শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
গ্রামীণ জনপদে জ্ঞানের আলো

আলোকিত সমাজ নির্মাণে ‘পাকেরহাট গণগ্রন্থাগার’

তরুণ-তরুণীসহ অনেক মানুষই জ্ঞান অন্বেষণ করতে আসেন এখানে

রিয়াজুল ইসলাম

আলোকিত সমাজ নির্মাণে ‘পাকেরহাট গণগ্রন্থাগার’

প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদে জ্বল জ্বল করে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে পাকেরহাট গণগ্রন্থাগার। ধর্মের চর্চার জন্য চাই মসজিদ-মন্দির, বিজ্ঞান চর্চার জন্য ল্যাবরেটরি, তেমনি জ্ঞান চর্চায় কিংবা জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হতে যেতে হবে গণগ্রন্থাগারে। অন্ধকার সমাজে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে আলোকিত সমাজ তৈরির সফল প্রতিষ্ঠান এই পাকেরহাট গণগ্রন্থাগার।

তৎকালীন সময়ের যুব সমাজের হাত ধরে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার এ পাকেরহাট গ্রন্থাগার; যা পরবর্তীতে হয়ে ওঠে জ্ঞানের বাতিঘর এবং ভালো কাজের উদ্ভাবক। কিন্তু সেই সময়ে যুব সমাজের প্রতিনিধিরা নিজ অবস্থানের পেশাগত চাপের কারণে গণগ্রন্থাগারকে টিকিয়ে রাখতে পারেননি। ফলে প্রায় ১১ বছর বন্ধ থাকে জ্ঞানের বাতিঘরখ্যাত পাকেরহাট গণগ্রন্থাগার। এতে অনেক পুরাতন স্থাপনা ও বই হারিয়ে যায়।

কিন্তু উপজেলার পাকেরহাট এলাকার ছাত্র ও যুবসমাজের হাত ধরেই আবার নতুন উদ্যমে ২০১৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আংগারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ভবনের টিনশেডের একটি কক্ষে যাত্রা শুরু করে সেই পাকেরহাট গণগ্রন্থাগার। একটি সুদক্ষ ও কর্মঠ পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে পাকেরহাট গণগ্রন্থাগার তাই আজ হয়ে উঠেছে ইতিবাচক পরিবর্তনের সহায়ক।

সরেজমিন দেখা যায়, এখানে জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, শিশু-কিশোরদের বই থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, বিনোদন, ধর্মীয়, রাজনীতি, অর্থনীতি, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রচনা সমগ্র, জীবনীগ্রন্থ, ছোটগল্প, কবিতাসহ বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে। পছন্দের বই খুঁজে পেতে ক্যাটাগরি অনুযায়ী আলাদা আলাদা বুক শেলফে সাজানো হয়েছে এসব বই। এসব গ্রন্থ উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পেয়েছে গণগ্রন্থাগার। প্রতিদিন স্থানীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, চাকরি প্রত্যাশী তরুণ-তরুণীসহ অনেক মানুষই জ্ঞান অন্বেষণ করতে আসেন এখানে। এই গণগ্রন্থাগারে বই পড়েই অনেকে যেমন জ্ঞানের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন, তেমনি অনেকেই এখন সরকারি-বেসরকারি চাকরি করছেন। এখানে সদস্য হওয়ার সুযোগ রয়েছে। নাম নিবন্ধন করে বাড়িতে নিয়েও বই পড়ার সুযোগ পাবেন যে কেউ। আর রেজিস্ট্রেশন খাতায় দৈনিক পাঠক হাজিরা করা হয়। বইপ্রেমীদের বইয়ের তৃপ্তি মেটাতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আলোকিত করতে এই গণগ্রন্থাগার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের। পাকেরহাট গণগ্রন্থাগার বই পড়ার পাশাপাশি নানা ধরনের জ্ঞানঅন্বেষী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

হাবিপ্রবি শিক্ষার্থী হিমাংশু রায় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ, তাই নিয়মিত এখানে আসি। বিভিন্ন বই পড়ার পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার জন্য তৈরি এই গ্রন্থাগার মহৎ এবং প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

সর্বশেষ খবর