শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
কানাডার সাধারণ নির্বাচন

দুই নারীসহ লড়ছেন ছয় বাংলাদেশি

কানাডা প্রতিনিধি

দুই নারীসহ লড়ছেন ছয় বাংলাদেশি

২০ সেপ্টেম্বর কানাডার ৪৪তম ফেডারেল নির্বাচন। কানাডা পার্লামেন্টে হাউস অব কমন্সের ৩৩৮ আসনে অনুষ্ঠিত হবে এ নির্বাচন। এতে প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন দুই নারীসহ ছয় বাংলাদেশি কানাডিয়ান। কানাডার প্রধান তিন রাজনৈতিক দল থেকে তারা মনোনয়ন পেয়েছেন। লিবারেল থেকে একজন, কনজারভেটিভ পার্টির দুজন এবং এনডিপির তিনজন। তারা হলেন অন্টারিও প্রদেশের ওশোয়া আসনে সরকারি দল লিবারেল থেকে আফরোজা হোসেন, টরেন্টোর স্কারবোরো সাউথ-ওয়েস্ট আসনে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে মহসিন ভূইয়া এবং মেট্রো ভ্যাঙ্কুভারের সোরি-নিউটন আসন থেকে সৈয়দ মহসিন, এনডিপি থেকে স্কারবোরো সেন্টার আসনে ফাইজ কামাল, আলবাট্রার এনডিপি থেকে খালিস আহমেদ তমাল এবং ক্যালগরি থেকে এনডিপির গুলশান আক্তার। এর মধ্যে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর নির্বাচনেও প্রতিদ্ধন্ধিতা করছিলেন খালিস, আফরোজা এবং ফাইজ। এবার তাদের সঙ্গে যুক্ত হলেন মহসিন ও গুলশান। গত নির্বাচনে আফরোজা ২৫.৪ ভাগ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিলেন। ওই আসনে কনজারভেটিভ পার্টির ক্লিন কেরি ৩৮.৯ ভাগ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। ক্যালগেরির সিগন্যাল হিল আসন থেকে খালিস কনজারভেটিভ পার্টির রন লাইপার্টের সঙ্গে প্রতিদ্ধন্ধিতা করে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।

এদিকে গুলশান আক্তার ২০১৯-এর স্থানীয় প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। ইতিপূর্বে টরেন্টো সিটি কাউন্সিলের কমিশনার পদে লড়াই করে মহসিন ভূইয়া তৃতীয় হন।

খালিস আহমেদ : মাগুরার সন্তান ভূতত্ত্ববিদ খালিস আহমেদ। ক্যালগেরি সিগন্যাল হিল থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপারের আসনে উপনির্বাচনে তিনি ২০১৫ সালে প্রথম অংশ নেন। তাতে তিনি মূলধারার রাজনীতিতে অভিষিক্ত হয়ে সবার দৃষ্টি কাড়েন। পরে ২০১৯ সালে সিগন্যাল হিল আসনে এবং এবার নোসহিল আসনে লড়ছেন। বারবার আসন পরিবর্তন সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা দলের সিদ্ধান্ত।

গুলশান আক্তার : দিনাজপুরের মেয়ে ডাক্তার গুলশান আক্তার। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আমার মনোনয়ন পেতে ১৩ মাস সময় লেগেছে। অথচ আমি আগেও প্রভেন্সিয়াল এমপি পদে ইলেকশন করেছি। এবার এনডিপি খুব যাচাই-বাছাই করে মনোনয়ন দিচ্ছে। আমার আসন ক্যালগরি কনফেডারেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কনজারভেটিভের ঘাঁটি। আমি সেই ঘাঁটি ভেঙে বিজয়ের আশা করি।

আফরোজা হোসেন : বিক্রমপুরের মেয়ে আফরোজা এপিলেপ্সি টরেন্টোর ম্যানেজার। তিনি তার নির্বাচনী এলাকা থেকে জানান, আমি এবারও লিবারেল থেকে মনোনয়ন পেয়েছি। আমিই একমাত্র এবং প্রথম বাংলাদেশি, যিনি ২০১৯ সালের ফেডারেল নির্বাচনে সরকারি দল লিবারেল পার্টির নমিনেশন পেয়েছিলাম। গত দুই বছরে আমি অনেক বেশি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছি। এলাকার জনগণের সঙ্গে কভিডসহ সামাজিক কাজে নানাভাবে এখনো জড়িত।

মহসিন ভূইয়া : ঢাকার নবাবগঞ্জের সন্তান মহসিন ভূইয়া একজন ব্যবসায়ী। তার প্রধান প্রতিপক্ষ সাবেক পুলিশপ্রধান এবং সরকারি দলের আইনশৃঙ্খলা, নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী বিল ব্লেয়ার। মহসিন তার নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, দলমত নির্বিশেষে আমি আমার আসনের সাত-আট হাজার বাংলাদেশির ভোট আশা করি। আমি মনে করি এটা আমার ভোটব্যাংক!

ফাইজ কামাল : স্কারবোরো সেন্টার আসনে ফাইজ কামালের নির্বাচনী ওয়েবসাইটে জানা যায়, তিনি ঘোষণা দিয়েছেন- নতুন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে আমি গর্বিত। কানাডিয়ান মূল্যবোধের পক্ষে। আমরা অন্যায়, অসমতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চাই এবং প্রগতিশীল পদক্ষেপগুলো দেখতে চাই এবং পুনর্মিলন ঘটাতে চাই। আমরা কানাডিয়ান হিসেবে গর্ববোধ করতে চাই।

সৈয়দ মহসিন : ঢাকার মিরপুরের সাবেক এমপি এবং ঢাকা সিটির ডেপুটি মেয়র এস এ খালেকের পুত্র সৈয়দ মহসিন ১৯৯৩ সালে উপনির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রয়াত হারুন মোল্লার শূন্য আসনের উপ-নির্বাচনে তিনি কামাল মজুমদারকে হারিয়ে বিজয় অর্জন করেন। তিনি বলেন, কানাডায় প্রথম নির্বাচন করলেও আমার রক্তে মিশে আছে রাজনীতি। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করেছি, উচ্চতর পড়াশোনা করেছি আমেরিকায়। এসব অভিজ্ঞতা এবার কাজে লাগাব। আমার এলাকা সোরি-নিউটনের বর্তমান এমপি লিবারেল পার্টি একজন শিখ। তিনি চারবার নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনী আসনটি শিখ অধ্যুষিত। কিন্তু নানা কারণে বর্তমানে তিনি বিতর্কিত। ফলে শিখ সম্প্রদায়ের ভোটাররা আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, অন্টারিও প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচনে রাজধানী অটোয়ার পার্শ্ববর্তী নেপান আসনে লিবারেল পার্টি থেকে শাহ বাহাউদ্দিন মনোনয়ন পেয়েও এক সপ্তাহ পর তা প্রত্যাহার করে নেন। বর্তমানে ডলি বেগম অন্টারিও পার্লামেন্টে একমাত্র বাংলাদেশি বংশো™‚¢ত এনডিপির এমপি। ডলির এ বিজয়-অর্জন ছিল কানাডায় বাংলাদেশি হিসেবে ইতিহাস গড়ার বিজয়!

সর্বশেষ খবর