শনিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

কুমিল্লায় মুঘল আমলের নান্দনিক মসজিদ

মসজিদের ভিতরের অংশে রয়েছে মুঘল আমলের দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ। ৩টি গম্বুজের ভিতর ও বাইরে শৈল্পিক নিদর্শন

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লায় মুঘল আমলের নান্দনিক মসজিদ

ওড্ডা। কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি গ্রাম। এই গ্রামে রয়েছে তিন শতাধিক বছরের প্রাচীন মসজিদ। নাম ফতেহ খাঁ মসজিদ। নানা কারুকাজে মোড়া তিনটি গম্বুজ নান্দনিক স্থাপনা। প্রত্নতত্ত্ববিদরা বলছেন, এটি মুঘল আমলের নিদর্শন। এটি দেখতে ও এখানে নামাজ পড়তে বিভিন্ন এলাকার মুসল্লিরা ভিড় করেন। মসজিদটি সংরক্ষণের দাবি স্থানীয়দের।

সরেজমিন দেখা যায়, বরুড়ার ঝলম থেকে পাশের চান্দিনা উপজেলার নবাবপুর সড়ক। সড়কের পাশে ওড্ডা ফতেহ খাঁ জামে মসজিদ। মূল মসজিদের দৈর্ঘ্য ৩৬ ফুট ও প্রস্থ ১৮ ফুট। চারদিকের প্রতিটি দেয়ালের ঘনত্ব তিন ফুট। প্রতিটি দেয়ালে রয়েছে বিশেষ আকৃতির খোপ। মসজিদের ভিতরের অংশে রয়েছে মুঘল আমলের দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ। ৩টি গম্বুজের ভিতর ও বাইরে শৈল্পিক নিদর্শন। ৩টি গম্বুজের চারপাশে রয়েছে ৬টি মিনার। মাঝের গম্বুজে রয়েছে চাঁদ-তারা। প্রতিটি দেয়ালে রয়েছে ফুল পাতার কারুকাজ।

স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা আবু তাহের মনে করেন, ফতেহ খাঁ নামের কোনো ব্যক্তির নামে এ মসজিদটি তৈরি হয়েছে। এটি বরুড়ার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী মসজিদ।  মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের তালিকাভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ মসজিদের উত্তর পাশে রয়েছে ৩টি শতবছরের পুরনো পাকা কবর। এ কবরগুলো কার তা জানা যায়নি। এ মসজিদের পশ্চিম অংশ দিয়ে বিশাল নদীপথ ছিল। যে নৌপথে বাণিজ্যিক নৌকা চলাচল করত। যা এখন বিলুপ্ত। ফতেহ খাঁ মসজিদ, কবরস্থান ও দিঘি নিয়ে লোকমুখে নানা কথা প্রচলিত রয়েছে। মসজিদের খতিব মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন আল-কাদরী বলেন, মসজিদের প্রাচীন অংশে ৫০ জনের মতো নামাজ পড়তে পারে। বর্ধিত করার পর সেখানে ৫ শতাধিক মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। মসজিদটির ভিতরের দেয়ালে কালো ফলকে আরবি ক্যালিওগ্রাফি রয়েছে। তার পুরো পাঠ উদ্ধার করা যায়নি। কমিটির সদস্যদের আন্তরিকতায় মূল কারুকাজ অবিকৃত রয়েছে। পরিচালনা কমিটির সভাপতি সামছুল হক মাস্টার বলেন, জনশ্রুতি রয়েছে এই মসজিদ জঙ্গলে ঢাকা ছিল। এখানে বাঘ ও বাঘের বাচ্চা আশ্রয় নিত। পরে সেটি স্থানীয়রা পরিচ্ছন্ন করেন।

সর্বশেষ খবর