প্রাচীন ও ক্ষুদ্রতম একটি মসজিদের সন্ধান মিলেছে কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ এলাকায়। উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা এলাকায় অবস্থান এই মসজিদের। গত ১৮ জানুয়ারি দুপুরে কয়েকজন যুবক জঙ্গল পরিষ্কার করে মসজিদটির পুরো চিত্র বের করে আনার চেষ্টা করেন।
মসজিদটি এক গম্বুজবিশিষ্ট। মসজিদটির দেয়াল ঘেঁষে একটি বড় মিম্বর রয়েছে। বাইরের দৈর্ঘ্য (উত্তর-দক্ষিণ) মিম্বরসহ ১৬ ফুট এবং বাইরের প্রস্থ (পূর্ব-পশ্চিম) ১২ ফুট। মসজিদটির ভিতরের দৈর্ঘ্য ৭ ফুট এবং প্রস্থ ৬ ফুট। মসজিদটির একটি মেহরাব রয়েছে এবং দেয়ালে ছোট ছোট কয়েকটি খোপ রয়েছে। মসজিদটি সমুদ্রের পাথর, বালু, চুন এবং সুরকি দিয়ে নির্মিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, প্রাচীন এই মসজিদ সম্পর্কে তারা পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম শুনে আসছেন। এমনকি এটি কয়েক শ বছরের পুরনো মসজিদ, বলছিলেন তারা। মূলত মসজিদটি জঙ্গলে ঢাকা ছিল বলে কেউ সেখানে যেতেন না, অনেকের নজরেই পড়েনি। মসজিদটির আশপাশে গাছ ও তার শেকড় ভবনটির বাইরের অংশকে ঢেকে রেখেছিল।স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান আলী বলেন, ‘মসজিদটি কয়েক শ বছর আগের হলেও আমার বাপ-দাদারা জানতেন ওখানে একটি মসজিদ আছে। ২৫ বছর আগেও এখানে লোকজন নামাজ আদায় করেছিলেন। এ প্রাচীন মসজিদটির পুরাকীর্তি অক্ষুণœ রেখে নতুন রূপে সংস্কার করলে সেটি ঐতিহ্য হয়ে থাকবে।
এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি আজিম উল্লাহ বলেন, ‘মসজিদটি অনেক বছরের পুরনো। আমরা ছোট থেকেই শুনে আসছি এখানে একটি মসজিদ আছে। পূর্বপুরুষরা বলেছেন, বহু বছর আগে বিদেশ থেকে কয়েকজন পীর সাহেব এ দেশে এসে ইসলাম প্রচার করতেন। রাতে সেখানে তারা আত্মগোপন করতেন। তারাই সম্ভবত এই মসজিদটি তৈরি করেছিলেন নামাজ আদায়ের জন্য। সংস্কারের পর মসজিদের ভিতরে প্রাচীন ক্ষুদ্র পুরাকীর্তি দৃশ্যমান হলে অনেক দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীরাও আসবে।’ বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজ উদ্দিন জানান, মেরিন ড্রাইভের পশ্চিমে বনলতার আড়ালে একটি মসজিদের সন্ধান মিলেছে। এটি যে ক্ষুদ্রতম প্রাচীন মসজিদ তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে চারপাশের জঙ্গল ও ঝোপঝাড় কেটে ফেলা হয়েছে। মেরিন ড্রাইভের পশ্চিমে কোনো ধরনের ভবন নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় মসজিদটির সংস্কার করা যাচ্ছে না। অনুমতি পেলে এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
