শনিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

ইতিহাসের সাক্ষী জিনজিরা প্রাসাদ

মো. শাহিন, কেরানীগঞ্জ

ইতিহাসের সাক্ষী জিনজিরা প্রাসাদ

দুঃখ-বেদনার স্মৃতি আঁকড়ে রহস্যঘেরা ইতিহাসের সাক্ষী মুঘল আমলের জিনজিরা প্রাসাদ। ঢাকার কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ইতিহাসের বেদনাবিধুর ঘটনার নীরব সাক্ষী ৪০০ বছরের পুরনো এ প্রাসাদ। এ প্রাসাদ ভবনের প্রতিটি ইটের গায়ে লেখা রয়েছে টুকরো টুকরো ইতিহাস। বাংলার মুঘল সুবাদার দ্বিতীয় ইব্রাহিম (১৬৮৯-১৬৯৭) প্রাসাদটি বানিয়েছিলেন তার প্রমোদ কেন্দ্র হিসেবে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, নবাব সরফরাজ খানের (১৭৩৯-১৭৪০) পতনের পর তার মা, স্ত্রী, বোন, পুত্রকন্যাকে এ প্রাসাদের অভ্যন্তরীণ কক্ষে রাখা হয়েছিল। ১৭৫৪ সালে হোসেন কুলি খানের হত্যাকান্ডের পর এ প্রাসাদে বসবাসরত তার পরিবারের সদস্যদের বন্দী জীবনযাপন করতে হয়। পলাশীর যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর আলীবর্দী খানের স্ত্রী শরীফুন্নেসা, সিরাজের মা আমেনা বেগম, সিরাজউদ্দৌলার স্ত্রী লুৎফুন্নেসা বেগম, তার মেয়ে কুদসিয়া বেগম জোহরাকে আট বছর বন্দী করে রাখা হয়েছিল এ প্রাসাদে। সেই সঙ্গে বন্দী করে রাখা হয়েছিল পলাশীর যুদ্ধের অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী ঘসেটি বেগমকে। এ প্রাসাদ থেকে নিয়ে আমেনা বেগম ও ঘসেটি বেগমকে বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌকা ডুবিয়ে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে লর্ড ক্লাইভের হস্তক্ষেপে শরীফুন্নেসা, লুৎফুন্নেসা বেগম ও জোহরাকে মুর্শিদাবাদে পাঠানো হয়। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ইতিহাসের বহু ঘটনার সাক্ষী জিনজিরা প্রাসাদ বর্তমানে কয়েকটি অংশ এখনো কালের সাক্ষী হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো। দীর্ঘদিন অযত্ন-অবহেলার ফলে গাছের শিকড়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলেছে ভঙ্গুর দেয়ালগুলো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, কেরানীগঞ্জের ঐতিহ্য জিঞ্জিরা প্রাসাদের শেষ স্মৃতিচিহ্ন যা আছে সেটুকুই টিকিয়ে রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।  এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, এ ঐতিহ্যবাহী স্থান রক্ষার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা চালানো  হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর