কেউ কী বলতে পার কোথাও যাবার পথ কোনখানে কোথাও কোথাও?
আমি শুনেছি এমন একটা জায়গা আছে যার নাম- কোথাও।
কিন্তু আমি জানিনা এটা কোনখানে কোথায়!আমি শুধু সে পথের খোঁজে হেঁটে চলি ক্লান্ত পায়ে।
অবিরাম হেঁটে চলি রূপকথার গল্পের মতো।
বাউলের গানে শুনেছি সে এক নিশ্চিন্তপুর,
সেখানে ছোট এক বাড়ি আছে, আছে একটি মাত্র ঘর, দাওয়া আর উঠোন।
এলোমেলো দূর্বাঘাসের জঙলা, শ্যাওলা সবুজ উঠোনে ক্লান্তিভরে শুয়ে থাকে একটা বিষণœ কুকুর,
সোঁদালিগন্ধা মাটির দাওয়ায় একটা বিড়াল সেও আলস্যে ঘুমায়,
শুধু ছুটোছুটি করে একটা ক্ষুধার্ত ইঁদুর।
সে খুঁজে খুঁজে মাটি পোঁকা খায় বিড়ালটাকে পাত্তা দেয় না এতটুকুও।
বাড়িটার চালে কবেকার সাদা চালকুমড়ো
হাড়কেঠো শবের মতো শুয়ে আছে কতকাল,
তুলসী গাছটাও কঙ্কাল,
পাতকুয়োটাও শব্দহীন, পানি আছে কী নেই কিছু জানা নেই,
ভাঙা উনুনে আগুন নেই, হাঁড়িকুড়ি নেই,
শূন্য মাটির কলস পড়ে আছে একা স্মৃতি হয়ে সর্বজয়ার ভাঙা বসতে।
কতকাল শোনা যায় না হরিহরের ফিরে আসা,
তার আচমকা ডাক, ওগো কোথায় গেলে,
শোনা যায় না অপুর কোমরের ঘণ্টির শব্দ, তার আনন্দ উল্লাস,
শোনা যায় না হতচ্ছাড়ি, চঞ্চলা দুর্গার পায়ের আওয়াজ।
সবকিছু ছেড়ে তারা চলে গেছে কতদূরে কোথাও কোথায়?
আমি রোদ, বৃষ্টিতে হাঁটি, শীত, গ্রীষ্মে হাঁটি,
অবিরাম হেঁটে চলি স্বপ্নের ভেতর।
কেন? কী-ই বা কারণ- আমি জানি না উত্তর।
তবু খুঁজে পেতে চাই সেই মেটে পোড়োবাড়ি, দাওয়া আর উঠোন-
যেখানে আমার অপেক্ষায় আছে একটি কুকুর
একটি বিড়াল আর একটি ইঁদুর।