শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
মানবিক উদ্যোগ

সেবার দ্যুতি ছড়াচ্ছে ‘একেএমবি’

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

সেবার দ্যুতি ছড়াচ্ছে ‘একেএমবি’

চট্টগ্রাম নগরের মোহরা এলাকার তারেক খান চৌধুরী। গত ৫ আগস্ট দুপুরে একেএমবির সেবা কেন্দ্রে ফোন করে রুদ্ধশ্বাস কণ্ঠে বললেন, ‘ভাই আমার শ্বাসকষ্ট। একটু কি অক্সিজেন সেবা পাব’। তাৎক্ষণিক একেএমবি পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা নিয়ে দ্রুত পাঠিয়ে দেয় স্বেচ্ছাসেবক টিম। অক্সিজেনের সিলিন্ডার কাঁধে নিয়ে ওঠেন পাঁচতলায়। তখন রোগী অস্থির। অক্সিজেন স্যাচুয়েশন ৮৮। দ্রুত দেওয়া হয় অক্সিজেন সেবা। কিছুটা সুস্থতাবোধও করেন। তবে ৮ আগস্ট আবারও তাঁর স্ত্রীর ফোন। এবার অবস্থা জটিল। ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সেখানেই তিনি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন।   

এভাবে কঠিন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে  স্বেচ্ছাসেবামূলক সংস্থা আঞ্জুমানে খুদ্দামুল মুসলেমিন বাংলাদেশ (একেএমবি)। গত দেড় বছর ধরে সংস্থাটি দেশের বিভিন্ন জেলায় অসহায়, গরিব, অসচ্ছল, খেটে খাওয়া ও অজ্ঞাত মানুষের সেবা করে যাচ্ছে। করোনাকালে একেএমবি মানবিক সেবার দ্যুতি ছড়াচ্ছে। এরই মধ্যে বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়েছে ৫৬৫ রোগীকে, অক্সিজেন সেবা দেওয়া হয় ২ হাজার ৩২৫ জনকে, করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ১৩৭ জনের মরদেহের গোসল, ১৪৯ জনের কাফনের ব্যবস্থা, ১৬৭টি জানাজার ব্যবস্থা ও ২৫৫ জনের দাফন করা হয়। ১৯৮৭ সালে মানবিক সেবার ব্রত নিয়ে প্রতিষ্ঠা হয় সংগঠনটি।

আঞ্জুমানে খুদ্দামুল মুসলেমিন বাংলাদেশের সচিব স ম হামেদ হোসাইন বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অবহেলিত মানুষের পাশে থেকে মানবিক সেবা করে আসছে। তবে গত বছরের মার্চে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দাফন-কাফন, অ্যাম্বুলেন্স ও অক্সিজেন সেবাসহ নানাভাবে অনেক অসহায়-অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর সুযোগ হয়েছে। সবার আন্তরিকতা নিয়ে বৃহত্তম পরিসরে সেবার কাজ শুরু করা হয়। প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে শুরু হলেও পরে পর্যায়ক্রমে এ কার্যক্রম ঢাকা, চাঁদপুর, লক্ষীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, সিলেট ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় চলছে।’

সংগঠনের করোনা কর্মসূচির সমন্বয়ক এ এম মঈনুদ্দিন চৌধুরী হালিম বলেন, ‘গত প্রায় ৩৫ বছর ধরে মানবিক কাজ করে আসছে সংগঠনটি। ক্রমে সংগঠনের সেবার পরিধি বাড়ছে।

বর্তমানে অ্যাম্বুলেন্স, অক্সিজেন সিলিন্ডার, মরদেহ গোসল-কাফন-জানাজা-দাফন ও সৎকার সেবা, গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ, বিপর্যস্ত প্রবাসী পরিবারে আপৎকালীন সেবা, দারিদ্র্য বিমোচনে ভ্যানগাড়ি-গরু-ছাগল-সেলাই মেশিন ও নগদ অর্থ প্রদান, শিক্ষা সহায়তায় ভর্তি ও শিক্ষাসামগ্রী প্রদান, দুস্থ, শরণার্থী, বন্যা দুর্গত, নও-মুসলিম, অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা, উপকূলীয় ও দুর্গম এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন, কোরবানি সেবা প্রকল্প চলমান আছে।’

সর্বশেষ খবর