শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

নওগাঁয় আলোর ফেরিওয়ালা

প্রায় দুই যুগ ধরে নতুন বই নিয়ে পাঠকদের কাছে হাজির হন নওগাঁর আত্রাইয়ের লোকমান হোসেন। সমাজে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়াই যেন তার কাজ। অজপাড়াগাঁয়ে বসে প্রতিদিন নিত্যনতুন বইয়ের গন্ধ পাওয়া সত্যিই অবাক করার মতো। কালজয়ী বহু লেখকের বই নিয়ে হাজির হন পাঠকের সামনে...

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় আলোর ফেরিওয়ালা

নওগাঁজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন লোকমান হোসেন। সমাজে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়াই যেন তার কাজ। তাও আবার এক মাস বা দুই মাস নয়, প্রায় দুই যুগ! দীর্ঘ এই সময় পাঠকের কাছে নতুন বই পৌঁছে দিয়েছেন নওগাঁর আত্রাইয়ের লোকমান হোসেন। যেখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা একেবারে নেই বললেই চলে, সেখানে প্রতিদিন নিত্যনতুন বইয়ের গন্ধ সত্যিই অবিশ্বাস্য। সাদামাটা মানুষটি শংকর বন্দ্যোপাধ্যায়, হুমায়ূন আহমেদ থেকে শুরু করে অসংখ্য কালজয়ী লেখকের বই নিয়ে পাঠকের সামনে হাজির হন প্রতিদিনই। আত্রাই উপজেলার আমরুল কসবা গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে লোকমান হোসেন। ৬০ বছরের জীবনে ২১ বছর এই মহৎ কাজে ব্যয় করেন তিনি। সব বয়সী পাঠকের হাতে তুলে দেন তাদের পছন্দের বই। লোকমান হোসেন কাজটি করেন যেন গ্রামের মানুষ খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকেন। তারা যেন বইপ্রেমে মত্ত থাকেন। গ্রামের কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী, বয়োবৃদ্ধ এমনকি স্বল্প পড়তে পারা কৃষকও তার পাঠক। বর্তমানে তার পাঠক সংখ্যা এক হাজার। প্রতিদিনই ছুটে চলেন কাঁধে একটি ব্যাগ আর সাইকেলের পেছনে বেঁধে নেন বই। গ্রামের পথ ধরে চলার সময় তার সঙ্গে কথা হয়। বইয়ের প্রতি এমন ভালোবাসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছেলেবেলা থেকেই বই আর পত্র-পত্রিকার সঙ্গে তার সখ্য। কিন্তু শখ থাকলেও সাধ্যে কুলাত না। এই গ্রাম তো দূরে থাক, আশপাশের ১০-১২টি গ্রামেও ছিল না কোনো পাঠাগার। নিজ এলাকায় পাঠাগার প্রতিষ্ঠা আর সবার মাঝে বই বিলিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন জাগে দিনের পর দিন। সেই স্বপ্নের জোগান দিতেই প্রায় ২১ বছর ধরে সাইকেলে চড়ে বই বিক্রি করে চলেছি।’ সারা জীবন এভাবেই গ্রামের মানুষের মাঝে বই ছড়িয়ে দিতে চান তিনি। গ্রামের মানুষকে দিতে চান আনন্দময় এক জগতের খোঁজ। যে জগতের খোঁজ তিনি পেয়েছিলেন বইয়ের ছাপানো অক্ষরে।  সেই আনন্দের ভাগ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিতেই তিনি চষে বেড়ান মাইলের পর মাইল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর