্রহরীদের চোখ
এড়িয়ে একটি মাছিও ঘরের বাইরে যেতে পারছে না
ঘরবন্দী গরিব মানুষ পেটের চিন্তায় লবেজানআর ধনীরা ফেসবুক, ইউটিউবে ব্যস্ত সময় কাটান
ঘরে অন্তত ছ’মাস চলার মতো রসদ আছে
পন্ডিতেরা গলদঘর্ম লকডাউনের লাভ-ক্ষতি নিয়ে
টিভিতে মন্ত্রীদের বিরক্তিকর ভাষণ শুনতে শুনতে
ক্লান্ত নগরবাসী; উদ্বিগ্ন কণ্ঠে তারা জানতে চায়
কভিড-১৯ এর কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হলো কি না?
এরই মধ্যে একদিন ভোরে দেখি পনেরো তলা ভবনের ছাদে
নগরের নিরন্ন বায়সকুল জরুরি সভায় বসেছে; করোনাকালে
অন্নচিন্তায় তারাও বিচলিত; মানুষের চেয়ে কৃষ্ণকায় এই পাখিটি
অনেক বেশি সৎ ও সংহতি প্রবণ; কোথাও একটি কাক
মারা গেলে হাজার হাজার সমব্যথী কাক এসে জড়ো হয়
নিজের ক্ষুধা মিটলে তারা অন্যের খাবারে ভাগ বসায় না।
মানুষ বসায়; সুযোগ পেলে অন্যের মুখের গ্রাস কেড়ে নেয়।
স্বাভাবিক সময়ে উদরপূর্তি নিয়ে কাকদের ভাবতে হয় না
সড়কে, নর্দমায় পড়ে থাকা পচা-বাসি খাবার কিংবা
বাড়ির কিচেনের জানালা দিয়ে ছোঁ মেরে নেওয়া মাছের
টুকরো তারা পরস্পর ভাগাভাগি করে খায়।
করোনাকবলিত এ শহরে কাকদের জোরালো দাবি,
চাহিদামাফিক ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে তাদের কাছেও
এ ব্যাপারে ত্রাণ মন্ত্রণালয় বরাবর একটি স্মারকলিপিও
পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে; এর মূল কথা হলো-কাকদের ত্রাণ
বিতরণের দায়িত্ব তাদেরই দিতে হবে; গরিবের হক মেরে দেওয়া
মনুষ্য প্রজাতির প্রতি ভরসা রাখতে পারছে না বায়সকুল।