মাটিতে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে অন্যতম ‘ব্যাসিলাস সাবটিলিস’ নামক ব্যাকটেরিয়া। মরিচ বীজ ও বীজ অঙ্কুরিত হয়ে উৎপন্ন চারার ওপর এবং সাধারণভাবে বৃদ্ধির সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে বৃদ্ধির তুলনা করে দেখা হয়, এ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে চারার বৃদ্ধি খুবই দ্রুত হয়। একই সঙ্গে অঙ্কুরোদগমের সময়ও হ্রাস পায় এবং অঙ্কুরোদগম হার বৃদ্ধি পায়। তাই এ ব্যাকটেরিয়া কীভাবে একটি বীজের অঙ্কুরোদগম-সময়, অঙ্কুরোদগম হার এবং চারার বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে তা উদ্ভাবন করা হয়। গবেষণায় বের হয়- ব্যাসিলাস সাবটিলিস নামের এ অণুজীবের (ব্যাকটেরিয়া) উপস্থিতিতে মরিচের বীজ দ্রুত বেড়ে যায়। তার পরিপক্বতাও হয় দ্রুততর। দীর্ঘ ছয় মাস নিজেদের বাসার বারান্দা ও ছাদে এ পরীক্ষাটি চালিয়ে এটি উদ্ভাবন করেন চট্টগ্রামের দুই তরুণ শিক্ষার্থী আনাস আহমেদ ও তালহা জুবায়ের।
জানা যায়, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত হয় ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অ্যান্ড ইনভেশন ফেয়ার (আইএসআইএফ)। এ ফেয়ারে ‘এন ইনভেস্টিগেশন অন দ্য রিলেশনশিপ বিটুইন জার্মিনেশন টাইম, রেট অ্যান্ড সিডিং গ্রোথ অব পেপার প্ল্যান্ট ইন দ্য প্রেজেন্স অব সয়েল ডিউলিং ব্যাসিলাস সাবটিলিস ব্যাকটেরিয়া’ শীর্ষক প্রজেক্ট উপস্থাপনা করে বিজয়ী হয়েছেন চট্টগ্রামের আনাস ও তালহা। প্রাক বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনভিত্তিক এ প্রতিযোগিতাটি পৃথিবীর সবচেয়ে নাম করা বিজ্ঞান প্রদর্শনীগুলোর অন্যতম। প্রদর্শনীতে এবার চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয় ৩৩০ দল। এসব দলের মধ্যে চার ধাপের প্রতিযোগিতা শেষে দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশ দলের দুই সদস্য ছিলেন আনাস ও জুবায়ের। দুজনই চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন নটর ডেম কলেজে। পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, প্রকৌশল, প্রযুক্তি ও পরিবেশ বিজ্ঞান- এ কয়েকটি ক্যাটাগরিতে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতাটি। প্রতিবারের প্রতিযোগিতায় বিশ্বে বিরাজমান কোনো সমস্যা সমাধানের উপায় বের করা কিংবা প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে অধিকতর কার্যকর কোনো পদ্ধতিতে কাজ করার উপায় বের করতে হয়। এ কাজের ভিডিও উপস্থাপন, পরবর্তী সময়ে তার ওপর পোস্টার উপস্থাপন, বিভিন্ন ছবির মাধ্যমে উপস্থাপনা, এর ওপর দীর্ঘ নিবন্ধ লেখা এবং সবশেষে নিজেদের কাজ আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান বিজ্ঞানী ও গবেষকদের সামনে উপস্থাপন করতে হয়। বাংলাদেশ দলের দুই সদস্য আনাস ও তালহা সব ধাপ পেরিয়ে ফাইনালে পুরস্কার অর্জন করেন। এবার বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে পুরো প্রতিযোগিতাটিই অনুষ্ঠিত হয়েছে অনলাইনে। এতে চ্যাম্পিয়ন হয় যুক্তরাষ্ট্র ও নেদারল্যান্ডসের প্রতিযোগীরা এবং প্রথম রানারআপ হয় চীন।