শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
বিস্ময়

আগামীর পৃথিবী প্রক্সিমা বি

আগামীর পৃথিবী প্রক্সিমা বি

সৌরজগৎ নিয়ে মানুষের  কৌতূহলের শেষ নেই। অনেক আগে থেকেই চলছে গবেষণা। সৌরম-লের হ্যাবিটেবল জোনে তিনটি গ্রহ রয়েছে। শুক্র, পৃথিবী আর মঙ্গল। শুক্র গ্রহটি হ্যাবিটেবল জোনের অনেকটাই ভিতরে এবং মঙ্গল ওই জোনের বাইরের দিকে। পৃথিবীটাই রয়েছে হ্যাবিটেবল জোনের ঠিক জায়গায়। নতুন আবিষ্কৃত এই ভিন গ্রহটিও রয়েছে তার নক্ষত্রের হ্যাবিটেবল জোনে। গ্রহটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘প্রক্সিমা  সেনটাওরি-বি’ ও পৃথিবীর খুব কাছাকাছি আলফা সেনটাওরি  সৌরজগতের পাথুরে গ্রহ। প্রক্সিমা  সেনটাওরি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকা অনেকটাই পৃথিবীর মতো এ গ্রহটি সৌরজগৎ থেকে মাত্র ৪.২৪ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞানীরা গ্রহটি নিয়ে আশায় বুকও বেঁধেছেন এবং গ্রহটিকে তারা ‘পাশের প্রতিবেশী’ বলে দাবি করছেন। ভরের দিক  থেকেও ‘প্রক্সিমা সেনটাওরি বি’ পৃথিবীর খুব কাছাকাছি এবং অনেকটাই পৃথিবীর মতো দেখতে। গ্রহটি সৌরম-লে যাকে ঘিরে পাক মারছে, সেই নক্ষত্র প্রক্সিমা সেনটাওরি আমাদের সূর্যের তাপের মতো অতটা প্রস্ফুটিত নয়। বরং তা অনেকটাই নিভু নিভু আঁচের উনুন। আমাদের সূর্যের মতো সেই ‘উনুনে’র  চেহারাটাও নয় খুব বড় মাপের।  জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় বামন আকৃতির এই নক্ষত্রটিকে ‘রেড ডোয়ার্ফ স্টার’ কিংবা লাল বামন নক্ষত্র বলা হয়। ফলে, একে পদক্ষিণ করতে গিয়ে সদ্য আবিষ্কৃত ভিন গ্রহটির পুড়ে খাক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। পানি যেহেতু জীবনের অন্য নাম, তাই এই ব্রহ্মা-ের অন্য কোথাও প্রাণ খোঁজার যাত্রাপথে প্রথম স্টপেজটা হতে চলেছে এই প্রক্সিমা সেনটাওরি-বি গ্রহটি। মহাকাশের এই মুল্লুকে প্রাণ খুঁজতে প্রথমেই এই ভিন গ্রহে থামতে হবে। কারণ, গ্রহটি আমাদের সবচেয়ে কাছে। যার মানে, সর্বাধুনিক মহাকাশযানের গতিবেগ যা, তাতে আজ যাত্রা শুরু করলে তা প্রক্সিমা সেনটাওরি-বি ভিন গ্রহে পৌঁছবে ৭০ হাজার বছর পর। তবে আগামী দিনে মহাকাশযান চলবে  লেজার রশ্মির তেজে। ফলে তা হয়ে যাবে অনেক দ্রুতগতির। তাই প্রাণের সন্ধানে করা অভিযান শুরু করতে প্রক্সিমা সেনটাওরি-বি গ্রহে পৌঁছানো হবে সহজ।’

সম্প্রতি নাসা নতুন একটি মহাকাশযান তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন যার মাধ্যমে মাত্র ২০ বছরেই প্রাণের সন্ধানে পৌঁছে যাওয়া যাবে এ গ্রহে। লেজারের মাধ্যমে একে আলোর ২০% গতিতে ত্বরান্বিত করা সম্ভব (ঘণ্টায় ১৩৪.১২ মিলিয়ন মাইল)। এই গতিতে চললে প্রোবটি ২০-২৫ বছরেই পৌঁছে যাবে প্রক্সিমা সেনটাওরি-বি তে। সেখান থেকে পৃথিবীতে সিগনাল আসতে সময় লাগবে ৪.৩ বছর। এ প্রজেক্টটির  পেছনে খরচ হবে ১০ বিলিয়ন ডলার। মহাকাশযানটি তৈরিতে  লেগে যাবে ২০-৩০ বছরের মতো। অর্থাৎ সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির প্রোবটিও প্রস্তুত হতে ও গ্রহটিতে পৌঁছতে মোট সময় লাগবে ৫৫ বছরের মতো অর্থাৎ প্রায় ২০৭০ সাল। কী আছে ওখানে? কল্পনা করতে ভালো লাগছিল যে, হয়তো মিটমিট করে জ্বলতে থাকা ওই তারকারাজির মধ্যেই কোনো একটি গ্রহে বসে কেউ একজন আমাদের সূর্যের দিকে তাকিয়েও ঠিক এভাবেই শিহরিত হচ্ছে।

আর এদিকে পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরের নক্ষত্রের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। হাজার তারার আলো  থেকে অনেকটা দূরে সেটির অবস্থান। জানা গেছে, সেখান থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় লাগছে ৯০০ কোটি বছর! অর্থাৎ, এই গ্রহ থেকে তার দূরত্ব ৯০০  কোটি আলোকবর্ষ। হাবল স্পেস  টেলিস্কোপে সম্প্রতি এমনই এক বিচ্ছিন্ন নীলচে তারার ছবি ফুটে উঠেছে বলে দাবি করেছে নাসা। বলা হচ্ছে, এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত এটিই পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরের তারা। যার পোশাকি নাম ‘ইকারাস’। বিজ্ঞানীদের দাবি, এর আগে যে তারার অবস্থানকে দূরতম বলে মনে করা হতো, ইকারাস তার চেয়েও ১০০ গুণ দূরে। এতখানি দূরত্ব যার, তার ছবি সাধারণত ফিঁকে হওয়ারই কথা। এমনটা সম্ভব হয়েছে হাবল  স্পেস টেলিস্কোপের কারণে।

সর্বশেষ খবর