শিরোনাম
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
মাগুরার ফয়সালের

বিশেই গিনেসে দুই রেকর্ড

রাশেদ খান, মাগুরা

বিশেই গিনেসে দুই রেকর্ড

মাত্র ৬০ সেকেন্ডে ১৩৪ বার ফুটবল আর্মরোলিং করে গিনেস বুকে প্রথমবারের মতো রেকর্ড গড়তে সক্ষম হন। এর আগে এক মিনিটে ১২৭ বার বল ঘুরিয়ে সে রেকর্ডের মালিক ছিলেন রাশিয়ার ডেভিড র। পরবর্তীতে তিনি ফুটবল রেখে বাস্কেট বল আর্মরোলিংয়ের অনুশীলন শুরু করেন। তিনি ইংল্যান্ডের মি. টম-এর এক মিনিটে ১২১ বারের রেকর্ড ভেঙে একই সময়ে দুই হাতের মধ্যে ১৪৪ বার বাস্কেট বল ঘুরিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো গিনেস বুকে নাম লেখান।

 

ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি ঝোক ছিল। ফুটবল, ক্রিকেট দুটিই খেলেছেন মোটামুটিভাবে। তিনি খেলাকে কেন্দ্র করেই এমন কিছু করতে চান যার মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে তার নাম ছড়িয়ে পড়বে। যে কারণে লেখাপড়ার পাশাপাশি ফ্রি স্টাইলার ফুটবলার হওয়ার চিন্তা তার মাথায় আসে। এ লক্ষ্যে তিনি ২০১৭ সালের মাঝামাঝি বাড়ির আঙ্গিনা ও স্থানীয় মাঠে ফুটবল নিয়ে বিভিন্ন কলাকৌশল আয়ত্তে আনতে অনুশীলন শুরু করেন। বলতে গেলে পড়ালেখা শিকেয় তুলে বাবা-মায়ের বকুনি খেয়েও দিনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে মাত্র এক বছরের মাথায় ২০১৮ সালের আগস্ট মাসেই সাফল্য পেয়ে যান। মাত্র ৬০ সেকেন্ডে ১৩৪ বার ফুটবল আর্মরোলিং করে গিনেস বুকে প্রথমবারের মতো রেকর্ড গড়তে সক্ষম হন। এর আগে এক মিনিটে ১২৭ বার বল ঘুরিয়ে সে রেকর্ডের মালিক ছিলেন রাশিয়ার ডেভিড র। পরবর্তীতে তিনি ফুটবল রেখে বাস্কেট বল আর্মরোলিংয়ের অনুশীলন শুরু করেন। তিনি ইংল্যান্ডের মি. টম-এর এক মিনিটে ১২১ বারের রেকর্ড ভেঙে একই সময়ে দুই হাতের মধ্যে ১৪৪ বার বাস্কেট বল ঘুরিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো গিনেস বুকে নাম লেখান। তার এ সাফল্য নিজ জেলার পাশাপাশি সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। যা তাকে আরও নতুন-নতুন রেকর্ড গড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করে তুলেছে। নতুন রেকর্ড গড়ার জন্য ফয়সাল আবার ফুটবল নিয়ে নানা অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু নতুন রেকর্ড গড়াই নয়, ভবিষ্যতে তিনি সব ধরনের ফ্রি স্টাইল ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ইচ্ছা পোষণ করছেন আন্তর্জাতিক ফ্রি স্টাইল ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করে দেশের জন্য সাফল্য বয়ে আনতে। এ লক্ষ্যে তিনি কঠোর অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। মাগুরা সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য সোহেল রানার পুত্র ২০ বছর বয়সী ফয়সাল মাগুরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মেকাটনিক্স বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র। দুই-ভাইবোনের মধ্যে ফয়সাল ছোট। একমাত্র বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মা-বাবা ঢাকায় বসবাস করেন। অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য বাবা বর্তমানে ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। যে কারণে গ্রামের বাড়িতে ফয়সাল একাই বসবাস করেন। মাগুরা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করার পর মাগুরা পলিটেকনিকে ভর্তি হন। বর্তমানে মাগুরা পলিটেকনিকের মেকাটনিক্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। বিগত দিনে ওয়ালটনের পৃষ্ঠপোষকতায় রেকর্ড গড়তে সক্ষম হয়েছেন। আগামীতেও  এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে সব প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে নতুন নতুন রেকর্ড গড়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারবেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এ লক্ষ্যে সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বা ক্রীড়া অধিদফতরের সহযোগিতা কামনা করেন।

মাগুরার অন্যতম ক্রীড়া সংগঠক এবং ইয়াং স্টার ফুটবল একাডেমির পরিচালক ও প্রশিক্ষক সৈয়দ বাকির আনজাম বর্কি বলেন, মাগুরার সন্তান ফয়সাল দু-দুবার ফুটবল ও বাস্কেট বলে আর্মরোলিং করে গিনেস বুকে নাম লিখিয়ে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। সেই সঙ্গে ছোট্ট একটি জেলা মাগুরাকেও পরিচিত করে তুলেছে তার এ ক্রীড়া নৈপুণ্যের মাধ্যমে। ক্রীড়ায় সাফল্যের জন্য প্রথম দরকার শারীরিক সক্ষমতা, এরপর অধ্যবসয়ের পাশাপাশি মেধার সমন্বয় ঘটানো। যা সে অল্প সময়ের মধ্যেই করতে পেরেছে। নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে অনুশীলন চালিয়ে গেলে ভবিষ্যতে সে বাংলাদেশের জন্য আরও অনেক রেকর্ড বয়ে আনতে সক্ষম হবে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হাজী মকবুল হোসেন বলেন, ফয়সাল একাধিকবার গিনেস বুকে রেকর্ড গড়ে মাগুরার মানুষকে সম্মানীত করার পাশাপাশি বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের স্থান আরও উপরে তুলেছে। আগামী দিনের পথ চলায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধ্যের মধ্যে তাকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর