শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
অনলাইনে নোট বিক্রি

সিঙ্গাপুরের তরুণের বাজিমাত

শনিবারের সকাল ডেস্ক

সিঙ্গাপুরের তরুণের বাজিমাত

ইউজিন চিওর বয়স ২৪। তিনি সিঙ্গাপুরের ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র। সম্প্রতি তিনি বাড়ি ও জমি বেচাকেনার একজন এজেন্ট হওয়ার এক পরীক্ষায় পাস করেছেন- যাকে বলে আরইএস। কিন্তু তিনি আলোচিত হয়েছেন অন্য কারণে। সেই কোর্সে পড়াশোনার যেসব নোট তৈরি করেছিলেন চিও- সেগুলো তিনি বিক্রির জন্য অনলাইনে তুলেছেন এবং এতে তার বেশ ভালো আয় হচ্ছে, একটা নতুন ব্যবসাই দাঁড়িয়ে গেছে। মনে রাখতে হবে, ইন্টারনেটে নোট বিক্রি যে চিও-ই প্রথম করছেন তা নয়। কিন্তু যে কোনো কারণেই হোক তার নোট দারুণ বিক্রি হচ্ছে। তিনি এ পর্যন্ত দেড় হাজার নোট বিক্রি করেছেন। একপর্যায়ে তার আয় ছিল সপ্তাহে ১০০০ ডলারের বেশি। এরপর তিনি পড়াশোনার নোট বিক্রিকেই তার ব্যবসায়ে পরিণত করলেন। সিঙ্গাপুরে একজন রিয়েলটর বা বাড়ি-জমি বেনাকেনার এজেন্ট হতে গেলে বেশ কিছু পূর্বশর্ত পূরণ করতে হয়। তাকে ৬০ ঘণ্টার একটি কোর্স করতে হয়, পাস করতে হয় আরইএস, যা দুই পর্বের একটি পরীক্ষা।

ব্যাপারটা সহজ নয়, বিবিসিকে বলছিলেন চিও, ‘সিঙ্গাপুরে নিয়মকানুন খুবই কঠিন। আমি তখনই উপলব্ধি করলাম দ্রুত কোনো কিছু শিখে নেওয়ার পদ্ধতির একটা বড় চাহিদা আছে।’

চিও তার নোটগুলোকে বলেন, ‘মাইন্ড ম্যাপ’- বা মনের মানচিত্র। চিও এগুলোকে তার নিজের পরীক্ষার সময় সফলভাবে ব্যবহার করেছেন।

এরকম ১৬টি মাইন্ড ম্যাপ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা একটা ফির বিনিময়ে ডাউনলোড করতে পারেন। কী আছে চিওর এই মাইন্ড ম্যাপে? মাইন্ড ম্যাপে চিও ছবি বা গ্রাফিক্স ব্যবহার করে নানা রকম আইডিয়া, কনসেপ্ট এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক ব্যাখ্যা করেছেন। যা মানুষের মস্তিষ্ক সহজে বুঝতে পারে। চিও বলেন, তিনি পরীক্ষায় পাস করলেও নিজে রিয়েল এস্টেট এজেন্ট হতে চান না। এগুলোতে আছে নানারকম আইনি ধারণা, বিপণন সংক্রান্ত ধারণা বা তত্ত্ব, গাণিতিক ফর্মুলা, নানারকম গ্রাফ এবং সিলেবাসে আছে এমন আরও নানারকম বিষয়। একজন ব্যবহারকারী ৮০ সিঙ্গাপুরি ডলার ব্যয় করে এগুলো ডাউনলোড করতে পারেন। কোনো একটি বিশেষ বিষয়ে যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে আপনি সে বিষয়ের তথ্যগুলো মাইন্ড ম্যাপে পেতে পারেন। তাতে আপনার যে সুবিধা হবে, একটা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে পাঠ্যপুস্তক খুঁজে একটা পুরো অধ্যায় পড়তে হবে না। এটাকে একটা ভিন্ন ধরনের শিক্ষণ পদ্ধতিও বলতে পারেন। চিও বলেন, কাজের সূত্রে নানা সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে তার যোগাযোগ হচ্ছে। চিওর আরেকটি আগ্রহের বিষয় হচ্ছে স্কু বা ডাইভিং। তার কথা, সাগরের পানির নিচে একদল ডাইভার পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ করেন আকারে-ইঙ্গিতে। সেই যোগাযোগ পদ্ধতি তাকে শিখিয়েছে যে, অনলাইন শিক্ষণের ক্ষেত্রে কী করে বিভিন্ন ভাষার বাধা অতিক্রম করতে হয়। চিওর কোম্পানির নাম হচ্ছে আরইএস টিউটর। যারা সিঙ্গাপুরে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার এজেন্ট হতে চান তাদের আরইএস পরীক্ষা পাস করতে সহায়তা করার জন্যই এটা তৈরি হয়েছে। চিও বলছেন, তিনি এখন তার ব্যবসাকে আইটির অন্য ক্ষেত্রেও প্রসারিত করতে চান।  তিনি নিজে একজন রিয়েলেটর হতে চান না, বরং যারা হতে চান তাদের সাহায্য করার আনন্দ পেতেই তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন।

               

সর্বশেষ খবর