শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
সাফল্য

অ্যামাজনে বাংলাদেশি সুকান্ত

অপটিক্যাল কম্পোনেন্ট ডিজাইন করছেন, পৌঁছাতে চান শীর্ষস্থানে

শনিবারের সকাল ডেস্ক

অ্যামাজনে বাংলাদেশি সুকান্ত

সুকান্ত চৌধুরীর বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলীতে। পড়ালেখা করেছেন স্থানীয় পিএইচ আমীন একাডেমিতে। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী মুখ হিসেবে পরিচিত তিনি। সেরাদের সেরা হতে না পারার আক্ষেপটা সবসময় দগ্ধ করেছে সুকান্তকে। এ আক্ষেপই তাকে পৌঁছে দেয় সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে। স্কুল-কলেজে প্রত্যাশিত ফলাফল না পেলেও বিভাগের সেরা ছাত্র হয়ে নিজের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছেন বিশ্ববিখ্যাত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনে।

চট্টগ্রাম কলেজে পড়ার প্রবল আগ্রহ ছিল সুকান্তের। কিন্তু মাধ্যমিকের ফল খারাপ হওয়ায় ফর্মই কিনতে পারেননি। এরপর হাজী মহসীন কলেজের ভর্তি পরীক্ষায়ও সুবিধা করতে না পেরে ভর্তি হন আলহাজ মোস্তফা হাকিম ডিগ্রি কলেজে। সে সময় এক ঘোর অন্ধকার নেমে আসে তার জীবনে। বাবার চাকরি চলে যাওয়ায় পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়ে তার কাঁধে। এতে হাল ছাড়েননি তিনি। টিউশন করিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারকেও সহযোগিতা করতে থাকেন।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনকে টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে মনে করেন তিনি। ২০০৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। প্রথম থেকে শেষ বর্ষ পর্যন্ত বিভাগে প্রথম হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন। এরপর স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে রেকর্ড নম্বর পান। একই সময়ে তাকে দিন-রাত টিউশনি করে নিজের ও পরিবারের খরচ বহন করতে হতো। বিভাগের সেরা ছাত্র হওয়ায় সেখানকার শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন। শূন্য পদ না থাকায় তার সে আশা পূরণ হয়নি। তখন ফলিত পদার্থবিজ্ঞানের এক শিক্ষকের পরামর্শে জিআরই, টোফেল-এর প্রস্তুতি নিতে থাকেন। অবশেষে ইউনিভার্সিটি অব লুইসভিলে যান পড়তে।

অ্যাপল, ফেসবুক ও অ্যামাজনে আবেদন করেন সুকান্ত। শেষ পর্যন্ত অ্যামাজনকেই বেছে নেন তিনি। পাঁচ সপ্তাহে পাঁচটি ধাপ অতিক্রম করে অ্যামাজনের একজন সদস্য হিসেবে বিবেচিত হন সুকান্ত। বর্তমানে অ্যামাজনের অপটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত সুকান্ত। এখানে তার মূল কাজ অপটিক্যাল কম্পোনেন্ট ডিজাইন করা। ভবিষ্যতে নিজেকে আরও ছাড়িয়ে যেতে চান, পৌঁছাতে চান শীর্ষস্থানে। লেগে থাকলে কিছু একটা তো হবেই- এমনটাই মনে করেন তিনি। নিজের সাফল্য সম্পর্কে সুকান্ত বলেন, ‘শেষ যেদিন ইন্টারভিউ দিলাম, সেদিনই জবের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম। সারা রাত ঘুমাতে পারিনি।’ এতদূর আসার পেছনে চাচা রনদীশ চৌধুরীর অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করলেন সুকান্ত। একই সঙ্গে পথপ্রদর্শক হিসেবে শিক্ষক আরিফ ইফতেখার মাহমুদের কথাও স্মরণ করেন।

সর্বশেষ খবর