শনিবার, ৬ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

নিজ ভাষার বই পেল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

নিজ ভাষার বই পেল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা

ভাষার মাসে পাঁচটি ভাষার বই পেয়েছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ বইগুলো বের করা হয়েছে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের হাতে তাদের নিজস্ব ভাষার বই তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।  জানা যায়, এ উপজেলায় ৩৭ জাতিগোষ্ঠী বসবাস করছে। তাদের সন্তানরা এ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করছে। প্রথম পর্যায়ে চা-বাগানের ভাষা সাদরি, খাসিয়াদের ভাষা খাসি, গারোদের ভাষা মান্দি, মণিপুরীদের ভাষা মৈতৈ ও পাঙন এই পাঁচ ভাষার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই প্রকাশ করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একমাত্র বাঙালি জাতিই মায়ের ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে। তাই সব জাতিগোষ্ঠীর ভাষার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ভালোবাসা অপরিসীম। বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এ বইগুলো প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়েছি। কয়েকটি বই দেশে পেয়েছি, কয়েকটি ভারত থেকে আনতে হয়েছে। এ পর্যন্ত পাঁচটি ভাষার বই আমরা বের করেছি। ভবিষ্যতে আরও কয়েকটি ভাষার বই বের হবে। আশা করছি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণে এ বইগুলো অনেক উপকারে আসবে।’ শ্রীমঙ্গল উপজেলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সমন্বয়কারী তাজুল ইসলাম জাবেদ বলেন, উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি ৮৪টি বিদ্যালয়ে ৩ হাজার ৭৮০টি বই বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের এনজিও বা গারো, খাসিয়াদের নিজ খরচে পরিচালিত বিদ্যালয়গুলোতেও আমরা পৌঁছে দিচ্ছি।

বৃহত্তর সিলেট আদিবাসী ফোরামের মহাসচিব ফিলা পতমি বলেন, বইগুলো সরকারিভাবে অনেক আগেই বের করা উচিত ছিল। উপজেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে শুধু বই বের করলেই হবে না। এ বইগুলো যেন শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়, তার জন্য প্রতিটি স্কুলেই শিক্ষকদের বিভিন্ন ভাষার ওপরে প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। যাতে করে শিক্ষকরা এই ভাষা সঠিকভাবে শিক্ষার্থীদের পড়াতে পারেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম জাকিরুল হাসান বলেন, শ্রীমঙ্গল হচ্ছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী অধ্যুষিত একটি উপজেলা। প্রাথমিক স্তরে পাঁচটি বইয়ের মধ্যে তিনটি বই পড়ানো হচ্ছে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত। আর যে বইগুলো নেই, সেগুলো উপজেলা থেকে দেওয়ার ফলে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষায় খুবই অবদান রাখবে বলে  আমি মনে করি।

সর্বশেষ খবর