শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

মোটরসাইকেল চালিয়ে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন

মো. কাবুল উদ্দিন খান, মানিকগঞ্জ

মোটরসাইকেল চালিয়ে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার উত্তর জামশার বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া সুজাতা মোটরসাইকেল চালিয়ে সারা দেশ ঘুরে এখন স্বপ্ন দেখছেন পৃথিবী জয়ের। পিতৃহারা মুক্তমনের সুজাতা পঞ্চম শ্রেণি পড়াকালে মোটরসাইকেল চালানো শুরু করেন। এখন তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে অনার্স পড়ছেন। কয়েক দিন আগে মোটরসাইকেল নিয়ে সারা দেশ ঘুরে তাক লাগিয়ে দেন মানিকগঞ্জবাসীকে। লেডি বাইকার হিসেবে সুজাতা এখন সবার পরিচিত মুখ। সুজাতা জানান, আমি বাবাকে দেখিনি মা-ই আমার সব। ছোটবেলায় মাকে মোটরবাইক চালাতে দেখে আমি স্বপ্ন দেখতে থাকি আমি বড় হয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে সারা দেশ দেখব তার পর বিশ্ব দেখব। আমার প্রথম স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি একা মোটর বাইক নিয়ে দেশের সব জেলায় গিয়েছি। আমার ইচ্ছা দেশের প্রতিটি গ্রাম ঘুরে দেখার। এরপর সারা বিশ্ব দেখব। সুজাতা আরও জানায়, ২০১৫ সালে এসএসসি পাস করার পর বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিই। বাঁধা-ধরা নিয়ম ভালো না লাগায়  চাকরি ছেড়ে আবার পড়াশোনা শুরু করি। এরপর ২০১৯ সালে এইচএসসি পাস করার পর ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়ছি। আমার ইচ্ছা লেখাপড়া শেষে চাকরি না করে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করব। সুজাতার দাবি বাংলাদেশে তিনিই প্রথম নারী, যে একা মোটর বাইক নিয়ে সারা দেশ ঘুরেছে। কোনো কোনো নারী মোটর বাইক নিয়ে গ্রুপের সঙ্গে দেশ ঘুরলেও একা কেউ ঘোরেনি। আমিই একমাত্র নারী আমার পোষা কুকুর একমাত্র জিমিকে নিয়ে সারা দেশ ঘুরেছি। আমি সরকারি স্বীকৃতি দাবি করছি। সারা দেশ ঘোরার প্রমাণস্বরূপ প্রতিটি জেলার ছবি তুলে এনেছেন। তিনি আরও বলেন, গত বছর ২৬ অক্টোবর ২৮ ঘণ্টায় আমি টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পৌঁছাই। এ ভ্রমণই আমাকে উৎসাহিত করেছে। এরপর এ বছর ২০ জানুয়ারি সারা দেশ দেখার জন্য বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। ৬৪ জেলা ঘুরে ৩ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জে ফিরে আসি। তার নিজের নামে মোটর বাইক ও ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে। সুজাতার মা আকলিমা আক্তার মমতাজ বলেন, আমি উপজেলা ভূমি অফিসে চাকরি করি। আমি বাইক নিয়ে অফিসে আসা-যাওয়া করি। ছোটবেলা থেকেই মেয়ের বাইক চালানোর খুব ইচ্ছা ছিল। আমি তাকে বাধা না দিয়ে সহযোগিতা করি। বাবা-হারা মেয়ের কোনো ইচ্ছাই আমি অপূর্ণ রাখিনি। সুজাতা যখন মোটরসাইকেল চালিয়ে সারা দেশ ঘুরে এলো তখন গর্বে আমার বুকটা ভরে গেছে। প্রতিটি ভ্রমণে প্রচুর টাকা লাগে। আমার বেতনের টাকায় সংসার চালিয়ে যা থাকে তাই দিয়ে ওকে চলতে হয়। আমার মেয়েকে সহযোগিতা দিয়ে সারা বিশ্ব ভ্রমণের সুযোগ করে দিলে আমি কৃতজ্ঞ থাকব। আমার বিশ্বাস সহযোগিতা পেলে আমার মেয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে বিশ্ব জয় করে আসবে। সুজাতার মামা আবদুল আলীম বলেন, বাবা-হারা আমার ভাগ্নি খুবই আত্মবিশ্বাসী। সহযোগিতা পেলে সে অবশ্যই মোটরসাইকেল চালিয়ে বিশ্ব জয় করে ফিরবে।

সর্বশেষ খবর