শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

মহাকাশে হেঁটে ইতিহাস দুই নারীর

শনিবারের সকাল ডেস্ক

মহাকাশে হেঁটে ইতিহাস দুই নারীর

নভোচারী ক্রিস্টিনা কোচ এবং জেসিকা মেইরই বিশ্বে প্রথম দুজন নারী যারা একসঙ্গে মহাকাশে হেঁটেছেন। নাসা জানিয়েছে, মহাকাশচারী ক্রিস্টিনা কোচ এর আগে মহাকাশে হাঁটলেও জেসিকা মেইরের জন্য এ ধরনের মিশন প্রথম। জেসিকা মেইর হলেন ১৫তম নারী যিনি মহাকাশে হাঁটলেন। ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস) এর বাইরে ওই দুজন ৭ ঘণ্টা কাটিয়েছেন। একটি পাওয়ার কন্ট্রোল ইউনিট প্রতিস্থাপনে তারা সেখানে অবস্থান করেছেন।

 

স্পেসওয়াক বা মহাশূন্যে পদচারণায় প্রথম ‘নারী দল’ পাঠিয়ে ইতিহাস গড়ল যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। প্রথমবারের মতো পুরুষ ক্রুমেট ছাড়া আইএসএসের বাইরে পা রাখলেন নারী মহাকাশচারীরা। এর আগে কোনো নারী মহাকাশচারী স্পেসওয়াকে গেলেও সঙ্গে ছিলেন পুরুষ সহকর্মী। সর্বশেষ ইতিহাস গড়া এই দুই নারী হচ্ছেন ক্রিস্টিনা কোচ ও জেসিকা মেইর।

প্রথমবারের মতো মহাকাশে হাঁটলেন এই দুই নারী নভোচারী। বিকল হয়ে যাওয়া একটি ‘পাওয়ার কন্ট্রোল ইউনিট’ প্রতিস্থাপন করতে গিয়ে তারা আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের বাইরে সাত ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন। এর আগেও আরও চারবার মহাকাশে হেঁটেছেন কচ। তবে, মেইরের জন্য এটিই ছিল প্রথম মহাকাশ মিশন। নাসা জানিয়েছে, জেসিকা মায়ার হলেন মহাকাশ হাঁটায় অংশ নেওয়া ১৫তম নারী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভিডিও কল দিয়ে এই দুই নভোচারীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। অভিনন্দন জানাতে গিয়ে মি. ট্রাম্প এই দুই নভোচারীকে ‘সাহসী ও মেধাবী নারী’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা মনোবল হারিও না। গোটা বিশ্ব তোমাদের দেখছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো নারী স্পেসওয়াকে যাচ্ছে।’ তবে তাদের মধ্যে একজন কথা বলার সুযোগ পেয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য সংশোধন করে বলেন, ‘এর আগেও একজন মার্কিন নারী স্পেসওয়াক করেছেন। এবার তফাত হলো কোনো পুরুষ ছাড়াই আমরা দুজন নারী স্পেসওয়াকে যাচ্ছি।’

কচ একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। আর মায়ার মেরিন বায়োলজিতে ডক্টরেট করেছেন। বিবিসি জানিয়েছে গত ১৮ অক্টোবর শুক্রবার গ্রিনিচ মান সময় বেলা ১১:৩৮ মিনিটে এই দুই নারী নভোচারী আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের বাইরে যান। এ সময়ে তাদের গায়ে ছিল নাসার স্পেস-স্যুট। এই দুই নভোচারীর হাঁটার গন্তব্য ছিল আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের পোর্ট-৬ ট্রাস স্ট্রাকচার নামক একটি স্থান। সেখানে পৌঁছে তারা ব্যাটারি চার্জ-ডিসচার্জ ইউনিট (বিসিডিইউ) প্রতিস্থাপন করেছেন। কাজ শেষ করে তারা বিকল হয়ে যাওয়া সেই যন্ত্রাংশ নিয়ে ফিরে আসেন। এই প্রোগ্রাম সরাসরি সম্প্রচার করে নাসা। প্রায় ৬১ জন ক্রু তাদের এই মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার বিষয়টি দেখভাল করেন। নাসা জানায় এটি তাদের ২০২৪ সাল নাগাদ চাঁদে মানুষ পাঠানো এবং নারীদের এ ক্ষেত্রে আরও উৎসাহিত করার পদক্ষেপ। দুই নারী নভোচারীর এই মহাকাশ-যাত্রাকে ‘ঐতিহাসিক ঘটনার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কামালা হ্যারিস। অনেকেই বলছেন এটি কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনাই নয় নারীরা যে আকাশকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে এ ঘটনা তারই প্রমাণ।  এর আগে গত মার্চ মাসে নাসা এক ঘোষণায় জানিয়েছিল যে, এই প্রথম শুধু নারীদের দিয়ে গঠিত একটি দল মহাকাশ যাত্রায় যাচ্ছে। সেই দলে কচ ও তার সহকর্মী অ্যানি ম্যাকক্লেইনের নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তখন সেই মিশন স্থগিত করা হয়েছিল। এদিকে মহাকাশে প্রথম যে নারী হেঁটেছিলেন তিনি হলেন রাশিয়ার নাগরিক সভেৎলিনা সাভিৎস্কায়া।

সর্বশেষ খবর