শনিবার, ৬ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

হার না মানা অনিকের গল্প

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

হার না মানা অনিকের গল্প

অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর দৃঢ় মনোবলের কাছে কিছুই বাধা হতে পারে না, তার প্রমাণ দিয়েছেন কুষ্টিয়ার মিরপুরের শারীরিক প্রতিবন্ধী অনিক মাহমুদ। নিজের শারীরিক অক্ষমতাকে পেছনে ঠেলে আপন কর্মগুণে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। তিনি এখন এলাকার সফল ফ্রিল্যান্সার। মাসে আয় করছেন ৭০-৮০ হাজার টাকা। পাশাপাশি কয়েকজন বেকার তরুণের জন্য তাঁর প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ করে দিয়েছেন। অনিক মাহমুদের বাড়ি মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ এলাকায়। কলেজ শিক্ষক মোজাহার আলীর দুই ছেলের মধ্যে অনিক ছোট। জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী হওয়ায় একটু বড় হওয়ার পর তাঁর চলাফেরা হুইল চেয়ারে। এই শারীরিক অক্ষমতা নিয়েই ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করেন তিনি। তবে কলেজে বহুতল ভবনে ওঠা-নামার সমস্যা থাকায় এসএসসি পাসের পর অনিকের আর পড়াশোনা করা হয়নি। অনিক জানান, ছোটবেলা থেকেই তার কম্পিউটারের প্রতি বেশ ঝোঁক ছিল। তিনি বলেন, ২০১২ সালের দিকে বাড়ি থেকে হুইল  চেয়ারে করে কম্পিউটার শিখতে যেতেন বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে। এসএসসি পাস করার পর বাবাকে অনুরোধ করে পোড়াদহ হাইস্কুল মার্কেটে একটি কম্পিউটার কম্পোজ, প্রিন্ট ও স্টেশনারিজের দোকান দেন অনিক। নিজস্ব কম্পিউটার হাতে আসার পর অনিক ইউটিউব ও গুগুল সার্চ করে কম্পিউটারের নানা কাজ শিখতে থাকেন। এরপর ২০১৮ সালের শুরু থেকে ই-শিখনের মাধ্যমে অনলাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রশিক্ষণ নেন। পাশাপাশি তিন মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে ফ্রিল্যান্স্যার হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০১৯ সাল থেকে মোটামুটি কাজ পাওয়া শুরু করেন মার্কেট প্লেসে। টি-শার্টে ডিজাইন নিয়েই প্রথম কাজের বিনিময়ে ২৫ ডলার হাতে পান তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। তিনি বলেন, এখন আর তাঁর বায়ার খুঁজে পেতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয় না। কাজের প্রচুর অর্ডার পান তিনি। বর্তমানে তাঁর মাসিক আয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া তাঁর প্রতিষ্ঠানে বেশ কয়েকজন বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে।  অনিক মাহমুদ বর্তমানে এলাকার যুবসমাজের এক অনুপ্রেরণার নাম।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর