শিরোনাম
শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
তারুণ্য

সাইকেলে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া

সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন, কিশোরগঞ্জ

সাইকেলে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া

সাইক্লিংয়ের সঙ্গে ভ্রমণটা মিশালে একসঙ্গে দুটি শখ পূরণ হয়। আর সেই উদ্দেশ্যটা যদি হয় কোনো ভালো কাজে, জনকল্যাণে তাহলে সেটা নিজের জন্য তো বটেই, সমাজের জন্যও কল্যাণ বয়ে আনে। শখের বশে সাইক্লিং এবং সাইক্লিংয়ে ঘোরাঘুরি থেকে ভালো কিছু করার অভিপ্রায় জাগে দুই তরুণের। সেই অভিপ্রায় নিয়েই তারা সাইক্লিংয়ের মাধ্যমে ঘুরেছেন তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ। রক্তদানকে উৎসাহিত করার লক্ষ্য নিয়েই শুরু হয় তাদের অভিযাত্রা। এর পাশাপাশি মাদকমুক্ত সমাজ গড়া এবং পরিবেশবান্ধব হিসেবে সাইকেল চালানোর ওপরও প্রচারণা চালান তারা। কিশোরগঞ্জের মোকাম্মেল হক হিমেল ও নরসিংদীর আতিকুল ইসলাম লিমন। হিমেল কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের খামা গ্রামের কৃষক মোস্তফা কামালের ছেলে এবং পাকুন্দিয়া সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আর আতিক নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিনের ছেলে এবং কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে এবার অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছেন। ফেসবুকে তাদের পরিচয়। এ পরিচয়ের সূত্র ধরে হিমেলের আমন্ত্রণে আতিক একদিন কিশোরগঞ্জে আসেন। তারা দুজন ঘুরে বেড়ান কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা সদরের হাওরে। সেই থেকে তাদের বন্ধুত্ব।

মোকাম্মেল হক আতিকের শখ ছিল সাইকেল চালিয়ে এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করা। এভাবেই সাইক্লিংয়ের প্রতি তার আগ্রহটা বেড়ে যায়। আগ্রহ থেকেই সাইকেল নিয়ে আশপাশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরতে থাকেন তিনি। প্রথমে একা থাকলেও আস্তে আস্তে অনেকেই তার সঙ্গী হতে থাকেন। একপর্যায়ে এগারসিন্দুর সাইকেল রাইডার্স গ্রুপটি তৈরি হয়ে যায়। ঘুরতে ঘুরতে তাদের নিজেদের মাঝে চিন্তা ও ভাব বিনিময় হতে থাকে। এমনি করেই সচেতনতামূলক কাজের প্রতি তাদের আগ্রহ দেখা দেয়। তারা জানান, সাইক্লিং করছি যত, দেশের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হচ্ছে তত। সাইক্লিং করতে গিয়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে তাদের। তারা দেখেছেন, বর্তমান সময়ে অনেক তরুণ-তরুণী মাদকসহ নানা বিকৃত নেশায় মত্ত। তাদের অনেকেই ইন্টারনেট ও ফেসবুকে কাটিয়ে দিচ্ছে অনেক মূল্যবান সময়। যা ভবিষ্যতের জন্য এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে বলে তাদের অভিমত। তাদের মতে, সাইক্লিং করলে শরীর যেমন সুস্থ থাকে, তেমনি মনটাও ভালো থাকে। শরীর ও মন ভালো থাকলে দেশের প্রতি দেশের মানুষের প্রতি মমত্ববোধ জাগ্রত হয়। এতে করে সমাজে অপরাধপ্রবণতা কমে আসবে। সাইকেল একটি পরিবেশবান্ধব যান। সাইকেলে পরিবেশের ওপর কখনো বিরূপ প্রভাব পড়ে না। পরিবেশকে দুষণমুক্ত রাখতে সাইক্লিংয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। হিমেল ও আতিক সবসময় মানুষের পাশে থেকে সচেতনতামূলক কাজ করে যেতে খুবই আগ্রহী। এ চিন্তা থেকেই তাদের ভিন্নধর্মী এ আয়োজন বলে তারা জানান। প্রচারণায় তারা প্রধানত ‘রক্ত দিন, জীবন বাঁচান’ এ স্লোগানকেই তারা প্রাধান্য দেন। এ কাজে তারা সাইক্লিংকেই বেছে নেন। এ স্লোগানে তারা তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সাইকেলে ‘ক্রস কান্ট্রি রাইড’ দেন। হিমেল কিশোরগঞ্জ থেকে ৫ জুলাই সকালে সাইকেল নিয়ে বাসে করে তারা ঢাকায় যান। আর নরসিংদী থেকে একইভাবে বাসে ঢাকায় যান লিমন। পরে দুজন গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে সন্ধ্যা ৬টার বাসে তেঁতুলিয়ার উদ্দেশে রওনা হন তারা। ৬ জুলাই সকাল ৭টায় তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট থেকে যাত্রা শুরু করেন তারা।

সর্বশেষ খবর