শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সবুজ সেবায় গাছের হাসপাতাল

ওলী আহম্মেদ, শেকৃবি

সবুজ সেবায় গাছের হাসপাতাল

প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট নানা কারণে গাছপালা কমে যাওয়ায় বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে সবুজ ছোঁয়ার আকুলতা এখন নগর সভ্যতার প্রতিটি সচেতন হৃদয়ে। ব্যক্তিগত শখেই নগরজীবনের ব্যস্ততা থেকে সময় বের করে গড়ে তোলা হচ্ছে ছাদবাগান। নগরকৃষি কিংবা ছাদকৃষির সুবাদে কংক্রিটের একেকটি বাসাবাড়ি কিংবা করপোরেট কর্নার এখন টুকরো টুকরো সবুজ আভা। তবে বাস্তবসম্মত জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা না থাকায় প্রায়শই ভোগান্তিতে পড়ছেন ছাদকৃষিতে সম্পৃক্ত এসব উদ্যোক্তা।

এক্ষেত্রে অনেকে জানেনই না চারা থেকে পূর্ণাঙ্গ গাছে আসতে বিশেষ কোন দিকগুলো নজরে রাখা আবশ্যক। গাছের পাতা একটু হলদে কিংবা কুঁকড়ে গেলেই বাগানপ্রেমীরা পড়ে যান মহাচিন্তায়- যেন গাছ নয় তিনিই অসুস্থ! তবে সত্য, কুঁকড়ে যাওয়া কিংবা হলদে হয়ে যাওয়া পাতাওয়ালা গাছগুলো অসুস্থই। আর এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রয়োজন গাছের চিকিৎসা। মানবচিকিৎসায় হাসপাতাল তো আছেই, গাছের চিকিৎসায় কি? হ্যাঁ, গাছের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে গড়ে উঠেছে, ‘গাছের হাসপাতাল’ নামে ব্যতিক্রমী এক প্রতিষ্ঠান। ‘গ্রিন সেভার্স’ নামক এক সংগঠনের প্রচেষ্টায় রূপ নিয়েছে অনন্য এ হাসপাতাল। সবুজ সেবায় তাদের আছে হোম ট্রিটমেন্ট ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। একটুকরো জায়গায় সবুজ রঙের সাইনবোর্ডে লেখা ‘গাছের হাসপাতাল’। সামনে দাঁড় করানো আছে বিশেষ খোপওয়ালা সবুজ রঙা একটি গাড়ি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের দেওয়া এই গাড়িটি প্রতিনিয়ত গাছের সেবায় নিয়োজিত। ডাক্তাররা বুধবার ছাড়া প্রতিদিনই হাসপাতালে বসেন। কখনোবা ভোরে সাইকেল নিয়েই বেড়িয়ে পড়েন তারা। সাইকেলের পেছনে একটি বক্স যার ভিতরে গাছের চিকিৎসায় নানান ওষুধ আর সঙ্গে ‘গার্ডেনিং টুলস’। ২৩ জন ডাক্তারের এ প্রতিষ্ঠানে ঢাকা ও এর পাশর্^বর্তী এলাকার জন্য প্রতিজন ডাক্তারের জন্য ক্ষেত্রবিশেষে ফি নির্ধারণ করা আছে ৩০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। আহসান রনি। তিনিই হাসপাতালটির প্রতিষ্ঠাতা। গাছের সেবায় তার এ পথচলা শুরু হয় ২০১০ সাল থেকে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলছিলেন, মানুষের যেমন প্রাণ আছে, তেমনি আছে গাছেরও। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য হলেও গাছকে বাঁচাতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকতেই এ চিন্তা মাথায় আসে। পরে সময়ের পরিক্রমায় গড়ে তুলতে চেষ্টা করি সবুজ বাঁচানোর সংগঠন ‘গ্রিন সেভার্স’। তিনি জানান, শহরে যারা বাগান করতে চায় তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে তারা কোথায় গাছ পাবেন, কোথায় টব পাবেন কিংবা মাটি। সময়মতো গাছের যত্ন করারও কেউ থাকে না। কিন্তু একজন বাগানি চাইলে এখান থেকে সব ধরনের সেবা পাবেন পাশাপাশি হেল্প লাইনে কল দিয়ে গ্রাহকরা নিতে পারবেন প্রয়োজনীয় পরামর্শ। সরকারি বা বেসরকারি কোনো পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ সেবা বৃহৎ পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর