শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

টাইগার চিংড়িতে বদলে যাওয়া জেলে জীবন

সঞ্জয় দাস লিটু, পটুয়াখালী

টাইগার চিংড়িতে বদলে যাওয়া জেলে জীবন

আমাদের দেশে মিষ্টি আর লোনা পানিতে হরেক রকমের সুস্বাদু চিড়িং মাছ আহরণ করে থাকেন জেলেরা। দেশের মানুষের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হয়ে এসব চিংড়ি। এর মধ্যে এলাকাভেদে চিংড়ি মাছের চাষও হয়। আবার বঙ্গোপসাগর থেকে জেলেরা আহরণ করেন প্রচুর চিংড়ি মাছ। নদীতেও পাওয়া যায় চিংড়ি। প্রতি বছর এসব চিংড়িমাছ আহরণের পর তা বাজারজাত করে প্রচুর  বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকেন ব্যবসায়ীরা আর সরকার পায় রাজস্ব। এতে জেলেদের কর্মসংস্থান হচ্ছে। রপ্তানিকৃত এসব চিংড়িমাছের মধ্যে একটি হলো টাইগার। ইংরেজিতে নাম Tiger Shirmp. Sea Tiger Shirmp. Sea Tiger Prawn lots. Sea Black Tiger Shirmp সহ হরেক নামের হয়ে থাকে টাইগার চিংড়ি। হালকা লালচে রঙের মাছের বিভিন্ন অংশে বাঘের মতো ডোরাকাটা তাই এই চিংড়ির নাম টাইগার। অন্যান্য চিংড়ি মাছের মতো খেতে সুস্বাদু হয় না বলে আমাদের দেশে এর কদর নেই। বিদেশে এর প্রচুর চাহিদা থাকায় রপ্তানি হয় এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। যেমন- তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, দুবাই, চীন, জাপান, ইতালি, জার্মানি বেলজিয়াম, ফ্রান্সসহ এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। পটুয়াখালী মৎস্য বিভাগের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলার জেলেরা সাগর ও নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আহরণ করে থাকেন। এসব মাছের মধ্যে জেলেদের অন্যতম আয়ের উৎস চিংড়িমাছ। তাই জেলেরা প্রতি বছর বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ি আহরণ করে থাকেন।

২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত চিংড়ি আহরণের পরিমাণ ৩ হাজার ২৮৬ মেট্রিক টন। এর মধ্যে গলদা ৩৯৪ টন ও বাগদা আহরণ হয় ৫০০ মেট্রিক টন। বাকি ২ হাজার ৩৯২ মেট্রিক টন অন্যান্য চিংড়ি মাছের ১৫ শতাংশ আহরণ হয় টাইগার চিংড়ি। প্রতি বছর জেলেরা এই টাইগার চিংড়ি আহরণ করে থাকেন ৩৫৮.৮ টন।

জানা যায়, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুর-ঢোস, রাঙ্গাবালী উপজেলার চর মোন্তাজসহ বিভিন্ন স্থানের মৎস্য ব্যবসায়ীদের পরিচালনায় জেলেরা গভীর সাগর থেকে আহরণ করে থাকেন টাইগার চিংড়ি। লোনা পানিতে এ মাছের বংশ বিস্তারের ব্যাপকতা রয়েছে। সাধারণত টাইগার চিংড়ি গভীর সমুদ্রে পাওয়া যায়। তবে সাগরের মোহনায় নদীর গভীরতাভেদে টাইগার চিংড়ি মাছ উঠে আসে জেলেদের জালে। সাগর বা সাগর মোহনার ২৫ থেকে ৩৫ মিটার পানির নিচে বিচরণ করে থাকে টাইগার। পানি যখন লোনা হয় তখন নদীতে কম গভীরতায় এ চিংড়ি মাছ পাওয়া যায়, যদিও সাইজে ছোট হয় টাইগার। তবে সাগর মোহনায় মাঝারি সাইজের হয়। আর গভীর সমুদ্রে এর সাইজ বড় হয়।  গভীর সমুদ্রে প্রতিটি টাইগার ওজনে ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রামেরও হয়ে থাকে।

 

সর্বশেষ খবর