শনিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

জীবন যুদ্ধে হার না মানা সিরাজুল

মিহির কুমার সরকার

জীবন যুদ্ধে হার না মানা সিরাজুল

সফলতা ব্যর্থতার সহযাত্রী। যে কখনো ব্যর্থ হয়নি, সে আসলে কখনো চেষ্টাই করেনি। তাই ঢেউ যত বড়ই হোক না কেন আছড়ে পড়া ঢেউ কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়ার নামই হলো সফলতা। এমনি এক অপ্রতিরুদ্ধ জীবন যুদ্ধে হার না মানা যুবক বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার চাঁপাপুর ইউনিয়নের মিতইল গ্রামের প্রতিবন্ধী সিরাজুল ইসলাম (৩৮)। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাতে ঠেলা ছোট্ট ভ্যানে চরে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেফিরে ফ্লেক্সিলোড করে সেবা দিয়ে আসছেন সিরাজুল। প্রতিবন্ধী হয়েও তিনি জীবন যুদ্ধে হার না মেনে জীবিকার তাগিদে এই ব্যবসা বেছে নিয়েছেন। সিরাজুল মিতইল গ্রামের একাব্বর আলীর ছেলে। চার বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেন সিরাজুল। শুধু সিরাজুল নন, তার বড় ভাইয়েরও অবস্থা একই। অভাবের সংসারে অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেননি দুই ভাই। প্রতিবন্ধী হলে কী হবে সংসারের চাকা তো আর থেমে থাকে না! তাই সংসারের বোঝা কাঁধে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে বেছে নিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা। সিরাজুলের বাবা একজন দিনমজুর বৃদ্ধ। তাদের সহায় সম্বল হিসেবে তিন শতক ভিটামাটি ছাড়া আর কিছু নেই। তাই প্রতিবন্ধী সিরাজুল স্ত্রী ও ৯ বছরের ছেলেসন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছেন।

প্রতিবন্ধী সিরাজুল বলেন, ছোটবেলা থেকে এমনটা ছিল না। প্রায় ৫ বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় আমার পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়। সংসারে অভাবের কারণে উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি। করতে পারলে হয়তো সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব হতো। কিন্তু এই ব্যবসা করে সংসার চালাব না উন্নত চিকিৎসা করব। প্রতিবন্ধী সিরাজুল আরও বলেন, ‘আমার বড়লোক হবার স্বপ্ন নয়, এ ব্যবসা করে স্ত্রী সন্তানের মুখে দুই বেলা দু’মুঠো খাবার তুলে দেওয়া এবং দূর থেকে হলেও দিনমজুর বৃদ্ধ বাবা-মাকে একটু সহযোগিতা করা।’ চাঁপাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সামছুল হক সাম বলেন, ‘আমি তার খোঁজখবর নিয়ে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।’ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শরিফ উদ্দীন বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে অতিদ্রুত প্রতিবন্ধী ভাতা করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর