শনিবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
অর্জন

ডাক্তার রাসেলের বাংলা চ্যানেল জয়

বাংলা চ্যানেলের প্রস্তুতি হিসেবে আমি যমুনা, মেঘনা, তিস্তা নদীতে সাঁতার অনুশীলন করেছি। এতে বাংলা চ্যানেল জয়ে আমার মনোবল বেড়েছে...

জয়শ্রী ভাদুড়ী

ডাক্তার রাসেলের বাংলা চ্যানেল জয়

ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে সাঁতার শেখা। এরপর দীর্ঘ পথপরিক্রমায় সেই দামাল ছেলেই সাঁতরে পাড়ি দিয়েছে বাংলা চ্যানেল। চিকিৎসক হিসেবে রোগীর শুশ্রƒষা তার পেশা আর সাঁতার নেশা। বলছিলাম ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার সাকলায়েন রাসেলের কথা।

বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে এবার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেন ৭৯  জন সাঁতারু। তবে সাগর উত্তাল থাকায় ২৬ সাঁতারু মাঝপথে থাকা উদ্ধারকারী ট্রলারে উঠে যান। প্রথমবারের মতো দেশের দুই চিকিৎসক বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন। তাদের একজন ডা. সাকলায়েন রাসেল, আরেকজন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালের কার্ডিওভাসকুলার সার্জন ডা. জেনজিবুল তারেক।

বাংলা চ্যানেলের ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দূরত্ব ছয় ঘণ্টা ৪১ মিনিটে পাড়ি দেন ডা. রাসেল। দেশের সর্ব দক্ষিণ সীমান্ত টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্রসৈকত থেকে সাঁতার শুরু করেন তারা। তিনি বলেন, এবার সাগরে এত বড় ঢেউ ছিল যে, অনেক সাঁতারু অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মাঝপথে ট্রলারে উঠিয়ে নেওয়া হয়। চারদিক অন্ধকারও হয়ে গিয়েছিল। আমাকেও ট্রলারে উঠে পড়তে বলেছিলেন আয়োজকরা। কিন্তু আমি থেমে যাইনি। আমি যেহেতু চিকিৎসক, তাই সাঁতারের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে চেয়েছি। সাঁতারের প্রস্তুতি সম্পর্কে এই চিকিৎসক বলেন, আমি দৌড়াতে ভীষণ পছন্দ করি, ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করে থাকি। ছয় মাস আগে আমার চোখে একটা সমস্যার কারণে দুবার অপারেশন করতে হয়। এর ফলে আগামী ছয় মাস দৌড়ানো বন্ধ করতে বলেন চিকিৎসক। কিন্তু এভাবে চুপচাপ বসে থাকতে মন খুব খারাপ হতো। তখন আমার চিকিৎসক বললেন, চাইলে সাঁতার কাটতে পারব আমি। এ সময় আমার অনুজ ডা. জেনজিবুল তারেক বলেন, ‘আমরা যেখানে সাঁতারের প্রশিক্ষণ নিয়েছে আপনিও আসতে পারেন’। তখন আমি সাইফুল ইসলাম রাসেলের (যিনি এবারেও সাঁতারে অংশ নিয়ে সবচেয়ে কম সময়ে চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন) সঙ্গে যোগাযোগ করে সাঁতার প্রশিক্ষণে নামলাম। অনেক খুঁজতে খুঁজতে পুরান ঢাকার গোলতালাব পুকুরে সাঁতার প্রশিক্ষণ শুরু করলাম। দুই মাসের মাথায় গিয়ে গুলশান সুইমিং ক্লাবের মেম্বার হওয়ার সুযোগ পাই। সাগরে সাঁতার কাটার কৌশল আস্তে আস্তে শিখতে শুরু করলাম। ওখানে কিছু মানুষ পেলাম যারা বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়ে এসেছেন। তাদের অভিজ্ঞতা শুনলাম, শিখলাম। বাংলা চ্যানেলে সিলেকশন রাউন্ডে শর্ত ছিল কমপক্ষে টানা চার ঘণ্টা পুকুরে পা না ঠেকিয়ে সাঁতার কাটতে হবে। কিন্তু তখন পর্যন্ত আমি সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা টানা সাঁতার কাটতে পারি। বাংলা চ্যানেলের প্রস্তুতি হিসেবে আমি যমুনা, মেঘনা, তিস্তা নদীতে সাঁতার অনুশীলন করেছি। এতে বাংলা চ্যানেল জয়ে আমার মনোবল বেড়েছে।

সর্বশেষ খবর