শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

প্রাণীদের বাঁচাতে তরুণদের ভিন্ন উদ্যোগ

মর্তুজা নুর, রাবি

প্রাণীদের বাঁচাতে তরুণদের ভিন্ন উদ্যোগ

‘সবাই নিজের কথা প্রচার করে, আমিও তাই করি। নিন্দুকের কাজ হচ্ছে কোনো কাজ না করে পরনিন্দা ও পরচর্চায় মত্ত থাকা। অবশ্য এতে কিছু না পাওয়া গেলেও পৈশাচিক আনন্দ পাওয়া যায়। প্রথম দিকে আমার প্রকল্প নিয়ে অনেকেই হাসাহাসি করত। কিন্তু আমরা করে দেখিয়েছি। আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই সবাইকে যারা এখানে এসে এক দিনও একটু কাজ করেছেন। কৃতজ্ঞ তাদের ওপর যারা আমাদের প্রকল্পে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করেছেন। বিভিন্ন সময় বাজার করে দিয়েছেন। সবাইকে। ফোঁটা ফোঁটা জল থেকেই তৈরি হয় সমুদ্র। কৃতজ্ঞ একজন মানুষকে। উনাকে আমি অনেক সম্মান করি। উনি প্রতি মাসে বাজার করার সময় আমাদের সঙ্গে নিয়ে যান। গত মাসেও বাজার করেছি। ম্যানেজমেন্টের শাওন উদ্দীন স্যার আমাদের অনুপ্রেরণা হতে পারেন। উনাকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা।

আমাদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২০০ শিক্ষক প্রকল্পে বিভিন্নভাবে পাশে থেকেছেন। উনাদের সবার নাম আমি আমার ডায়েরিতে লিখে রাখব। আরও প্রায় ১০০ বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, কর্মকর্তা, কর্মচারী, সাবেক ও বর্তমান ছাত্র এবং বিভিন্ন সময়ে অনেকে (আমাদের হেল্প করতে চেয়েছেন কিন্তু প্রয়োজন পড়েনি বলে নিইনি) সবাইকে কৃতজ্ঞতা।

বর্তমানে চারুকলার একটি কুকুরসহ মোট পাঁচটি কুকুর জন্ম নেয় এখানেই। করোনায় লকডাউনের এক মাসের মধ্যে। তখন ছোট ভাই সাকি খাবার দিত। ওদের জন্য পাঠানো হতো আলাদা করে। ওরা পাঁচজনই বেঁচে আছে। ওরাও এখন বেশ বড় হয়েছে। বুল্ডুও বড় হয়ে গেছে। এমন সুন্দর এবং দুর্মূল্যের দিনে এদের সঙ্গে থাকতে পারাই কম কী!

কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ কুমার। যার নেতৃত্বে রাবিতে গড়ে উঠেছে ‘পোষা প্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্প’। সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে যারা ক্যাম্পাসের কুকুর ও বিড়ালগুলো আগলে রেখেছেন। নিজ হাতে খাবার রান্না করে খাওয়াচ্ছেন।

মূলত করোনা মহামারীতে যখন স্থবির হয়ে পড়েছিল জনজীবন, খেটে খাওয়া দুস্থ-অসহায় মানুষের জন্য দুই বেলা দুই মুঠো খাবার জোগাড় করাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল, এমন এক বৈশ্বিক দুর্যোগের সময়ে পশুদের প্রতি তখনই ভালোবাসার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তারা। করোনার প্রকোপ শুরু হলে ক্যাম্পাস বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ খাবারের দোকানগুলোও। উচ্ছিষ্ট খাবার নেই কোথাও। না খেয়ে দম যায় যায় অবস্থা প্রাণীগুলোর। কয়েকশ কুকুর, বিড়াল এরই মধ্যে ঝিমানো শুরু করেছে। কিন্তু এসব প্রাণীর খাওয়ার বন্দোবস্তসহ চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে গড়া ‘পোষা প্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্প’।              

সর্বশেষ খবর