শনিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

প্রযুক্তির ছোঁয়ায় মৃৎশিল্পের ঐতিহ্যে আধুনিকতা

বৈদ্যুতিক চাক মেশিনে বেড়েছে উৎপাদন হার, কমেছে খরচ

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

প্রযুক্তির ছোঁয়ায় মৃৎশিল্পের ঐতিহ্যে আধুনিকতা

আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে মৃৎশিল্পে। এতে স্বল্প সময়ে এবং অল্প খরচে অধিক পরিমাণে মাটির জিনিসপত্র তৈরি করতে পারছেন মৃৎশিল্পীরা। আর নিজেদের টিকিয়ে রাখতে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে গেছে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের নশরতপুর গ্রামের পালপাড়ার কুমারদের জীবন-জীবিকা। ফলে বদলে যাচ্ছে মৃৎশিল্পীদের অর্থনৈতিক অবস্থাও।

মৃৎশিল্পীদের আর প্রচলিত পদ্ধতিতে চাক ঘোরাতে হয় না। এখন আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করছেন মৃৎশিল্পের বিভিন্ন উপকরণ। ইলেকট্রিক  মোটরের সাহায্যেই ঘুরছে পাল সম্প্রদায়ের মাটির জিনিসপত্র তৈরির চাক। এ বৈদ্যুতিক চাক মেশিন ব্যবহার করে মৃৎশিল্পের কারিগরদের শারীরিক শ্রম সাশ্রয় হচ্ছে।

চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর গ্রামের দিঘলনালী পাড়ার মৃত নছির উদ্দিন শাহ্র ছেলে এস এম মজিবর রহমান। পেশায় তিনি একজন ইলেকট্রিশিয়ান। তাঁর চিরিরবন্দরের রানীরবন্দরে খানসামা সড়কের দরগাহপাড়ে মেসার্স রাজা ইলেকট্রিক অ্যান্ড ওয়ার্কশপ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। তিনি ভাবতে ও স্বপ্ন দেখতে থাকেন কীভাবে পাল সম্প্রদায়ের মানুষের কষ্ট লাঘব করা যায়। এ স্বপ্ন ও ভাবনা থেকেই তিনি উদ্ভাবন করেন কুমারদের জন্য বৈদ্যুতিক চাক মেশিন। তার এ বৈদ্যুতিক চাক মেশিনটি এসি বৈদ্যুতিক মোটরের পরিবর্তে এসি থেকে ডিসিতে রূপান্তরিত হয়ে স্বল্প বিদ্যুৎ খরচে ডিসি মোটর ব্যবহার হচ্ছে এবং এ বৈদ্যুতিক চাক মেশিনটি ঘুরছে। এ বৈদ্যুতিক চাক মেশিন ২.৫ অশ্বশক্তিতে ১ হাজার ৪৭০ আরপিএম (গতি) রেগুলেটরের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে। এ বৈদ্যুতিক চাক মেশিন তৈরিতে খরচ পড়ছে মাত্র সাড়ে ৯ হাজার টাকা।

মৃৎশিল্পী নিরঞ্জন পাল, শ্যামল চন্দ্র পালসহ অনেকে জানান, আগে প্রচলিত পদ্ধতিতে মাটি দিয়ে সারা দিন মাত্র ১০০ থেকে ১৫০টি ফুলের টব বা হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করতে পারতাম। এখন এ বৈদ্যুতিক চাক মেশিন দিয়ে সারা দিন ৭০০ থেকে ১ হাজার মাটির ফুলের টব বা হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করতে পারছি। বিদ্যুৎ খরচও কম হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর