শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
কবিতা

এবং একটি ছবি

শেখ মফিজুর রহমান

চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা অশ্রু ঝরে পড়লো!

হঠাৎ বেড়াতে গেলাম মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে।

চারিপাশ দেখছি ঘুরে ঘুরে

পরিবেশ, স্থাপনা এবং উপস্থাপনায়

আমি মুগ্ধ, বিমোহিত।

ঘুরতে ঘুরতে চলে এলাম

নির্যাতিতা নারীদের কর্নারে।

পায়ে যেন পাথর বাঁধা, নড়তে পারছি না।

একটি ছবি- চুল দিয়ে একজন নারীর

সমস্ত মুখ ঢাকা

হাত দুটো মাথায় ঠেকানো

পৃথিবীর সব লজ্জা আর অপমান যেন

সেই দুই হাতে বেড়ি পরিয়ে দিয়েছে!

এই মুখ দেখতে না পাওয়া ছবিই যেন

বলছে একটি অলিখিত ইতিহাস!

পুরুষ মানুষ, কাঁদতে নেই!

কিন্তু সমস্ত নিয়ম রেওয়াজের

তোয়াক্কা না করে

ঝরে পড়লো তপ্ত অশ্রু চিবুক বেয়ে।

একটি বার ইচ্ছাও হলো না

সে অশ্রু মুছে ফেলতে!

 

আজ বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে

আমার চোখে হঠাৎ করে

ভেসে উঠলো সেই ছবি

সে যেন বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাস!

সে যেন বিজয়ের পতাকার লাল রক্তের ইতিহাস!

আজ যখন দেখি জন্ম ইতিহাস ভুলে

একদল শকুনেরা উড়াউড়ি করে

স্বাধীন বাংলাদেশের অসীম আকাশে

আমার ইচ্ছা করে টুঁটি চেপে ধরতে,

চোখের পর্দা ছিঁড়ে দেখিয়ে দিতে

কার রক্তে, কার সম্মানে পেয়েছি

এই স্বাধীন বাংলাদেশ!

স্বাধীন বাংলার সম্মান নিয়ে

যে ছিনিমিনি খেলে, সওদা করতে চায়

দুর্নীতি আর অন্যায় দিয়ে ভরে দিতে চায়

সে সাবধান আর সতর্ক থাকুক

যে মা লজ্জায় চুল দিয়ে মুখ ঢেকেছিল

সে মায়ের জরায়ুর সন্তান না হোক

সে মায়ের রক্ত ঝরেছিলো যে মাটিতে

সেই মাটির সন্তানেরা আজো জীবিত আছে।

সেই সন্তানেরা মা আর মাটির সম্মান নিয়ে

সওদা করতে দেবে না

কিছুতেই না, কখনোই না।

প্রয়োজনে আবার যুদ্ধে যাবো

দেশমাতৃকাকে শুদ্ধ করার যুদ্ধে!

সুবিধাবাদী, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে।

কিন্তু আমার মায়ের মুখ আর লজ্জায়

অপমানে ঢাকতে দেব না।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর