শনিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
নোবেল খ্যাত ইরানের মুস্তফা (সা.) পুরস্কার

শ্রেষ্ঠ প্রবাসী মুসলিম বিজ্ঞানী জাহিদ হাসান

জামশেদ আলম রনি

শ্রেষ্ঠ প্রবাসী মুসলিম বিজ্ঞানী জাহিদ হাসান

বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. এম জাহিদ হাসান। ভরহীন কণা ভাইল-ফার্মিয়ন আবিষ্কার করে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেন তিনি। এ ছাড়াও চলতি বছরের শুরুতে জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক দ্য আর্নেস্ট অরল্যান্ডো লরেন্স অ্যাওয়ার্ড। এবার তিনি ইরানের মুস্তফা (সা.) পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলেন। ১২ অক্টোবর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক ইরানের বিখ্যাত মুস্তফা (সা.) পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষিত হয়। এ বছর পাঁচ মুসলিম বিজ্ঞানী এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। এটি চতুর্থ মুস্তফা (সা.) পুরস্কার। দুই বছর পরপর বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মুসলিম বিজ্ঞানী ও গবেষকদের পুরস্কৃত করে থাকে ইরানের মুস্তফা (সা.) ফাউন্ডেশন। তেহরান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।

জানা যায়, অমুসলিম দেশে বসবাসকারী মুসলিম বিশ্বের দুই বিজ্ঞানীকে একটি যৌথ পুরস্কার দেওয়া হবে। আর মুসলিম দেশে বসবাসকারী তিন বিজ্ঞানীকে আরেকটি যৌথ পুরস্কার প্রদান করা হবে। ২১ অক্টোবর তাদের নগদ ১০ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কার হিসেবে দেওয়ার কথা রয়েছে। চার ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয় মুস্তফা (সা.) পুরস্কার। এগুলো হলো- তথ্য এবং যোগাযোগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি; জীবন এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি; ন্যানোসায়েন্স ও ন্যানো টেকনোলজি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সব ক্ষেত্র।

শ্রেষ্ঠ প্রবাসী মুসলিম বিজ্ঞানী হিসেবে এবার যৌথভাবে বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশের পদার্থবিজ্ঞানী ড. এম জাহিদ হাসান ও ইরানের বিজ্ঞানী কামরান ওয়াফা। বাংলাদেশের জাহিদ হাসান যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। ইরানের কামরান ওয়াফা অধ্যাপনা করছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ ছাড়া এবার স্বদেশে বসবাসকারী শ্রেষ্ঠ মুসলিম বিজ্ঞানী হিসেবে যৌথভাবে বিজয়ী হয়েছেন মরক্কোর ইয়াহিয়া তিয়ালাতি, লেবাননের মুহাম্মদ সানেগ ও পাকিস্তানের মুহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী। এর আগে আরও তিন দফায় নয়জন শ্রেষ্ঠ মুসলিম বিজ্ঞানীকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তারা ছিলেন ইরান, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক ও জর্ডানের। প্রত্যেক বিজয়ীকে মুস্তফা (সা.)-এর পুরস্কারের ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞানী জাহিদ হাসান তাপসের বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুরে। তার বাবা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত অ্যাডভোকেট রহমত আলী। তার মায়ের নাম নাদিরা রহমত আলী। জাহিদ হাসান ১৯৮৮ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এরপর গণিতে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিছুদিন পরই তিনি বৃত্তি নিয়ে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। অস্টিনের টেক্সাস ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন পদার্থবিজ্ঞানে। সুযোগ হয় নোবেল বিজয়ী তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন ভাইনভার্গের কাছে শিক্ষা গ্রহণের। এরপর মাস্টার্স ও পিএইচডি করতে চলে যান স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০২ সালে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট করেন। আমেরিকান একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের নির্বাচিত ফেলো হাসান ২০১৪ সাল থেকেই ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘অ্যাসপেন ইনস্টিটিউট’-এরও ফেলো। বিজ্ঞানী হাসানের গবেষণা এবং উদ্ভাবন সম্পর্কিত অনেক লেখা বিশ্বখ্যাত জার্নালে প্রকাশ হয়েছে।

২০১৩ সালে মুস্তফা (সা.) পুরস্কারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ২০১৫ সালে তেহরানে সর্বপ্রথম এ পুরস্কারের অনুষ্ঠান হয়। শিক্ষা ও গবেষণাকে উৎসাহিত করতে এবং ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য দেশগুলোতে কর্মরত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আঞ্চলিক সম্পর্ক গড়ে তোলাই এর প্রধান লক্ষ্য।  এ পুরস্কারটি মুসলিম বিশ্বের নোবেল হিসেবে খ্যাত।

সর্বশেষ খবর