শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

কুষ্টিয়ার তিলের খাজা

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ার তিলের খাজা

‘হায় রে মজার তিলের খাজা, খেয়ে দেখলে নে মন কেমন মজা’-বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের গানে এভাবেই এসেছে তিলের খাজার কথা। সাঁইজি রচিত এই গান-ই বলে দেয় তিলের খাজার ইতিহাস কতখানি প্রাচীন। কুষ্টিয়ার অসংখ্য ঐতিহ্যের অন্যতম এই তিলের খাজা। কেউ কেউ বলেন, প্রায় ৫০০ বছর আগে তিলের খাজার জন্ম। ১৯৭১ সালের পর থেকে কুষ্টিয়া শহরের চর মিলপাড়ায় গড়ে ওঠে তিলের খাজা তৈরির কারখানা। তখন থেকেই ক্রমে ক্রমে কুষ্টিয়ার তিলের খাজার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। বর্তমানে কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজা নামে দেশের বিভিন্ন  জেলায় এর কারখানা রয়েছে। তিলের খাজা তৈরির প্রধান উপকরণ তিল ও চিনি। তবে আগে তিলের খাজা তৈরিতে চিনির ব্যবহার ছিল না। তখন চিনির বদলে আখের গুড় ব্যবহার করা হতো। কালক্রমে আখের আবাদ কমে যাওয়ায় গুড় উৎপাদন হয় না বললেই চলে। এ কারণে বর্তমানে তিলের খাজা তৈরিতে চিনি ব্যবহার করা হয়। তিলের খাজা প্রস্তুতে জড়িত ব্যবসায়ীরা জানান, এই ব্যবসার জন্য যথেষ্ট পুঁজির প্রয়োজন হয়। ব্যবসা আরও প্রসার হলে এ পেশার সঙ্গে নিয়োজিত কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতো। এ শিল্পটিকে আরও এগিয়ে নিতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। চাহিদা থাকায় কুষ্টিয়ায় বেড়েছে তিলের আবাদ। কুষ্টিয়ার মিলপাড়ার এক কারখানার মালিক আবদুল মজিদ জানান, যে অবস্থা হয়েছে তাতে এ পেশা ছাড়তে হবে। আমাদের আর্থিক সংকট আছে। বর্তমানে সবকিছুর দাম বেড়েছে। কিন্তু খাজার দাম বাড়ালে ক্রেতা পাওয়া কঠিন হয়। তিনি আরও বলেন, এখন অনেক জায়গায়ই তিলের খাজা বানানো হয়। কিন্তু  বেশিরভাগেরই সঠিক মান থাকে না। এ জন্য আমাদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। মুখরোচক তিলের খাজার খ্যাতি এখন শুধু কুষ্টিয়ায়ই নয়, সারা দেশেই এর জনপ্রিয়তা রয়েছে। কুষ্টিয়ার তিলের খাজা উপাদেয় এবং দাম কম বলে এটি গ্রামেগঞ্জে, শহরবন্দরে সবখানে অত্যন্ত জনপ্রিয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর