শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান শেরপা হাসান আজিজুল হক

আতিউর রহমান

বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান শেরপা হাসান আজিজুল হক

বাংলা ভাষার অন্যতম শক্তিশালী কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক চিরবিদায় নিয়ে চলে গেলেন। গত ১৫ নভেম্বর রাত সোয়া ৯টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাউজিং সোসাইটিতে নিজ বাসভবন ‘উজান’-এ তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরিণত বয়সেই তিনি না ফেরার দেশে চলে গেলেন। কিন্তু মন যে মানে না। তার মৃত্যুর খবরে কেবলই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছি। ভীষণ বেদনাক্রান্ত হচ্ছি এই ভেবে যে আমাদের আলোকিতজনেরা এক এক করে বিদায় নিচ্ছেন। আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতি ভুবন যে একেবারে অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়ছে। জানি না এই শূন্যতা কবে কীভাবে পূর্ণ হবে।

তিনি ছিলেন আমার আত্মার আত্মীয়। আমি ধন্য তার অবারিত স্নেহবর্ষণে। যতবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি এবং ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপ করেছি ততবারই তিনি মঞ্চে আমার পাশে বসেছেন। মনোযোগ দিয়ে আমাদের সংলাপ শুনেছেন। সবশেষে চুম্বক কিছু কথা বলেছেন। শুধু আমি নই, তরুণ প্রজন্মের সদস্যরা বরাবরই তার কথা থেকে চিন্তার খোরাক পেয়েছে।

তার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ পরিচয় হয় ‘নিরন্তর’ সম্পাদক মাহবুব হাসানের সূত্রে। আমরা মাহবুবকে নাঈম বলেই ডাকতাম। আমাদের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সমুন্নয়’-এর নামটিও তারই দেওয়া। শুরু থেকেই সমুন্নয় ও উন্নয়ন সমন্বয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নাঈম। কবি- সাহিত্যিকদের সঙ্গে তার গভীর হৃদ্যতার সুবাদে হাসান ভাইয়ের মতো অনেকের সঙ্গে পরিচিতির সুযোগ মেলে। নাঈমকে দেখতে সমুন্নয়ে এলে আমার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বাড়ে। এভাবেই হাসান ভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় গভীরতর হয়। এর আগে বিভিন্ন সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংগঠনে তার সঙ্গে দেখা হয়েছে। তবে নিবিড় পরিচয় যাকে বলে তা সমুন্নয়েই হয়েছে। এ জন্য নাঈমের কাছে আমি চিরদিনই গভীরভাবে কৃতজ্ঞ থাকব। রাজশাহীতে থেকেও হাসান ভাই মূল ধারার সাহিত্যে নিরন্তর বিচরণ করতেন। প্রতিবছর ২ ফেব্রুয়ারি তার জন্মদিন এলে আমি তাকে নিয়ে কিছু লেখার তাগিদ বোধ করতাম। এই গত ২০১৮ সালে যখন ৭৮ পেরিয়ে ৭৯তে পা দিলেন তখন তাঁকে জন্মদিনের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা দিয়ে কালের কণ্ঠতে লিখলাম। আজকের এ লেখাটি কার্যত সেখান থেকে অনেকাংশেই নেওয়া।

বছর তিনেক আগে রাজশাহী গিয়েছিলাম রাজশাহী নগরের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর এক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য। ছিলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী হলে। ওই সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা কয়েকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। খোলা চত্বরের অনুষ্ঠানে ঠিকই হাসান ভাই এসেছিলেন। এরও আগে আরেকটি অনুষ্ঠানে হাসান ভাইয়ের সঙ্গে এক মঞ্চে বসেছিলাম ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক ফোরাম চত্বরে। সেদিন ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে ‘জীবনের কথা, অর্থনীতির কথা’ শীর্ষক একটি গণবক্তৃতা দিয়েছিলাম। ওই অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন হাসান ভাই। তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া আমার আবেগঘন বক্তৃতার পর যে অকৃত্রিম স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিয়েছিলেন হাসান ভাই তা আজও ভুলতে পারিনি। কতভাবেই না তিনি সেদিন আমার কাজ ও ভাবনাকে সমর্থন দিয়েছিলেন। তার প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।

বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান এই শেরপা ছোটগল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস, শিশু সাহিত্য, নাটক স্মৃতিকথাসহ সাহিত্যের সর্বত্র দাপটের সঙ্গে চড়ে বেড়িয়েছেন। তার সুবিন্যস্ত গদ্য ও আকর্ষণীয় বর্ণনাভঙ্গির কারণে সচেতন পাঠকমাত্রই তার লেখালেখির ভীষণ অনুরাগী। জীবনসংগ্রামে লিপ্ত মানুষের কথকতা তার গল্পে-উপন্যাসে-আত্মজীবনীতে যেভাবে উঠে এসেছে তা আমি এ স্বল্প পরিসরে বলে বোঝাতে পারব না। এটা অনুভবের বিষয়। রাঢ়বঙ্গকে পটভূমিতে রেখে তিনি যেসব অসামান্য গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন সেসবের বিচার করার ক্ষমতা আমার নেই। পাঠকনন্দিত এসব রচনার কল্যাণে তিনি দুই বাংলাতেই খুব জনপ্রিয় ছিলেন। ‘একুশে পদক’ ও ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’-এ ভূষিত এ অসাধারণ কথাসাহিত্যিকের অসামান্য রচনাসামগ্রীর রকমফের সহজেই বোঝা বেশ কষ্টসাধ্য।

ছোটগল্প দিয়ে লেখালেখি শুরু করলেও পরবর্তীতে উপন্যাসও লেখেন। হাসান আজিজুল হকের উল্লেখযোগ্য ছোটগল্পের মধ্যে রয়েছে-‘সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য’, ১৯৬৪; ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’, ১৯৬৭; ‘জীবন ঘষে আগুন’, ১৯৭৩; ‘নামহীন গোত্রহীন’, ১৯৭৫; ‘পাতালে হাসপাতালে’, ১৯৮১; ‘নির্বাচিত গল্প’, ১৯৮৭; ‘আমরা অপেক্ষা করছি’, ১৯৮৮; ‘রাঢ়বঙ্গের গল্প’ ১৯৯১; ‘রোদে যাবো’ ১৯৯৫; ‘হাসান আজিজুল হকের শ্রেষ্ঠগল্প’, ১৯৯৫; ‘মা মেয়ের সংসার’, ১৯৯৭; ‘বিধবাদের কথা ও অন্যান্য গল্প’, ২০০৭ ইত্যাদি। তার লেখা উপন্যাসগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটির নাম: ‘আগুনপাখি’, ২০০৬; ‘সাবিত্রী উপাখ্যান’, ২০১৩; ‘শামুক’, ২০১৫। শিশুদের জন্য লিখেছেন ‘লালঘোড়া আমি’, (১৯৮৪ সালে প্রকাশিত কিশোর উপন্যাস); ‘ফুটবল থেকে সাবধান’, (১৯৯৮ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গল্প)। তার আত্মজীবনীমূলক-বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য: ‘ফিরে যাই ফিরে আসি’, (১ম অংশ, ২০০৯); ‘উঁকি দিয়ে দিগন্ত’, (২য় অংশ, ২০১১); ‘টান’, (২০১২); ‘লন্ডনের ডায়েরি’, (২০১৩); ‘এই পুরাতন আখরগুলি’, (৩য় অংশ, ২০১৪)।

তার লেখা ‘একাত্তর করতলে ছিন্ন মাথা’ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি অসাধারণ প্রামাণ্যচিত্র। ঘটনাগুলো পড়লেই খুলনা, যশোর, নড়াইল এলাকায় সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধের কিছু খ চিত্র খুঁজে পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধের ছোট ছোট ঘটনা এ বইয়ে অন্যভাবে পরিস্ফুটিত হয়েছে। তিনি নিজের দেখা ঘটনাগুলোই চমৎকারভাবে সাহিত্যিকের চোখ দিয়ে দেখেছেন এবং তা লিখেছেন। এ বইয়ের শুরুতে তিনি লিখেছেন, ‘আমার জানা ছিল না যে পানিতে ভাসিয়ে দিলে পুরুষের লাশ চিৎ হয়ে ভাসে আর নারীর লাশ ভাসে উপুড় হয়ে। মৃত্যুর পরে পানিতে এদের মধ্যে এইটুকুই তফাৎ। এই জ্ঞান আমি পাই ’৭১ সালের মার্চ মাসের একেবারে শেষে- ৩০ বা ২৯ তারিখে।’ বোঝা যায় একাত্তরের নিষ্ঠুরতা কতটা তার হৃদয়ে আঘাত হেনেছিল। এ বইটিতে ফুলতলার কলেজ ছাত্রী শান্তি দাস এবং রাজাকারদের হাতে ধৃত শ্রমিকনেতা রফিককে পাকবাহিনী কতটা নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল তার বিস্তারিত বিবরণও স্থান পেয়েছে।

ডিসেম্বরে পাকিস্তানিদের পরাজয় তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন। ছিলেন খুলনার দৌলতপুরে। সে সময় যশোর এলাকা ছেড়ে খুলনার দিকে পালিয়ে আসছে পাকসেনারা। হত্যাকারী পাকসেনাদের সম্পর্কে তিনি লিখেছেন- ‘সমস্ত যশোর এলাকা থেকে এটা যে পাকিস্তানি বাহিনীর পিছু হটে আসা দেখা তক্ষুণি বোঝার উপায় ছিল না। পালানোর সময় পাকিস্তানি বাহিনী ক্ষ্যাপা কুকুরের মতো আচরণ করতে পারে এটাও আমার আন্দাজ হয়নি। আদতে ওরা নয় মাস ধরে বাংলাদেশের ক্ষ্যাপা কুকুরই ছিল। মানুষ ছিল বলা খুব কঠিন। বরং পালানোর সময় হয়ে গিয়েছিল কোণঠাসা ইঁদুর। আমি প্রায় ৭ দিন ধরে এই নেংটি ইঁদুরদের দেখেছি। শিরোমনিতে যে শেষ যুদ্ধ হয়েছিল তাতে এদের থেঁতো হয়ে যাওয়া ইঁদুরের মতো ছিন্নভিন্ন লাশও দেখেছি।’ এই কয়েকটি লাইন পড়লেই বোঝা যায় কতটা তীক্ষè ছিল কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের চোখ।

হাসান আজিজুল হকের আত্মস্মৃতিমূলক লেখা ‘ফিরে যাই ফিরে আসি’ যেন জীবনের অসাধারণ এক প্রামাণ্যচিত্র। এ বইতে পরিবার ও সমাজের কথা তিনি বলে গেছেন, নিখুঁতভাবে। শৈশব, কৈশোরের স্মৃতিময় ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন চমৎকার কথামালায়। ‘ফিরে যাই ফিরে আসি’ প্রান্তে গ্রামবাংলার সেই সময়ের চিত্রগুলো পরিষ্কার বোঝা যায়। হাসান আজিজুল হক লিখেছেন, ‘মাঠে-ঘাটে গাঁয়ের মধ্যে ঘুরে বেড়ালে কোথা কোথা থেকে ভেসে আসে গন্ধ। পদ্মের গন্ধ, গোলাপের গন্ধ, ভোরবেলাকার আকাশের গন্ধ, করবীর গন্ধ, ধুতুরার গন্ধ, অকন্দের গন্ধ- শুঁকে শুঁকে শেষ পাই না। কতরকম গন্ধ, তিতকুটে গন্ধটাও ভালো- বিকট বিচ্ছিরি গন্ধও মন্দ কি?’ প্রকৃতির প্রতি তার যে অপার প্রেম ও ভালোলাগা তা আছে বইটির পাতায় পাতায়। বাড়ির আশপাশের গাছ-গাছালি, খালবিল, লতাপাতা সম্পর্কে তার নিপাট বর্ণনা মনে রাখার মতো। প্রকৃতির মাঝেই যে তার বেড়ে ওঠা সন্দেহ নেই। আসলেই তিনি ছিলেন প্রকৃতির সন্তান। তালগাছের কথা লিখতে গিয়ে বলেছেন, ‘বড়ো গাছের বড়ো বড়ো তাল টিনের চালে কতোকাল থেকে ধুম ধুম করে পড়ছে, চালে বসে গিয়েছে অনেকটা, ঢেউটিনের ঢেউ আর নেই। ছোট তালগাছের তাল ধুপ করে মাটিতে পড়ে। সবসময়ে বাড়ির লোকজন যাচ্ছে আসছে, কোনোদিন কারোর মাথায় পড়েনি। ওটা পয়মন্ত লক্ষী গাছ।’ শেষ লাইনটাই গাছের প্রতি তার অসাধারণ মমত্ব প্রকাশিত হয়েছে।

তার লেখা আরেকটি স্মৃতিগ্রন্থ- ‘উঁকি দিয়ে দিগন্ত’। এটি ‘ফিরে যাই ফিরে আসি’র স্মৃতিকথনের ধারাবাহিকতা। এটিও চমৎকার আত্মজৈবনিক এক আলেখ্য। এ বইটিতেও শৈশব, কৈশোরের দেখা স্মৃতির ভা ারকেই যেন তুলে ধরেছেন হাসান ভাই পরম মমতায়। শৈশব কৈশোরের ছোট ছোট গল্পগুলোকে তিনি কত না সুন্দরভাবে চিত্রায়িত করেছেন। শৈশব কেটেছে তার ঐ বাংলায়। কৈশোর এই বাংলায়। দুই বাংলার দুই ধারার জীবনধারা মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে তার স্মৃতিময় রচনায়। দুই ধর্মের মানুষের সামাজিক মেলামেশার মাধ্যমে গড়ে ওঠা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনুপুঙ্খ বিবরণ খুঁজে পাই তার আত্মজৈবনিক রচনাগুলোতে।

আগেই বলেছি, তার লেখালেখির সাহিত্যিক বিচার আমার পক্ষে করা সম্ভব নয়। শুধু এটুকু বলতে পারি, তিনি অন্য অনেকের চেয়ে ভিন্ন এক জীবন সংগ্রামের কথক। দেশভাগের মনস্তাত্ত্বিক চাপ তার লেখায়, বলায় অনুভব করা যায়। মুক্তিযুদ্ধের মৌল আকাক্সক্ষাও তার সাহিত্যে খুঁজে পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধটা আসলে যে ছিল এক জনযুদ্ধ। হাসান ভাইয়ের আত্মজৈবনিক লেখায় তা স্পষ্ট করে ধরা পড়ে। আমাদের সমাজ ও স্বদেশ যেসব টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে এগুচ্ছে তাও তার লেখায় অনুভব করা যায়। তিনি ছিলেন এক নিরন্তর আশাবাদী মানুষ।

মুক্তিযুদ্ধের মৌলচেতনা এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের নান্দনিক বৈশিষ্ট্য তার মনোজগতে গভীরভাবে দাগ কেটেছিল। তাই তো তার রচনায় মুক্তিযুদ্ধের আসল নায়ক কৃষক সন্তানদের আত্মদান ও বীরত্বের গৌরবের কথা এত স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। আর এই কৃষক সন্তানেরা লাখে লাখে মুক্তিযুদ্ধে অকাতরে প্রাণ দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন একজনের ডাকেই। তিনি বঙ্গবন্ধু। তাই বঙ্গবন্ধুর নান্দনিক ভাবনা বিষয়ে যখন এই করোনাকালেও তার কথা শোনার জন্য জুমে যুক্ত হই তখন তিনি বলতে থাকেন পরম উৎসাহে। অথচ তার শরীর মোটেও ভালো ছিল না সেদিন। কিন্তু প্রসঙ্গ যে বঙ্গবন্ধু। যেন নতুন প্রাণ পেয়েছিলেন তিনি সেদিন। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্ব বিষয়ে বলতে গিয়ে সেদিন তিনি উচ্চারণ করেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একজন উত্তুঙ্গ পর্বতশৃঙ্গসম মানুষ ছিলেন। আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা এমন একজন মানুষকে নেতা হিসেবে পেয়েছিলাম। তাই স্বাধীনতা সম্ভব হয়েছিল।’ আমার আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান যে, ‘বাচন ভঙ্গিতে, ব্যক্তিত্বে, চেহারায় সব মিলিয়েই তিনি এক অসাধারণ নেতা। এমনটা বিশ্বের বড় বড় নেতাদের মধ্যেও আমরা খুব কম দেখেছি।’ কথার জাদুকর হাসান আজিজুল হক এমন আরও অনেক কথাই বলেছেন বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের নান্দনিক বৈশিষ্ট্য ও নেতৃত্বের ধরন নিয়ে। পুরো সাক্ষাৎকারটি অচিরেই পাওয়া যাবে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিতব্য আমার ‘নান্দনিক বঙ্গবন্ধু’ বইটিতে। দুঃখ এই যে, তিনি নিজ চোখে দেখে যেতে পারলেন না তার সাক্ষাৎকারসংবলিত বইটি। অনুপ্রেরণা সঞ্চারী এ অসাধারণ সৃষ্টিশীল মানুষকে আমি নিবিড়ভাবে জানতাম সেটিই আমার জন্য বড় পাওয়া। প্রতিটি দিনই তাকে অনুভব করব হৃদয়ে, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়। তার আত্মার নিবিড় শান্তি কামনা করছি।

সর্বশেষ খবর