বনের গহিনে কত কি!
রাতারগুলে শীতে জল শুকিয়ে যায়। জুলাই থেকে অক্টোবর রাতারগুল ভ্রমণের জন্য দারুণ সময়। জলে কোমর ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বনের গাছগুলো দেখতে পর্যটকরা ভিড় জমায় বেশি বর্ষা মৌসুমে। তখন অবশ্য ডিঙ্গি নৌকায় করে ঘুরতে হয়। সিলেট শহর থেকে রাতারগুলের দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। জলে জঙ্গলের রাতারগুল গোয়াইনঘাট উপজেলায়। রাতারগুল একটি প্রাকৃতিক বন। এখানে আছে হিজল, বরুণ, করচ আর মুতা-কদম, জালিবেত, অর্জুনসহ জলসহিষ্ণু প্রায় ২৫ প্রজাতির গাছ। আছে নানান প্রজাতির পাখি। মাছরাঙা, বিভিন্ন প্রজাতির বক, ঘুঘু, ফিঙে, বালিহাঁস, পানকৌড়ির কিচিরমিচিরে বন থাকে মুখর। দেখা মিলবে বানর, উদ্বিড়াল, কাঠবিড়ালি, মেছোবাঘ ইত্যাদি। নৌকা নিয়ে যতই গহিনে যাওয়া যাবে ততই বাড়বে অরণ্যের মৌনতা। আকাশ ঢেকে যাবে গাছে। বর্ষায় বনে জোঁকের প্রকোপ বেশি থাকে। তাই সতর্ক থাকবেন। যারা সাঁতার জানেন না, সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট রাখতে পারেন। বনে ঢুকে পানিতে হাত না দেওয়াই ভালো। রাতারগুলে সকালে গিয়ে বিকালে চলে আসা যায়। ওখানে থাকা-খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই সঙ্গে করে শুকনো খাবার, পানি নিয়ে যাবেন। পানির বোতল, খাবার প্যাকেট সঙ্গে করে নিয়ে আসুন, প্রকৃতির যতœ নিন। থাকার জন্য সিলেট শহরে অনেক হোটেল পাবেন। পছন্দমতো হোটেল বাছাই করতে পারবেন। শহরের বাইরে বিমানবন্দর সড়কে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের পর্যটন মোটেল।
কীভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে প্রথমে যেতে হবে সিলেট শহর। সড়ক, রেল ও আকাশ পথে ঢাকা থেকে সরাসরি সিলেট আসতে পারেন। এ ছাড়া ঢাকার ফকিরাপুল, কমলাপুর, সায়েদাবাদ প্রভৃতি জায়গা থেকে এসি ও নন-এসি বাস সিলেটে যায়। ঢাকা থেকে পাবেন আন্তনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, উপবন এক্সপ্রেস। সিলেট শহরের পাশেই খাদিম চা বাগান আর খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানের ভিতর দিয়ে খুব অল্প সময়েই এই পথ ধরে রাতারগুল পৌঁছানো সম্ভব। সিএনজি অটোরিকশা বা জিপ নিয়ে আসতে হবে শ্রীঙ্গি ব্রিজ। শ্রীঙ্গি ব্রিজ থেকে রাতারগুল জঙ্গলে ঢুকতে হবে জেলেদের ছোট নৌকায়।