শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

নাসার পুরস্কার পেলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা

২৮ জানুয়ারি চূড়ান্ত পর্বে অনারেবল মেনশন বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়। বাংলাদেশের একক দল হিসেবে অনারেবল মেনশন বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে বুয়েটের ছয় শিক্ষার্থীর টিম

শনিবারের সকাল ডেস্ক

নাসার পুরস্কার পেলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছয় শিক্ষার্থী পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পরিচালিত ইন্টারন্যাশনাল স্পেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জে অনারেবল মেনশন বিভাগে পুরস্কার। তাদের সবাই কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তারা হলেন মেহরাব হক, তামিমুল এহসান, হাসান মাসুম, ফাবিহা তাসনিমা, রাবিব জিহান আর জেহাদুল করীম। স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ নামের এই প্রতিযোগিতার ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এবারের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল প্রায় ১৫০টি দেশের তিন হাজার আট শতাধিক দল। সেখান থেকে বাছাই করা ৪০টি দল চূড়ান্ত পর্বের জন্য মনোনীত হয়। গত ২৮ জানুয়ারি চূড়ান্ত পর্বে আটটি দলকে গ্লোবাল উইনার ও সাতটি দলকে অনারেবল মেনশন বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়। বাংলাদেশের একক দল হিসেবে অনারেবল মেনশন বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে বুয়েটের ছয় শিক্ষার্থীর টিম। তাদের প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান পার্থ চক্রবর্তী। ২০১২ সাল থেকে এই প্রতিযোগিতা নিয়মিত আয়োজন করছে নাসা। শুরুটা হয় গত বছর আগস্টে। করোনাকালীন অনলাইন ক্লাসে শিক্ষকের কাছ থেকে একটা ভিন্ন কিছু করার প্রস্তাব পেয়েছিলেন বুয়েটের একদল শিক্ষার্থী। নাসা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ভাবনাটা মেহরাব, তামিমুল, হাসান, ফাবিহা, রাবিব আর জেহাদুলের মনে ধরেছিল তখনই। সবাই কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। সত্যিই স্পেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জে অনারেবল মেনশন বিভাগে পুরস্কার পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। ভূমিকম্প শনাক্ত করবে এমন একটি অ্যাপ বানানোর পরিকল্পনা করেন বুয়েটের এই শিক্ষার্থীরা। খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করে প্রতিযোগিতাটির আঞ্চলিক পর্বে জমা দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎ বাধলো বিপত্তি। প্রকল্প পরিকল্পনা জমাদানের শেষ তারিখের আগের দিন বুঝতে পারলেন তাদের প্রকল্প প্রতিযোগিতার নির্ধারিত বিষয়ের সঙ্গে ঠিক মিলছে না। স্বাভাবিকভাবেই দলের সবার মাথায় হাত। সব আশাই শেষ হয়ে যেতে বসেছিল। কিন্তু জমাদানের নির্ধারিত তারিখ ১০ দিন পেছানোর খবর তাদের জন্য আশার আলো হয়ে এলো। ফলে নতুন করে পরিকল্পনা শুরু হলো।

আলোচনা করে ঠিক করলেন, একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বানাবেন, যেখানে থেকে মহাকাশের স্যাটেলাইট-সম্পর্কিত নানা তথ্য, সেগুলোর অবস্থান ও কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত ধারণা মিলবে। পরিকল্পনার খসড়া দাঁড় করিয়ে জমা দিলেন। এরপর শুরু করলেন মূল প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। ‘স্যাটেলাইট’ নামেই একটি ওয়েবসাইট আর স্মার্টফোন অ্যাপলিকেশনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম বানালেন। ওয়েবসাইট আর অ্যাপ  ছাড়াও তারা কম্পাসের মতো একটি যন্ত্র বানিয়েছেন, যেটি টেলিস্কোপ দিয়ে স্যাটেলাইট দেখতে সাহায্য করবে। স্যাটেলাইট নিয়ে জানার পর ব্যবহারকারীরা নিজেদের অনুভূতি ও মতামত প্রকাশ করতে পারবেন। তাদের এই পরিকল্পনা আঞ্চলিক পর্যায়ে বিজয়ী হয়ে নাসার মূল প্রতিযোগিতায় চলে যায়। স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ নামের এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি তরুণদের এমন সাফল্য ভবিষ্যতের শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। এভাবেই বিশ্বের সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের জয়জয়কার ছড়িয়ে পড়ছে। তারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বুয়েটের ছেলেমেয়েরা।

সর্বশেষ খবর