পাহাড়ের নারীরাও রূপচর্চায় পিছিয়ে নেই। তিন পার্বত্য জেলায় প্রায় শতাধিক বিউটি পারলার রয়েছে। এসব পারলারে নিয়মিত রূপচর্চার কাজে পাহাড়ের নারীরা ভিড় জমায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি এ পার্বত্য অঞ্চল। এখানে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর বসবাস। পাহাড়ি-বাঙালি সবার সম্মিলিত বসবাস এখানে। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, খেয়া, ম্রো, চাক, তংচঙ্গ্যা, খুমি, লুসাই, বম, পাংখোয়াসহ বিভিন্ন উপজাতির বসবাস রয়েছে পাহাড়ে। এসব জনগোষ্ঠীর নারীদের যেমন নিজস্ব পোশাক আশাক রয়েছে, তেমনি নিজেদের আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে নিজেরা এখন বিউটি পারলার সৃষ্টি করে, নতুন আঙ্গিকে আধুনিকতার ছোঁয়ায় রূপচর্চায় মেতে উঠেছে। এখানকার বিউটি পারলারের নামগুলো ভিন্ন রকমে নিজস্ব ভাষায় রাখা হয়েছে। যেমন খাগড়াছড়ি সদরে পানখাইয়া সড়কে অনেক বিউটি পারলার রয়েছে। লা-লা (মারমা ভাষায়) অর্থ হচ্ছে সুন্দর। এই পারলারের মালিক বিউটিশিয়ান হ্লামে রাখাইন জানান, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ পাহাড়ের নারীদের রূপচর্চার সেবা দিয়ে আসছেন। সমতলের নারীদের চেয়েও পাহাড়ের নারীরা নিজেদের রূপচর্চার প্রতি অনেক বেশি সচেতন। তারা পারলারে বিঝু, বৈসু, সাংগ্রাইং উৎসবে যেমন সাজতে পারলারে আসে, তেমনি 
পাহাড়ে বসবাসরত বাঙালি নারীরাও ঈদসহ নানা উৎসবে রূপচর্চায় পারলারে ভিড় জমায়। এছাড়াও নিয়মিত নারীরা চুল বিনি পাম, চুল সিল্কি পাম, কারলি, হাইলেস, চুলের ট্রিটমেন্ট, নাক-কান ফোঁড়া, মেহেদি আলপনা, ব্রান ট্রিটমেন্ট, নখে ফুল আঁকানো, বউ সাজ, ওয়াটারপ্রুফ সাজ, ওয়াটার সাইনি মেকাপ, গোল্ডেন সাজ, হোয়াইড সাজ, মিডিয়াম সাজ, পার্টি ও অ্যানগেজমেন্ট সাজ, চুল কাটা, চুলে স্পাসহ নানা সাজে সাজতে বিউটি পারলারে ভিড় জমায়। পাহাড়ের নারীরা নিজেরা এখন বিউটি পারলারের দোকান দিয়ে, তাতে রূপচর্চার নানা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। খাগড়াছড়ি য়ংড বৌদ্ধ বিহার এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি বিউটি পারলার নিউলুক বিউটি পারলারের মালিক বিউটিশিয়ান আনুচিং মারমা জানান, তিনি দীর্ঘ দশ বছর ধরে কাজ করে চলেছেন রূপচর্চায়। পাশাপাশি পাহাড়ের নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিউটিশিয়ানও তৈরি করছেন তিনি। এখানে বউ সাজে দুই থেকে তিন হাজার টাকা নেন বলে তিনি জানান। পাহাড়ের বিউটিশিয়ান হিসেবে পারলার দিয়ে নারীরা অর্থনৈতিকভাবে যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি এখানকার আধুনিকতার রূপচর্চার দিকে ঝোঁকে পড়েছে অনেক পাহাড়ি নারী।
