শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
অনুপ্রেরণীয়

স্নাতকোত্তর রাখালের গল্প

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

স্নাতকোত্তর রাখালের গল্প

মো. খায়রুল বাশার। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়া ছিলেন দীর্ঘদিন। বিদেশে জমানো অর্থে দেশে এসে কিছু করতে চেয়েছেন। শেয়ারবাজার, মাল্টিপারপাসে টাকা খাটালেন। টাকা লাগালেন আরও কিছু ব্যবসায়। সব মুখ থুবড়ে পড়ে। বাবাকে বললেন, নিজেদের জমিতে গরুর খামার করবেন। তিনি এক কথায় ‘না’ বলে দিলেন। ছেলে লেখাপড়া করে বিদেশ ঘুরে এসে গরুর খামার  দেবে এটা তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। দক্ষিণ কোরিয়ায় কিছু সফল খামারিকে দেখে এসেছেন খায়রুল বাশার। আর তাই তাঁর মনে বিশ্বাস জন্মে- তিনি পারবেন। তিনি কেতাদুরস্ত পোশাক রেখে নেমে পড়লেন কাজে। ২০১০ সালে তিনি গরুর খামার শুরু করলেন। পাড়া- প্রতিবেশী বলতেন লেখাপড়া করে রাখাল হয়েছে। ২০১৩ সালে তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে। তিনি আট থেকে ১০ লাখ টাকার পুঁজি নিয়ে শুরু করলেন। এখন তাঁর পুঁজি প্রায় ৪ কোটি টাকার মতো। কর্মচারী আছে ১৫ জন। তাঁর দেখাদেখি আরও খামার গড়ে উঠেছে। যারা টিপ্পনী কেটেছে তারা এখন সফলতার রহস্য জানতে খামারে আসে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভবেরমুড়া গ্রাম। এখানে খায়রুল বাশারের আইয়ান মিহান ডেইরি ফার্ম। খামারজুড়ে কর্মব্যস্ততা। কেউ গরুর ঘাসের  জোগান দিচ্ছেন। কেউ মেশিন দিয়ে দুধ সংগ্রহ করছেন। উদ্যোক্তা খায়রুল বাশার নিজে দুধ প্যাকেটজাত করছেন। এখানে দিনে দুবারে ৪০০ লিটার দুধ সংগ্রহ করে তা প্যাকেটজাত করে পৌঁছে দেওয়া হয় কুমিল্লা নগরীর গ্রাহকদের কাছে। প্রতি বৃহস্পতিবার গরু জবাই করে অর্ডার করা গ্রাহকের কাছে মাংস পৌঁছে দেওয়া হয়। মো. খায়রুল বাশার বলেন, তিনি কান কথা শোনেননি। শোনলে এগোতে পারতেন না। মূলত এখানে গা লাগিয়ে কাজ করতে হয়।  নাক সিটকে কর্মচারীনির্ভর হলে সফলতা আসবে না।

সর্বশেষ খবর