শনিবার, ১৯ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

ক্যান্সারজয়ী সুমনা এখন সফল উদ্যোক্তা

সাইফ ইমন

ক্যান্সারজয়ী সুমনা এখন সফল উদ্যোক্তা

সুমনা আহমেদ। জন্ম জামালপুরে। বর্তমানে দুই মেয়ে এবং স্বামী নিয়ে সুন্দর সংসার। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ক্যান্সার। পরিবারের সবার সাহায্যে যুদ্ধটা করে গেছেন ক্যান্সারের সঙ্গে। জয়ীও হয়েছেন। ক্যান্সার থেকে মুক্ত হয়েই শুরু করেন সামাজিক কর্মকান্ড। বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত করেছেন নিজেকে। সেই সঙ্গে শুরু করেছেন নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। নিজেই তৈরি করছেন আপেল সাইডার ভিনেগার। ফেসবুকের জনপ্রিয় গ্রুপ উইতে এখন তিনি রীতিমতো তারকা। তাঁর তৈরি আপেল সাইডার ভিনেগারের সুনাম এখন সবার মুখে মুখে। প্রতি মাসে প্রচুর অর্ডার পাচ্ছেন সারা দেশ থেকে। জীবনের এই পর্যায়ে এসে এভাবে সফলতা পাবেন তা কী তিনি ভেবেছিলেন! বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন তাঁর উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প। বলেছেন ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধের গল্পও। তিনি বলেন, ‘২০১৮ সেপ্টেম্বরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাই। দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হই। কলকাতার টাটা মেমোরিয়াল থেকে কেমো, রেডিয়েশন শেষ করে এখন ফলোআপে আছি। আমার পরিবার নানাভাবে সাহস জুগিয়েছে। একজন ক্যান্সার পেশেন্টকে কতটা কষ্ট করতে হয়, কতটা মনোবল দরকার তা নিজে কষ্ট ভোগ করেছি বলেই বুঝতে পেরেছি। আমার পরিবার, আমার মা, শ্বশুরবাড়ির স্বজনদের ঋণ কোনো দিন শোধ করতে পারব না। আমার বাচ্চাদের বাবা যে পরিমাণ কষ্ট করেছেন তাঁর ঋণ কোনো দিন শোধ করতে পারব না। আর যখনই কষ্টের দিনগুলোর কথা মনে হয় চোখে যেন বৃষ্টির ধারা বয়ে যায়। আর আমি তখন থেকেই ভাবছি ক্যান্সার পেশেন্টদের জন্য কিছু করতে পারলে শান্তি পেতাম।’ জীবনে এই পর্যায়ে এসে হঠাৎ কীভাবে সামাজিক কর্মকান্ডে জড়ালেন এবং কীভাবে উদ্যোক্তা হয়ে উঠলেন জানতে চাইলে বলেন, ‘আসলে হঠাৎ করে নয়, আমার ট্রিটমেন্ট শেষ হতে প্রায় দেড় বছর সময় লেগে যায়। এরপর এখন অপরাজিতা, দিগন্ত এবং আরও বেশ কিছু ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কাজ করছি। ঢাকায় চিকিৎসার জন্য আসা অসহায় ক্যান্সার পেশেন্টদের থাকা, খাওয়া এবং হাসপাতালে যাতায়াত সুবিধায় কাজ করছি। আর আপেল সাইডার ভিনেগার আমি আগে কিনে খেতাম। গত বছর শুরুর দিকে হঠাৎ করে দাম বেড়ে যায়। তখন নিজে বানিয়ে খেলাম এবং আমার আত্মীয় এবং প্রিয়জনকে দিতাম। সবাই বলল খুব ভালো হয়েছে। তখন থেকে এই পণ্য নিয়ে কাজ করা শুরু করলাম। যখন গত বছর ঘরে বসে ছিলাম তখন উই এ শুধু দেখতাম, কত আপু কাজ করছে, তাঁদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আমিও আল্লাহর নামে কাজ শুরু করে দিলাম। রাজীব ভাই, নিশা আপুকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।’ মানবসেবায় কাজ করে যেতে চান সুমনা আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমার নিজের ইচ্ছা সবসময় কাজ করে যাব মানবসেবায়। ক্যান্সার পেশেন্টদের সহায়তায় কাজ করব।  ফেসবুকের উই গ্রুপ অনুপ্রেরণার জায়গা আমার।

সর্বশেষ খবর