শনিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

আফ্রিকান দুই শিশু খুলনায় বাংলা শিখছে

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

আফ্রিকান দুই শিশু খুলনায় বাংলা শিখছে
কেয়ারা ও কেশনের বাবা সাকিল হোসেন খুলনা মহানগরীর গোবরচাকা এলাকার বাসিন্দা। ১০ বছর তিনি আফ্রিকার একটি বড় সুপার মার্কেটে কাজ করতেন। সেখানেই পরিচয় হয় কেপটাউনের বাসিন্দা রোকাইয়ার সঙ্গে। রোকাইয়া ইংরেজিতে ভালো। এক সময় সাকিল-রোকাইয়া বিয়ে করেন। এই দম্পতির সন্তান কেয়ারা ও কেশন...

 

পাঁচ বছর বয়সী কেয়ারা ও কেশন জন্মসূত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক। খুলনার মেহমানে আলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সহপাঠী শিশুদের সঙ্গে তারা শিখছেÑ ‘অ’ তে অজগর, ‘আ’ তে আম। আফ্রিকান ভাষার পাশাপাশি ছোট্ট ছোট্ট শব্দে ইংরেজি বলতে পারে শিশু দুটি। তাই, ওদের ব্যাপারে আগ্রহের শেষ নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বি এম শফিউর রহমান জানান, এ মাসের শুরুতে এদের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে ভর্তি করেছেন তাদের বাবা-মা। তারা ক্লাসে তেমন বাংলা বলতে পারে না, তবে দ্রুত শিখছে। অন্য শিশুদের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। জানা যায়, কেয়ারা ও কেশনের বাবা সাকিল হোসেন খুলনা মহানগরীর গোবরচাকা এলাকার বাসিন্দা। ১০ বছর তিনি আফ্রিকার একটি বড় সুপার মার্কেটে কাজ করতেন। সেখানেই পরিচয় হয় কেপটাউনের বাসিন্দা রোকাইয়ার সঙ্গে। রোকাইয়া ইংরেজিতে ভালো। একপর্যায়ে সাকিল-রোকাইয়ার বিয়ে হয়। এই দম্পতির সন্তান কেয়ারা ও কেশন। বাংলা ও ইংরেজি মিশিয়ে রোকাইয়া জানান, গত নভেম্বরে তারা বাংলাদেশে এসেছেন। এখানে স্বামী ও তার পরিবারের সঙ্গে থাকতে ভালো লাগছে। তিনি বলেন, ‘মাই হাজবেন্ট’স মাদার ইজ ভেরি ওল্ড অ্যান্ড সিক। সো উই ডিসাইডেড টু স্টে হেয়ার। অনলি প্রবলেম উই ডোন্ট আন্ডারস্ট্যান্ড বাংলা। বাট উই লার্নিং বাংলা। দ্যাট ইজ হোয়াই উই কেম টু বাংলাদেশি স্কুল টু লার্ন মোর বাংলা। স্কুলস টিচার, চাইল্ড অ্যান্ড প্যারেন্টস আর সো নাইস অ্যান্ড হেল্পফুল।’ মায়ের পাশাপাশি শিশু কেয়ারা ও কেশনও স্কুলে আসে। তাদের ভালো লাগার কথা জানায়। এদিকে স্কুলের অভিভাবকরা এটাকে নিয়েছেন ইতিবাচক হিসেবে। তারা আগ্রহের সঙ্গে ইংরেজি ও বাংলায় শিশু দুটি ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছেন। সদর থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, শিশু দুটিকে ঘিরে স্কুলে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বাঙালি শিশুরা যেমন ইংরেজি শিখছে, তেমনি বাঙালি শিশুদের কাছ থেকে তারা বাংলা শিখছে। তিনি বলেন, তাদের অভিভাবকরা স্কুলের লেখাপড়ার মান যাচাই করে এখানে ভর্তি করেছেন। এটা আমাদের জন্য উৎসাহজনক। একই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য মাইলফলক।

সর্বশেষ খবর