শনিবার, ২৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা
বিশ্বকাপের ফাইনালে ইতিহাস

আর্চারির ‘বিস্ময়কন্যা’ দিয়া সিদ্দিকী

শনিবারের সকাল ডেস্ক

আর্চারির ‘বিস্ময়কন্যা’ দিয়া সিদ্দিকী

ফ্রান্সের প্যারিসে আর্চারির ফাইনাল কোয়ালিফিকেশন টুর্নামেন্টে রিকার্ভ ব্যক্তিগত নারী এককের খেলায় দিয়া সিদ্দিকী ৬-০ সেটে আর্জেন্টাইন আর্চারকে হারান। হাতে পেয়েছেন অলিম্পিকের টিকিট...

খেলাধুলায় আবারও বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হলো বাংলাদেশ। কিন্তু ফুটবল বা ক্রিকেট নয়। প্রথমবারের আর্চারি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। আর এটি সম্ভব হয়েছে রোমার সানা ও দিয়া সিদ্দিকীর হাত ধরে। রোমান সানা আগে থেকেই নিজের জাত চিনিয়েছেন বিশ্ব পরিমন্ডলে। আর এবার নতুন করে উঠে এলো দিয়া সিদ্দিকীর নাম। সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের লুজানে আর্চারি বিশ্বকাপ স্টেজ-টু এর ফাইনালে মিশ্র দ্বৈতে রুপা জিতেছেন রোমান সানাকে সঙ্গী করে। আর্চারির বিশ্বকাপ ফাইনালে স্বর্ণ পদক জেতা হয়নি তারপরেও ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে রোমান-দিয়া জুটি। লুসানে বিশ্বকাপ আর্চারির ফাইনালে রিকার্ভ মিশ্র ইভেন্টে নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে রৌপ্য জেতে বাংলাদেশ। এই পদক দেশের ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে এখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ অর্জন। রোমার সানার মতো আর্চারির হাত ধরেই এবার টোকিও অলিম্পিকে খেলার যোগ্যতাও অর্জন করেছেন তীরন্দাজ দিয়া সিদ্দিকী। ফ্রান্সের প্যারিসে আর্চারির ফাইনাল কোয়ালিফিকেশন টুর্নামেন্টে রিকার্ভ ব্যক্তিগত নারী এককের খেলায় দিয়া সিদ্দিকী ৬-০ সেটে আর্জেন্টাইন আর্চারকে হারায়। পরে স্লোভাকিয়ার আনা উমেরের কাছে হেরে যান এই দেশ সেরা তীরন্দাজ। এখন লক্ষ্য অলিম্পিক। নীলফামারী জেলার পাইকপাড়ার প্রত্যন্ত মধ্যহারওয়া গ্রামের মেয়ে দিয়া সিদ্দিকী। বাবা চাইতেন মেয়ে হবে ডাক্তার। মায়ের ইচ্ছা ছিল গ্রামের আটপৌরে জীবনেই মানিয়ে নেবে সে। বিয়ে করে হবে সংসারী। দিয়া সিদ্দিকী হননি কোনোটাই। এখন আর্চারিতে আলো ছড়াচ্ছেন বিশ্বমঞ্চে। দিয়া সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘আমি গ্রাম থেকে উঠে এসেছি। একটা সময় ভাবতাম, আমাকে দিয়ে কিছু হবে না। বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলব, স্বপ্নেও ভাবিনি। সোনা জিততে পারলে খুব ভালো লাগত।’ ছোটবেলা থেকেই দিয়ার মন পড়ে থাকত খেলার মাঠে। কিন্তু প্রত্যন্ত মধ্যহারওয়া গ্রামের কিশোরীর জন্য খেলাধুলা সহজ ছিল না। তবে প্রতিবেশী আর আত্মীয়দের বাঁকা কথায় দমে থাকার মেয়ে নন তিনি। একটা সময় নীলফামারী গভ. গার্লস স্কুলে দৌড়ে সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল দিয়ার। কিন্তু লম্বা হওয়ায় শরীরচর্চা শিক্ষক খাইরুল ইসলাম মনোযোগী হতে বলেন আর্চারিতে। এতে আসল একের পর এক সাফল্য। ২০১৮ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে কম্পাউন্ডে অংশ নিয়ে বিকেএসপির হয়ে দিয়া জেতেন ব্রোঞ্জ। ২০১৯ সালে আইএসএসএফ আন্তর্জাতিক সলিডারিটি আর্চারিতে দেশের হয়ে জেতেন প্রথম সোনা। সেই আসরের মিশ্র ইভেন্টে রোমান সানার সঙ্গে জেতেন ব্রোঞ্জ। এবার তো রাঙালেন বিশ্বকাপটাই। দিয়ার বাবা নূরে আলম সিদ্দিকী অবশ্য স্বপ্ন দেখেন মেয়েকে ডাক্তার বানাবেন। তিনি বলেন, ‘দিয়ার সাফল্যে আমরা গর্বিত। মেয়েটা দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। খেলাধুলার ব্যস্ততার মাঝেও মাধ্যমিকে দিয়া পেয়েছে জিপিএ ৪.৮৯। বিকেএসপিএতে এখন প্রথম বর্ষে পড়ছে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে। ওর এখনো সুযোগ আছে ডাক্তার হওয়ার।’

সর্বশেষ খবর