শনিবার, ৮ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

বুয়েটে তৈরি অক্সিজেট সিপ্যাপ ভেন্টিলেটর

শনিবারের সকাল ডেস্ক

বুয়েটে তৈরি অক্সিজেট সিপ্যাপ ভেন্টিলেটর

অক্সিজেট নামে একটি সিপ্যাপ ভেন্টিলেটর তৈরি করেছে বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। এটি বিদ্যুৎ ছাড়াই অক্সিজেন সিলিন্ডার বা মেডিকেল অক্সিজেন লাইনের সঙ্গে যুক্ত করে করোনা আক্রান্ত রোগীকে উচ্চগতির অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে। এরই মধ্যে ঢাকা মেডিকেলের তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে। বর্তমানে করোনা আক্রান্ত রোগীদের অনেকেরই শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়ে থাকে। স্যাচুরেশন কমে যাওয়ায় প্রয়োজন পড়ে অক্সিজেনের। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। অবস্থার অবনতি হলে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র আইসিইউ-তে নিতে হয়। এখানে বেড সংখ্যা সীমিত থাকায় দেখা দেয় সংকট। যা দূর করতে একটি পদ্ধতি বের করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি দল ‘অক্সিজেট’ নামে ‘সিপ্যাপ যন্ত্র’ তৈরি করেছে। যা অক্সিজেন সিলিন্ডার বা মেডিকেল অক্সিজেন লাইনের সঙ্গে যুক্ত করলে অক্সিজেনের নির্ধারিত গতি বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এর দ্বারা বিদ্যুৎ ছাড়াই ৬০ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেট প্রবাহ করা সম্ভব। বুয়েটের আবিষ্কৃত যন্ত্রটি কোনো ধরনের বিদ্যুৎ শক্তি ছাড়াই শুধু অক্সিজেন সিলিন্ডার বা মেডিকেল অক্সিজেন লাইনের সঙ্গে যুক্ত করে ব্যবহার করা যায়। সহজে ব্যবহারযোগ্য ভেন্টিলেটরটি প্রত্যন্ত অঞ্চল বা অ্যাম্বুলেন্সের অক্সিজেন সিলিন্ডারেও যুক্ত করা সম্ভব। সাধারণ করোনা ওয়ার্ডে রোগীদের ১৫ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ করা যায়। এর বেশি প্রয়োজন হলে দরকার হয় আইসিইউ বা এইচডিইউর।

মেডিকেল অক্সিজেন সাপ্লাই ও দ্বৈত ফ্লো মিটারের সাহায্যে এটি প্রয়োজনে শতভাগ পর্যন্ত অক্সিজেন কনসেনট্রেশন দিতে পারে। এর ফলে স্বল্প খরচেই সাধারণ ওয়ার্ডে রোগীদের উচ্চগতির অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া যাবে। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলে এর তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল চলছে। গবেষকরা জানান, বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা

পরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহায়তায় চতুর্থ ধাপে আরও বড় ধরনের ট্রায়াল করা সম্ভব হবে। এ প্রযুক্তির মূল উদ্যোক্তা বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ড. তওফিক হাসান বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণের শুরুতে উচ্চগতির অক্সিজেন সরবরাহে নানা সীমাবদ্ধতা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলার উচ্চমূল্য এবং ব্যবহারে উন্নত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন পড়ায় রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স বা সাধারণ ওয়ার্ডে অক্সিজেনের প্রয়োজন হলেও তা ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। এসব রোগীর কষ্ট লাঘবেই তারা যন্ত্রটি আবিষ্কারে উৎসাহিত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে সফলতা পাওয়া গেছে।  এটি চালাতে বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে না। শুধু অক্সিজেনের চাপে চলবে। এই যন্ত্রটি তৈরি করতে ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. খায়রুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ড আর আইসিইউতে আমরা পরীক্ষা চালাচ্ছি। এটি খুব ভালো বিকল্প হতে পারে। কারণ বিদ্যুৎ ছাড়া ৬০ লিটার অক্সিজেন দেওয়া যাবে। এই সিপ্যাপ সাধারণ ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের পাশাপাশি বাতাস থেকে বাড়তি অক্সিজেন গ্রহণ করবে।               

সর্বশেষ খবর