শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

শিরিনের ভাগ্য বদলের গল্প

ব্লক-বাটিক, বিউটি পারলার ও কৃষিকাজ

বাবুল আখতার রানা

শিরিনের ভাগ্য বদলের গল্প

নিম্ন মধ্যবিত্ত এক কৃষক পরিবারে বেড়ে ওঠা শিরিন সুলতানার। দুই ভাইবোনের মধ্যে তিনি বড়। অভাবের সংসারেও মা শাহানা বানুর প্রবল ইচ্ছা মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করার। কিন্তু বাবা ইসমাইলের ইচ্ছা মেয়েকে যেটুকু পড়ানো হয়েছে তা আর কম কিসের। তাই তো মায়ের ইচ্ছা পূরণ না করেই স্বামীর সংসারে যেতে হয় শিরিনকে। বাবার বাড়ি দিনাজপুরের বিরামপুর থানার মোহনপুর গ্রামে হলেও স্বামীর বাড়ি নওগাঁর রানীনগরের এক প্রত্যন্ত গ্রামে। বর্তমানে সপরিবারে নওগাঁ শহরের পোস্টঅফিস পাড়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। শত অভাব-অনটনের মধ্যেও নিজ চেষ্টায় আজ তিনি সফল জয়ীতা। গত বছর উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়ীতাদের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে তিনি প্রথম নির্বাচিত হয়েছেন। এখন তার অধীনে প্রায় শতাধিক নারীকর্মী কাজ করে আর্থিক দিক দিয়ে লাভবান হচ্ছেন।

১৯৯৫ সালে বিরামপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৯৮ সালে বিরামপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন শিরিন সুলতানা। ওই কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন ২০০৩ সালে রানীনগরের প্রত্যন্ত গোনা গ্রামের ইদ্রিস আলী মোল্লার সঙ্গে বিয়ে হয়। শ্বশুরের পরিবারে ৯ সদস্য হওয়ায় অনেকটা কষ্ট করে চলতে হয়। একদিকে বেকার স্বামী, অন্যদিকে সংসারে দৈন্যদশা। শিরিনের হাতের কাজ জানা থাকায় প্রতিবেশীদের জামাকাপড় সেলাই করে আয় শুরু করেন। এরমধ্যে বিয়ের প্রায় দেড় বছর পর স্বামীর চাকরি হলে নওগাঁ শহরে চলে আসেন। ২০০৬ সালে এক ছেলে সন্তানের মা হন। ২০০৭ সালে ‘রূপমাধুরী বিউটি পারলার’ থেকে তিন মাসের প্রশিক্ষণ নেন। ২০১৩ সালে নওগাঁ সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন থেকে সেলাই ও ব্লক-বাটিকের ওপর তিন মাসের প্রশিক্ষণ নেন।  এরপর তাকে আর পেছনে ফিরতে হয়নি। ব্যাংক থেকে কয়েক ধাপে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করেন। এখন তিনি সফল জয়ীতা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর