শনিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

খেলনা দেখিয়ে শত কোটি টাকা!

খেলনা দেখিয়ে শত কোটি টাকা!
ছোট্ট রায়ানের বয়স মাত্র ৮ বছর।
ইউটিউব থেকে রায়ানের আয় ১৭৬ কোটি টাকা।
ইউটিউবে খেলনা দেখিয়ে পরিণত হয়েছে সবচেয়ে বেশি আয় করা খুদে তারকায়।

 

ছোট্ট রায়ানের জন্য তার বাবা-মা খেলনা কিনে নিয়ে আসতেন। আর সেই খেলনা দিয়ে খেলত রায়ান। হঠাৎ  ২০১৫ সালে শিশু রায়ানকে তার বাবা-মা ‘রায়ান টয়স রিভিউ’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে দেন। উদ্দেশ্য রায়ান তার খেলনাগুলো দিয়ে কীভাবে খেলা করে তা তার বন্ধুদের দেখাবে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, খেলাচ্ছলে এ শিশুটিই আজকের খুদে ইউটিউবার এবং ইউটিউব থেকে সে আয় করে নিয়েছে ১৭৬ কোটি টাকা। অনেকটা শখ করেই রায়ানের খেলনার ওপর রিভিউ দেওয়া ভিডিওগুলো প্রকাশ করা হয়। পরে তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। পরবর্তীতে রায়ানের ভক্তদের কথা মাথায় রেখে ‘রায়ান টয়স রিভিউ’ নামে ইউটিউব চ্যানেলটি খোলা হয়। যেখানে রায়ানের বাবা-মা প্রায় প্রতিদিনই রায়ানের নিত্যনতুন ভিডিও প্রকাশ করেন। চ্যানেলটি শুধু ৮ বছর বয়সী রায়ান, তার বাবা-মা এবং তার যমজ বোনকে দেখায়।

 

সম্প্র্রতি ফোর্বস ম্যাগাজিন ইউটিউব স্টার হিসেবে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে ৮ নম্বর থেকে ১ নম্বরে উঠে এসেছে রায়ানের চ্যানেল ‘রায়ান টয়স রিভিউ’। ইউটিউব থেকে বিশ্বের সর্বোচ্চ উপার্জনকারী খুদে তারকা বনে যান প্রাথমিক স্কুলের এই শিশু। ২০১৭ সালের ১ জুন থেকে ২০১৮ সালের ১ জুন পর্যন্ত ইউটিউব হতে রায়ান আয় করে ২২ মিলিয়িন ডলার বা ১৭৬ কোটি টাকা। ফোর্বস ম্যাগাজিন ধারণা করছে, জুন মাস নাগাদ এই শিশুটির ইউটিউব চ্যানেল ‘রায়ান টয়স রিভিউ’ টপকে যাবে এখনকার ইউটিউবের সেরা তারকা জ্যাক পলকেও। ফোর্বস ম্যাগাজিনটির মতে, রায়ানের চ্যানেলে ১৭ মিলিয়ন ফলোয়ার রয়েছে এবং ২৬ বিলিয়ন মতামত প্রদানকারী প্রদর্শনকারী রয়েছে।

 

রহস্যময় বালক

ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়া পরিচিত মুখগুলোর একটি রায়ান। কিন্তু রহস্যময় এই শিশুটিকে নিয়ে ঘনীভূত হচ্ছে রহস্যের ধূম্র্রজাল। তার নামের শেষাংশ কী, কোথায় থাকে, কেউ জানে না। উইকিপিডিয়ার মতে, রায়ান ২০১০ সালের ৬ অক্টোবর মার্কিন আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করে। এর বেশি কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি খুদে এই তারকা সম্পর্কে। এ ছাড়া রায়ানের বাবা-মা মাত্র অল্প কয়েকবার গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তেমনি এক সাক্ষাৎকারে রায়ানের মা দাবি করেছেন যে, যখন তার ছেলের বয়স মাত্র তিন বছর, তখন এই ইউটিউব চ্যানেল করার আইডিয়া রায়ানই দিয়েছিল। তবে রায়ানের মা নিজেও তার নিজের পরিচয় প্রকাশ করেননি। ইউটিউবে রায়ানের প্রথম ভিডিওটি ছিল প্লাস্টিকের ডিম ভেঙে সেখান থেকে খেলনা বের করা। চ্যানেলটির ‘হিউজ এগস সারপ্রাইজ টয়স চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামের ভিডিওটি নভেম্বর ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৬০ কোটি বার দেখা হয়েছে, যা সর্বাধিক দেখা ইউটিউব ভিডিওর তালিকায় ৩৮তম স্থানে রয়েছে। ইউটিউবের এই চ্যানেলটির সাবস্ক্রাইবার প্রায় এক কোটি মানুষ।

 

সফল খুদে ইউটিউবার

খুব কম সময়ের মধ্যে ভাইরাল হওয়া রায়ান একজন সফল খুদে ইউটিউবার। নিত্যনতুন খেলনা নিয়ে সে যেভাবে খেলে, লোকে তা পছন্দ করে। রায়ান শুরুতে ইভানটিউবএইচডি-চ্যানেলে খেলা দেখত। এক দিন রায়ান তার মাকে জিজ্ঞেস করল, কেন সে ইউটিউবে একই কাজ করছে না। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের মার্চ থেকে রায়ান ইউটিউব ভিডিও তৈরি করতে শুরু করে। রায়ানের মা ছেলের ইউটিউব চ্যানেলে পুরো সময় কাজ করার জন্য রসায়ন শিক্ষিকার চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৭ সালে, রায়ানের বাবা-মা পকেট.ওয়াচ-এর সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। পকেট.ওয়াচ রায়ানের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য মার্কেটিং এবং পণ্যদ্রব্য কেনাবেচার কাজটি করে। চ্যানেলটির এক রিভিউতে বলা হচ্ছে, ‘রায়ান যেভাবে তার খেলনার প্যাকেট খোলে, তখন সেটি একটি নাটকীয় পরিবেশ তৈরি করে। তার ভিডিওর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তার স্বতঃস্ফূর্ততা।

সর্বশেষ খবর