শিরোনাম
শনিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বঙ্গোপসাগরের বুকে চর বিজয়

উত্তম কুমার হাওলাদার, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)

বঙ্গোপসাগরের বুকে চর বিজয়

বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে উঠেছে বিশাল সম্ভাবনার নতুন এক দিগন্ত। প্রায় ৫ হাজার একর আয়তন নিয়ে জেগে ওঠা এ চরটি পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত। লাল কাঁকড়ার অবাধ ছোটাছুটি আর অতিথি পাখির কল-কাকলি। দিগন্তজোড়া আকাশ আর সমুদ্রের নীল জলরাশি আছড়ে পড়ছে কিনারায়। এ ছাড়া সাদা গাঙচিলের দল এদিক-ওদিক উড়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে দৃষ্টি কেড়েছে পর্যটকদের। জেগে ওঠা চরটির নাম ‘চর বিজয়’ রাখা হলেও গভীর সাগরে মাছধরা জেলেদের কাছে ‘হাইরের চর’ নামে পরিচিত। প্রতিদিনই আগত পর্যটকরা ছুটে যাচ্ছে এক নজর দেখতে। দেশি-বিদেশি পর্যটকের কাছে এ চর ভ্রমণে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পর্যটকদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণের সম্ভাব্যতা নিশ্চিত করতে ২০১৭ সালে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন, কুয়াকাটা পৌর প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশ, হোটেল মালিক সমিতি ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা চর বিজয় পরিদর্শন করে। ওই সময় ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বাগান সৃজনের জন্য প্রায় ২ হাজার গোল, ছইলা, কেওড়া ও সুন্দরী গাছের চারা রোপণ করা হয়। মানুষের খুব একটা বিচরণ নেই তাই শীতে এ চরটিতে সমাগম ঘটে লক্ষাধিক অতিথি পাখির। তবে সঠিক তদারকিতে তৈরি হবে একটি বাসযোগ্য নতুন সমভূমি। যাকে ঘিরে কুয়াকাটার পর্যটন শিল্পে তৈরি হবে আরেক ভিন্ন মাত্রা। এমন সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট অনেকে। চরটি ঘুরে এসে পর্যটক মাসুদ রানা বলেন, চারদিকে সাগরের অথৈই পানি। এরই মধ্যে আকাশ আর মাটির সঙ্গে মিতালি তৈরি করেছে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা নতুন চর বিজয়। এ যেন প্রকৃতির এক নান্দনিক সৌন্দর্য। এখানে যে কেউ এলেই ভালো লাগবে বলে তিনি জানিয়েছেন। কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন কুটুম-এর সহসভাপতি হোসাইন আমির বলেন, সৈকত থেকে ট্যুরিস্ট বোট নিয়ে এ চর বিজয়ে মাত্র দেড় ঘণ্টায় পৌঁছা যায়।

বর্ষা মৌসুমের ছয় মাস চরটি হাঁটু পানিতে ডুবে থাকে। শীত মৌসুমে ধু-ধু বালু নিয়ে জেগে ওঠে। এ সময়ে তিন/চার মাসের জন্য অস্থায়ী বাসা তৈরি করে মাছ শিকার এবং শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করেন জেলেরা। কুয়াকাটা ইলিশ পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, বেশির ভাগ পর্যটকের আকর্ষণ এখন চর বিজয় ভ্রমণ। এতে পর্যটন ব্যবসায়ীরা হচ্ছেন লাভবান। আর পর্যটকরা পাচ্ছেন এক ভিন্ন এডভেঞ্চার বিনোদন। মহিপুর বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম বলেন, চরটিতে বনায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর আগেও গোল, ছাইলা, কেওয়া ও সুন্দরী গাছের চারা রোপণ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এম এম মিজানুর রহমান জানান, কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা পর্যটক ট্যুরিস্ট বোট নিয়ে সমুদ্রের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান নৌ-ভ্রমণে যায়।  তবে পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের ট্যুরিস্ট পুলিশ সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর