শিরোনাম
শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

খিজিরপুরের মেসি

নাসরীন মুস্তাফা

খিজিরপুরের মেসি

বাড়ি ফিরতেই টগবগ করে ওঠে মাসুদা। বলে, আমাগো দল ফাইনাল।

দল? কিয়ের দল?

মা ভাত বাড়তে বাড়তে প্রশ্নটা করতেই মাসুদার কথা আর থামে না। বলে, আমাদের ফুটবল দল মা। হেড মাস্টার স্যার আইজ নিজে থাইক্যা আমাগো দল ফাইনাল করছেন। আমি জানতাম, আমি কিছুতেই বাদ হমু না। পেরাকটিস ম্যাচ যে কয়ডা হইছে, মা জান, আমি এক জোড়ার কম গোল করি নাই। পরতেক ম্যাচে গোল, তুমি ভাবতে পার মা?

মা ভাবতে পারেননি। হাঁ করে তাকিয়ে আছেন তো আছেনই। মাসুদা ফুটবল খেলে, গোল দেয়, এসব কিছু তার মাথায় ঢুকছে না। কেননা এ পরিবারের কোনো মেয়ে কখনো কোনো খেলা খেলেনি। পুতুল খেলাও না। একেবারে ছোট বয়সে দড়ি লাফ চলে, একটু বড় হলে সেটাও না। না মানে না। সেই পরিবারের মেয়ে মাসুদা ফুটবল খেলে আর গোলও দেয়, এটা মায়ের ভাবনায় থাকার কথা নয়। ছিলও না। মাসুদা বলার পরও মা ভাবতে পারছিলেন না।

রানার খুব মজা লাগছিল। মাসুদার কথা মাকে রাগিয়ে দেবে, তার আভাস পেয়ে ওর মজা লাগছে। মাসুদার ফুটবল খেলার সাধ মিটে যাবে, এমনটা ভাবতেই ও চায়। ছেলেদের দলে ওর জায়গা হয়নি। ফুটবল মাঠে কেন যেন একটু পরেই ওর মাথা গরম হয়ে যায়। অন্যের পা থেকে বল নিজের পায়ে নিতে কৌশল করতে হয়, স্যার কতবার যে ওকে শিখিয়েছেন, ওর মনে থাকে না। ‘আমি বল চাইছি, তুই বল দিবি না ক্যান’ মার্কা রাগ জমে যায় মাথায়। তখন কৌশল-টৌশল ভুলে যায় রানা। কোনো একটা মার দিয়ে বসে, ফাউল হয়ে যায়। ওর নাম হয়ে গেছে ‘ফাউল রানা’।

মাসুদাকে সবাই ডাকছে ‘খিজিরপুরের মেসি’ নামে, রানার কানে গেছে সে নাম। মাসুদা নাকি মেসির মহিলা রূপ, মাসুদার মাঝে মেসি আছে, কেউ কেউ বাড়িয়ে বলে যে মেসিও নাকি ফেইল মেরে যায় মাসুদার কৌশলের কাছে। এই মেসিটা কে, তা খিজিরপুরের কেউ কেউ জানত। মাসুদার কল্যাণে এখন মোটামুটিভাবে সবাই জানে। মেসি হচ্ছেন আর্জেন্টিনা দলের পেলেয়ার। মেসির পায়ে জাদু আছে। শয়তান মাঠের মইধ্যে খাড়ায়া থাকলেও মেসির গোল ঠেকাইতে পারে না। কেউ কেউ এমনভাবে বলে যেন সে নিজের চোখে দেখেছে, শয়তান মাঠে নেমে মেসিকে ঠেকাতে চাইছে। পারছে না।

রানা কতজনের মুখেই যে শুনেছে, সে ‘খিজিরপুরের মেসির ভাই’। এরপর তো ওর মেজাজ আরও খারাপ হয়েছে। নিজে খেলবে, মাসুদার চেয়েও ভালো খেলে সবাইকে দেখিয়ে দেবে, এমন স্বপ্নই দেখেছিল ও। ফাউল রানা হয়ে গিয়ে ও যেহেতু খেলবে না, মাসুদাকেও খেলতে দেবে না। মায়ের ভাবনায় টোকা মেরে বলে, ফুটবল তো পোলাগো খেলা, না মা? মাসুদা কি পোলা? মাসুদা তো মাইয়া, না মা? মাইয়া হইয়া মাসুদা ক্যামনে ফুটবল খেলব? বাপজান শুনলে রাগ করব, করব না মা?

করব।

মা খুব ভার করে ফেলেন মুখ। মাসুদার চোখে পানির পুকুর দেখেও দেখেন না। রানার মুখের হাসিটা থেকে চোখ ফেরাতে পারেন না। ওদিকে মাসুদা ফোঁস করে ওঠে। বলে, হেড মাস্টার স্যার কি তয় মিছা কথা কইলেন? তিনি কোনো দিন মিছা কথা কইছেন, এমনটা কেউ কইতে পারব?

কী কইছেন তিনি?

তিনি কইছেন, এই যে মাইয়ারা, মন দিয়া শোন। আমাগো পরধানমন্ত্রী কইছেন, মাইয়ারা পাঁচ-দশটা গোল দিবার পারে।

পরধানমন্ত্রী কইছেন? মা জানতে চান। মা কেন জানতে চাইছেন এ্যাতো কথা? রানা পানির গ্লাসটা জোরে শব্দ করে মাটিতে রেখে বলে, পোলারাও পারে।

মাসুদা জোরের সঙ্গে বলে, পোলারা পারলে মাইয়াগো সমস্যা নাই। মাইয়ারা পারলে পোলাগোও কোনো সমস্যা নাই। আমি পারতাছি, তুমিও পার ভাই। খেলার মাঠে ফাউল না দিয়া গোল দাও। আমার মতো জোড়া গোল দিবা, হাততালি তহন আমিও দিমু। আমি গোল দিলে তুমি দিবা না হাততালি? কও ভাই, দিবা না?

 

না দিমু না। তুই গোল দিলেও আমি হাততালি দিমু না। দিমু না। দিমু না।

রানা হাম হাম করে ভাত খেতে লাগল। শব্দ করে মুরগির রানের হাড্ডি চিবাতে লাগল। মাসুদার গলা দিয়ে খাবার নামছে না। ও ঢোক গিলে কান্না থামানোর চেষ্টা করছে। কেননা, এ নিষ্ঠুর ভাইয়ের সামনে ও কিছুতেই কাঁদবে না। ওকে খুব শক্ত থাকতে হবে। খুব শক্ত। মাসুদা স্বাভাবিকভাবে ভাত খেতে থাকে। একবার মায়ের দিকে তাকিয়ে ওর চোখ আটকে যায়। মা কেন যেন উদাসী মানুষের মতো জানালা দিয়ে দূরের আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন। ভাবছেন। কী ভাবছেন? মাসুদা কেন ফুটবল খেলবে, তা-ই ভাবছেন? এসব ভাবাভাবি থামিয়ে দিতে মাসুদা বলে, হেড মাস্টার স্যার আমারে দলে নিছেন। এহন তেড়িবেড়ি করলে বেয়াদবি হইব। বেয়াদবি স্যারের কইলাম পছন্দ না। স্যারের খুব রাগ হইব। রাগের চোটে স্কুল থেইকা নাম কাটাইয়া দিলে গেল আমার পড়ালেহা।

রানা যেন খুশি হয় এই কথায়। বলে, তর পড়ালেহা গেলেই বা কি? মাইয়া মানুষের পড়ালেহা বাদ দেওন কোনো ব্যাপার না। বাপজান তরে বিয়া দিয়া দিব।

খিকখিক করে হাসে রানা। তবে মায়ের দিকে চোখ পড়তেই ওর হাসি বন্ধ হয়ে যায়। মায়ের চোখে আগুন জ্বলছে। মুখটা কঠিন। মা চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন, এইসব বাজে কথা তুই কোত্থেকে শিখছস্ রানা? সারাক্ষণ মাইয়ারা কী পারে না কইতেছিস্। মাইয়ারা কী পারে, সেইডা এহন ক’। ক’ কইতাছি।

রানা বুঝে গেছে মা এখন রেগে গেছেন। সোজা কথা না বললে আজ ওর খবর আছে। আর তাই রানা চট জলদি বলতে থাকে, মাইয়ারা কই মাছের সালুন রানতে পারে, তুমি যেমুন রানছ।

আর?

রানা এরপর যা যা বলে, তার সবই মায়ের কাজ। মাইয়ারা ওর মায়ের মতো যা যা করতে পারে, তা বলে। মায়ের চোখের আগুন তখনো জ্বলছে দেখে মনে করতে হয় শেফালি আপার কথা। ওদের স্কুলের অঙ্কের যে কজন শিক্ষক আছেন, তাদের মাঝে শেফালি আপা সেরা। শেফালি আপার ক্লাসে সবচেয়ে ভালোভাবে অঙ্ক বোঝে রানা। রানা বলে, মাইয়ারা অঙ্ক পারে। মাইয়ারা ফুটবল খেলা শেখাইতে পারে।

বলতেই হয় এ কথা যে মেয়েরা ফুটবল খেলা শেখাতেও পারে। কেননা, শেফালি আপা এখন ফুটবল খেলা শেখাতে শুরু করেছেন। কিন্তু ঘটনাটা এ্যাতো সহজে ঘটেনি। ঘটনাটা ঘটেছে হাসমত স্যারের কারণে।

ওদের স্কুলের খেলাধুলার স্যার যে হাসমত স্যার, তিনি ছেলেদের ফুটবল-ক্রিকেট খেলতে দিয়ে মেয়েদের বলতেন, এ্যাই মাইয়ারা, তোমরা খাতায় মাঠ আঁক। মাঠে পোলারা ফুটবল খেলতাছে। মাঠের পাশে ফুলগাছ আঁকবা, মাঠের ওপরে যে আকাশ, সেইখানে পাখি উড়াইয়া দিবা। মনে থাকব?

এই মাসুদাকেই একবার কান ধরে মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল, মনে আছে রানার। কেননা মাসুদা স্যারকে বলেছিল, আমরা খালি মাঠ আঁকুম, মাঠে খেলুম না? আমরা ক্যান মাঠে নাইমা ফুটবল খেলুম না, স্যার?

হাসমত স্যার চিবিয়ে চিবিয়ে যা বলেছিলেন এবং এখনো যা বলেন, তা মনে আছে রানার। অ রে মাসুদা! তুই কি পোলা? তুই তো মাইয়া, তুই মাইয়া না? মাইয়া হইয়া তুই ক্যামনে ফুটবল খেলবি?

শেফালি আপা মাসুদা আর মাসুদার মতো ফুটবল খেলতে চাওয়া মেয়েগুলোর পাশে দাঁড়ালেন। হেড মাস্টার স্যারকে বোঝালেন, মেয়েদের ফুটবল খেলতে দিতে হবে। হাসমত স্যার না পারলে ক্লাস শেষে তিনি নিজেই ওদের ফুটবল খেলতে শেখাবেন। স্কুলে পড়ার সময় তিনি নাকি ফুটবল খেলতেন।

শেফালি আপা যে কত ভালো খেলতেন, তা বোঝা গেছে মাঠে নামার পরই। শাড়ির আঁচল কোমরে পেঁচিয়ে গোলপোস্টের সামনে দাঁড়িয়ে শেফালি আপা, আর সারা স্কুলের ছেলেমেয়ে-শিক্ষক তো বটেই, আশপাশের সব মানুষ দাঁড়িয়ে গেছে মাঠের চারপাশে। শেফালি আপা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বললেন, দেখি তো কে কয়টা গোল দিতে পারিস!

হাসমত স্যারই এগিয়ে গেলেন সবার আগে। যেতে যেতে বলছিলেন, এমন গোল দেব না, সূর্যে পাঠায়া দিব বল!

হাসমত স্যার সূর্যে বল পাঠাতে পারেননি, গোলপোস্টেও না। তার গোল খুব সহজে হাতের ভিতর আটকে দিলেন শেফালি আপা। বললেন, ডান পা যে অ্যাঙ্গেলে আগালেন, সে অ্যাঙ্গেলে গোল হয় না। কোন অ্যাঙ্গেলে গোল হয়, তা আমি আপনাকে শিখিয়ে দিতে পারব স্যার। খুব সোজা অঙ্ক। ত্রিকোণমিতির ফর্মুলায় ফেললেই দেখবেন পানির মতো সোজা হয়ে গেছে।

এতক্ষণ শেফালি আপার কথা বলতে বলতে মাসুদার কথায় গিয়ে পড়তেই হলো রানাকে। মা জানতে চাইলে বলতে হলো, সেদিন একমাত্র মাসুদার করা গোলই শেফালি আপা ঠেকাতে পারেননি। কেউ যখন গোল করতে পারছিল না, তখন হেড মাস্টার স্যার নিজেও এগিয়ে এসেছিলেন। তিনিও পারেননি শেফালি আপাকে হারাতে। মাসুদা পেরেছিল। রানা বলতে বলতে বলে ফেলে, কীভাবে মাসুদার গোল শেফালি আপাকে বোকা বানিয়ে গোলপোস্টে ঢুকে পড়েছিল। বলতে বলতে রানার বুকটা ফুলে গেল গর্বে, মনে মনে টের পেল, খিজিরপুরের মেসির ভাই হতে পেরে ও কত খুশি।

মা মুচকি হেসে বলেন, তাইলে তো মাসুদারে বাদ দিয়া দল করন ঠিক হইত না। দল হারত। তগো ইশকুলের মানসম্মান যাইত।

মাসুদা হুররে বলে চেঁচিয়ে উঠলে মা থামিয়ে দেন। বলেন, বাপজানরে আগে কও। হ্যায় রাজি হইলে না তুমি গোল দিবা।

বাপজান আসবেন রাতে। ততক্ষণ মাসুদার পায়ের বল উঠানময় গড়ায়। পেরাকটিস চলতাছে, মাসুদা তেমনই বলল। একা একা ঘটনা ঘটতে পারেনি, কেননা রানার পা নিশপিশ করেছে। উঠানে নেমে গেছে ও-ও। দুই ভাই বোন বল কেড়ে নেওয়ার খেলা খেলছে। মাসুদার সঙ্গে খেলতে খেলতে রানা টের পায়, এসব কায়দা-কানুন এর আগে শিখতে পারেনি ও। আর তাই বুঝি খেলার মাঠে মাথা গরম হয়ে যেত। আরও আগে থেকে মাসুদার সঙ্গে খেললে ওর নাম ফাউল রানা হতো না, রানার এরকমই মনে হতে থাকে।

বাপজান বাড়ি আসতে আসতে শুনে এসেছিলেন দারুণ এক ফুটবল টুর্নামেন্টের খবর। পেরাইমারি ইশকুলের বাচ্চাগো নিয়া ফুটবল টুর্নামেন্ট। বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। ছয়-সাত বছর ধইরা এ টুর্নামেন্ট চলছে দেশে, খিজিরপুর স্কুল এবার অংশ নেবে। স্কুলের টিম নাকি দারুণ শক্তিশালী। স্কুলের মেয়েদের টিমে নাকি মাসুদা নামের এক মেয়ে আছে। সেই মাসুদা নাকি মাঠে নেমেই গোল করে। মাসুদা নামের মেয়েটার পা নাকি আল্লাহতায়ালা বানিয়েছেন গোল দেওয়ার জন্যই। আর সে কী গোল! মাসুদা নাকি বলকে সূর্যে পাঠিয়ে দেয়।

বাপজান বাড়ি আসতে আসতে ভাবছিলেন, তার মেয়েটার নামও মাসুদা। বাড়ি ফিরে শুনলেন, সবাই যে মাসুদার কথা বলছিল, সেই মাসুদা তারই মেয়ে মাসুদা। বাপজান মাসুদাকে বুকে জড়িয়ে ধরে লম্বা একটা শ্বাস নিলেন। তার চোখের কোণে পানি জমেছে, তা বাচ্চাকাচ্চাদের টের পেতে দেওয়া যাবে না। আর তাই লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে পানি ঠেকাতে হলো। তবে এরপরের বেশ কয়েকটা দিন যা গেল, বাপজান নিজেও মাসুদার পেরাকটিস দেখতে দেখতে চোখের পানি কতবার যে সবার সামনে ঝরিয়ে ফেললেন, তার হিসাব দেওয়া সম্ভব নয়।

রানা খুব অবাক হয়ে ভাবে, ওর চারপাশের বড় মানুষগুলো আগে যেমন বলত, মাইয়াগো পড়ালেহা বন্ধ করন কোনো বিষয় না। মাইয়াগো সুযোগ বুইঝা ফুস কইরা বিয়া দেওন যায়।

ওর চারপাশের বড় মানুষগুলো এখন আর এসব বলছে না। মাসুদা কোন ম্যাচে কয়টা গোল দিয়েছে সে হিসাব এখন চারপাশে। মাসুদা গোল দিয়েছে, মাসুদার গোলে সবকটা ম্যাচ ওরা জিতেছে। মাসুদার গোল খিজিরপুর স্কুলের মেয়েদের টিমটাকে ঢাকা পর্যন্ত নিয়ে এলো। ফাইনাল খেলবে ওরা। তখন বাপজানের সঙ্গে মা আর রানা জীবনে প্রথমবারের মতো ঢাকায় এলো। ওদের সঙ্গে হেড মাস্টার স্যার, শেফালি আপা, হাসমত স্যারও এসেছেন। হাসমত স্যার যেরকম করে টগবগ করছেন, তাতে মনে হচ্ছে মেয়েরা যে ফুটবল খেলতে পারে, এটা তিনি খুব ভালো করেই জানেন। ঢাকায় আসার তিন দিন আগে হাসমত স্যারের ফুটফুটে একটা মেয়ে হয়েছে। স্যার নাকি তার নাম মাসুদা রেখেছেন। বড় হয়ে পিচ্চি মাসুদা এমন গোল নাকি করবে, সূর্যে পৌঁছে যাবে বল, হাসমত স্যার চোখ বুজলেই নাকি দেখতে পারছেন সব।

চারপাশে সবাই চিৎকার করছে, ‘মেসি মেসি! খিজিরপুরের মেসি!’

রানাও চোখ বুজলে দেখতে পায় ওর বোন মাসুদা ছুটছে। মাসুদার পায়ে বল। একটু পরই চারপাশ ভেঙে পড়বে ‘গো..ও...ল’ চিৎকারে, সেই চিৎকারে কান ফেটে যেতে পারে সেই ভয় কারোর নেই। রানারও না। ও পাগলের মতো ‘গো...ও...ল’ করবে। সত্যি বলতে কি, আনন্দে ওর পাগল হয়ে যেতেই ইচ্ছা করবে।

মাসুদার পায়ে ছোটা বল ছুটিয়ে নিয়ে যায় রানা আর মাসুদার মাকেও। ছোটবেলায় স্কুলের মাঠে ছেলেদের ফুটবল খেলতে দেখতেন। মাঠে নেমে পড়তে ইচ্ছা হতো খুব। মাঠে তিনি নেমেছেন, মাসুদার শরীরে নিজের আত্মাটাকে পুরে দিয়ে ওই যে নেমেছেন মাঠে। ওই যে তিনি ছুটছেন। ওই যে তিনি গোল করলেন। গোলপোস্টে আটকে যাওয়া বলটাকে ঝাপসা হয়ে যাওয়া চোখ আর দেখতে পায়নি। তবে ‘গো...ও...ল’ চিৎকার কানে এলে বুঝলেন, গোল তিনি করেছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর