শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি

পাহাড়ে ফ্রান্সের বেগুন

মো: জহুরুল আলম, খাগড়াছড়ি

পাহাড়ে ফ্রান্সের বেগুন

বাড়ির চারপাশে ফ্রান্সের আটটি বেগুন গাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে বেগুন ছিঁড়ে ফেললেও কয়েকটি গাছে এখনো বেগুন রয়েছে। ছয়টি বেগুন বীজ সংগ্রহের জন্য গাছেই রেখে দেওয়া হয়েছে...

 

পাহাড়ে ফ্রান্সের বেগুনের বীজ লাগিয়ে সাফল্য পেয়েছেন চিরঞ্জীব চাকমা (৫০)। খাগড়াছড়ির দিঘিনালার উত্তর থানাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা চিরঞ্জীব চাকমা বাড়ির আঙিনায় ফ্রান্সের বীজের বেগুন লাগিয়ে ভালো ফলন পেয়েছেন  কোনো প্রকার কীটনাশকও প্রয়োগ করতে হয়নি গাছে। পোকা-মাকড়ের আক্রমণও হয়নি। অনেকটা শখের বশে লাগানো বেগুন থেকে এখন বীজ সংগ্রহের জন্য তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। চিরঞ্জীব নতুন জাতের এ বেগুনের নাম দিয়েছেন ফ্রান্সের বেগুন।

উত্তর থানাপাড়া গ্রামে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বাড়ির চারপাশে ফ্রান্সের আটটি বেগুন গাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে বেগুন ছিঁড়ে ফেললেও কয়েকটি গাছে এখনো বেগুন রয়েছে। ছয়টি বেগুন বীজ সংগ্রহের জন্য গাছেই রেখে দেওয়া হয়েছে। হলুদ রঙের এক একটি বেগুন ৩৫০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের। দূর থেকে এ বেগুন অনেকটা নাশপাতি ফলের মতো দেখতে। পাতাগুলো দেখতে দেশীয় বেগুন গাছের পাতার মতো নয়। তবে গাছে ছোট ছোট কাঁটা রয়েছে। গাছগুলো চার থেকে পাঁচ ফুট লম্বা। কাঁচা অবস্থায় বেগুনগুলো হালকা সবুজ। দেখায়। আর পাকলে হলুদ রং ধারণ করে। চিরঞ্জীব চাকমা এ প্রতিবেদককে জানান, ‘সাড়ে তিন মাসে আগে তার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় ফ্রান্স থেকে বেগুন বীজগুলো পাঠায়। বীজ লাগালে চারা উঠবে কি না সন্ধিহান ছিলেন তিনি। কিন্তু লাগানোর এক মাসের মধ্যেই দেখেন বেগুন গাছ বাড়তে শুরু করে। ফলে দেড় মাসের মাথায় গাছে বেগুন ধরতে শুরু করে। প্রত্যেক গাছে গড়ে আট থেকে  দশটি বেগুন ধরেছে। একটি  বেগুনের ওজন ৩৫০ থেকে ৪০০ গ্রাম। চিরঞ্জীব আরও জানান, গাছে পানি দেওয়া ছাড়া আর কোনো পরিচর্যায় তিনি করতেন না। আগামী বছর বাণিজ্যিকভাবে কয়েক শতক জমিতে এই বীজের বেগুনের চাষ করার ইচ্ছা রয়েছে তার। তাই আগাম ছয়টি বেগুন বীজ সংগ্রহের জন্য রেখে দিয়েছেন গাছে।  চিরঞ্জীব চাকমার স্ত্রী কুন্তিসোনা চাকমা (৪৫) জানান, নতুন জাতের বেগুন তিনি রান্না করেছেন। খেতেও অনেক সু-স্বাদু। কীটনাশক ছাড়া বিষমুক্ত এই বেগুন শতভাগ নিরাপদ বলে মনে করেন তিনি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওঙ্কার বিশ্বাস এ বেগুনের বীজ সম্পর্কে জানান, ‘আমার জানা মতে পাহাড় তথা এ দেশের আর কোথাও এ বেগুন চাষ করা হয়নি। এ জাতের বেগুনের চাষ ভবিষ্যতে পাহাড়ের এ অঞ্চলে বিশাদাকারে করা যায় কিনা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনব। এদিকে ফ্রান্সের এ নতুন জাতের বেগুন দেখতে এলাকাবসী ইতিমধ্যে ভিড় জমিয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর